বান্দরবান: প্রতি বছর ঈদের সময় বান্দরবানের মেঘলা, নীলাচল, নীলগিরিসহ বিভিন্ন পর্যটনগুলোতে পর্যটকের উপচে পড়া ভিড় থাকলেও এবারের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন।
এবারের ঈদে টানা ৫ দিনে ছুটিতেও বান্দরবানের পর্যটন স্পট ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে আশানুরূপ পর্যটক নেই।
গত কয়েকদিনের প্রচণ্ড তাপদাহ আর বিভিন্ন উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকায় এমনটি হয়েছে বলে ধারণা পর্যটন সংশ্লিষ্টদের।
তবে তাদের আশাবাদ, শিগগিরই জমজমাট হয়ে উঠবে বান্দরবানের পর্যটনখাত।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদ উপলক্ষে ২৪ ও ২৫ এপ্রিলের জন্য মাত্র ১০ শতাংশ হোটেলের কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়েছে। হাতেগোনা দু-চারটি কক্ষে পর্যটক রয়েছে বর্তমানে। জেলার তিন উপজেলায় (রুমা,রোয়াছড়ি,থানচি) পর্যটক ভ্রমণে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ থাকায় এবারের ঈদে আশানারূপ পর্যটক বান্দরবানে আসেনি। তবে দ্রুত এই অবস্থার উন্নতি হবে।
বান্দরবানের নীলাচল পর্যটনকেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী আদিব বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের দিন নীলাচলে মাত্র ৯০০ জন পর্যটক প্রবেশ করেছে। তবে অন্যান্য বছর এই সময়টায় কয়েক হাজার পর্যটক ভ্রমন করতে আসেন। এই পুরো বছরে বান্দরবানে পর্যটক কম ভ্রমণে এসেছেন।
মোটা দাগে ঈদের দিন থেকেই বান্দরবানে এবার পর্যটকের আগমন ঘটেছে তুলনামুলক কম।
এতে অনেকটা লাভবান হয়েছেন এ মুহূর্তে বান্দরবানে ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকরা। যেসব পর্যটকেরা এই সময়ে বান্দরবান বেড়াতে গেছেন, তারা নির্ঝঞ্ঝাট পাহাড়, নদী আর প্রকৃতির অপরূপ দৃশ্য দেখে বিমোহিত হচ্ছেন। পরিবার পরিজন নিয়ে মেঘলা,নীলাচল, শৈল প্রপাত, নীলগিরি, চিম্বুক ভ্রমণ করে ঈদের আনন্দ সবার সঙ্গে নিচ্ছেন ভাগ করে।
সে উচ্ছ্বাসই প্রকাশ করলেন রাজশাহী থেকে বান্দরবানের পর্যটনকেন্দ্র নীলাচলে বেড়াতে আসা শিক্ষার্থী মো.জামান। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এবারের ঈদে বান্দরবান বেড়াতে এসেছি। এর আগে কয়েকবার এসেছি বেড়াতে তবে এবার পর্যটকদের সংখ্যা খুবই কম। তাই ঘুরে অনেক মজা পাচ্ছি।
ঢাকা থেকে বান্দরবানে বেড়াতে আসা পর্যটক তমাল বাংলানিউজকে বলেন, ঈদুল ফিতরের বন্ধে এবার বান্দরবান আসলাম, খুব মজা হচ্ছে। পাহাড়, প্রকৃতি আর নদী দেখে পরিবারের সবাই খুশি।
পর্যটক তমাল বাংলানিউজকে আরও বলেন, বান্দরবানের সব উপজেলায় এবার ঘুরার ইচ্ছা রয়েছে। তবে কয়েকটি উপজেলা পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় আমরা সব উপজেলায় যেতে পারছি না না।
এদিকে বান্দরবানের আগত পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে কাজ করছে প্রশাসন। প্রতিটি স্পটে পর্যটকদের সহযোগিতায় নিয়োজিত রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে কাজ করছে আইনশৃংখলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য।
বান্দরবান জোনের ইনচার্জ (ট্যুরিস্ট পুলিশ) স্বপন কুমার আইচ বাংলানিউজকে বলেন, গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে বান্দরবানে জঙ্গি আর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চলমান থাকার কারণে পর্যটকদের ভ্রমণে কয়েক দফা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। সবশেষ ১৫ মার্চ পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলায় স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণে নিষিদ্ধ করে জেলা প্রশাসন। তবে এই তিন উপজেলা ছাড়া বাকি ৪ উপজেলায় পর্যটকরা অনায়াসেই ভ্রমণ করতে পারছেন।
তিনি আরও বলেন,বান্দরবানের প্রতিটি পর্যটনকেন্দ্রে পর্যাপ্ত ট্যুরিস্ট পুলিশ রয়েছে এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা দিনরাত পর্যটকদের সেবায় বদ্ধপরিকর।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৩
এসএএইচ