ঢাকা, শুক্রবার, ২ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৮ জুলাই ২০২৫, ২২ মহররম ১৪৪৭

পর্যটন

থাই ভিসা নিয়ে প্রতারণা-জালিয়াতির বিষয়ে সতর্ক করলো দূতাবাস

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:৩৯, জুলাই ১৭, ২০২৫
থাই ভিসা নিয়ে প্রতারণা-জালিয়াতির বিষয়ে সতর্ক করলো দূতাবাস জেমস বন্ড দ্বীপ

থাইল্যান্ডের ভিসা নিয়ে প্রতারক এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে ঢাকা দেশটির দূতাবাস।  

ভিসা প্রার্থীকে নিজেই আবেদনের পরামর্শও দিয়েছে দেশটি।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দূতাবাস থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই পরামর্শ দেওয়া হয়।

এতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের কিছু ট্রাভেল এজেন্সি কর্তৃক পরিচালিত সাম্প্রতিক সময়ে প্রতারণা এবং জালিয়াতিমূলক কার্যকলাপ সম্পর্কে এ দেশের জনসাধারণকে ঢাকাস্থ রয়েল থাই দূতাবাস একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা প্রদান করতে চায়। আমরা দেখতে পেয়েছি যে, কিছু ট্রাভেল এজেন্সি বাংলাদেশি আবেদনকারীদের থেকে থাই ভিসা আবেদনের জন্য উচ্চ সার্ভিস চার্জ নিচ্ছে। কিন্তু এজেন্সিগুলো থাই ই-ভিসা সিস্টেমের মাধ্যমে সঠিকভাবে আবেদন এবং পেমেন্ট সম্পন্ন না করে নিচের প্রতারণামূলক কাজগুলো করছে:

১. ভুয়া পেমেন্ট রসিদ প্রদান, যা দেখে মনে হয় ভিসার ফি প্রদান করা হয়েছে।

২. ভুয়া স্ট্যাটাস আপডেট, যা দেখায় যে ভিসা আবেদন দূতাবাস কর্তৃক বাতিল হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এই আবেদনগুলো আমাদের সিস্টেমে কখনই পৌঁছায়নি, কারণ ট্রাভেল এজেন্সিগুলো ভিসা ফি/পেমেন্ট কখনোই সম্পন্ন করেনি।

এই প্রতারণাগুলোর ফলে অনেক আবেদনকারী মানসিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং আবেদনকারীরা একই প্রতারক এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে পুনরায় আবেদন করে আবার প্রতারিত হচ্ছেন।

দূতাবাসের সুপারিশ: 

১. নিজেই আবেদন করুন: থাই দূতাবাস এজেন্সির পরিবর্তে সবাইকে নিজে আবেদন করার জন্য উৎসাহিত করছে।  সরাসরি আবেদনের জন্য অফিশিয়াল ওয়েবসাইট : www.thaievisa.go.th ভিজিট করুন।

নিজে আবেদন করলে আপনার আবেদন প্রক্রিয়ার সর্বশেষ অবস্থা নিজেই দেখতে পারবেন এবং অপ্রয়োজনীয় খরচ এবং প্রতারণার ঝুঁকি এড়াতে পারবেন।

২. যারা এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করেছেন: নিশ্চিত করুন যে, আপনি একটি বিশ্বস্ত এবং নির্ভরযোগ্য এজেন্সি ব্যবহার করছেন। এজেন্সি আপনার আবেদন জমা দেওয়ার পর, তাদের কাছ থেকে ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড চেয়ে নিন যেটি আবেদন করার সময় ব্যবহার করা হয়েছে।

অতঃপর  www.thaievisa.go.th ওয়েবসাইটে লগইন করলে নিজেই আপনার আবেদনের অগ্রগতি দেখতে পারবেন। ভিসা আবেদন সংক্রান্ত বিভিন্ন স্ট্যাটাসের আপডেটগুলোর অর্থ নিম্নরূপ: -

○ "Pending Payment" – ভিসা আবেদন করা হয়েছে, কিন্তু পেমেন্ট করা হয়নি। ফলে আবেদনটি অসম্পূর্ণ।
○ "Pending Document Check" – দূতাবাস আপনার জমাকৃত কাগজপত্র যাচাই করছে।
○ "Pending Approval" – আপনার কাগজপত্র যাচাই করা হয়েছে এবং সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হতে পারে অথবা নাও হতে পারে। দূতাবাসের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করুন।

৩. ভিসা গ্রহণ: আপনার ভিসা আবেদন অনুমোদন করা হলে, আপনার ই-ভিসা আবেদনপত্রে প্রদত্ত ইমেইলে ই-ভিসাটি প্রেরণ করা হবে। আপনি আপনার অ্যাকাউন্টে লগ ইন করে “Manage Visa Application(s)” এ গিয়ে “Download” অপশন সিলেক্ট করে আপনার ভিসাটি ডাউনলোড করতে পারবেন।

৪. প্রক্রিয়াকরণের সময় এবং অধিক আবেদন সংখ্যা: দূতাবাস প্রতিদিন ৯০০ থেকে ২,০০০টি আবেদনপত্র গ্রহণ করে। এছাড়াও আমরা বিপুল সংখ্যক জাল কাগজপত্র পায়, যা অসাধু ব্যক্তি বা এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে জমা দেওয়া হয়। এই কারণে আমরা প্রকৃত পর্যটক, রোগী এবং প্রতারণামূলক আবেদন চিহ্নিত করতে প্রতিটি আবেদন অতি সতর্কতার সাথে যাচাই করে থাকি। যার ফলে ভিসা প্রক্রিয়াকরণে ৩০ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। আবেদনকারীদের পক্ষ থেকে অপ্রয়োজনীয় অনুরোধ, আবেদন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে। এর ফলে  আবেদন প্রক্রিয়ার সময়সীমা বাড়তে পারে এবং অন্য আবেদনকারীদের ক্ষেত্রেও  বিলম্ব হতে পারে।

রয়েল থাই দূতাবাস আপনার ধৈর্য ও সহনশীলতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। কারণ আমরা নিরপেক্ষ ভিসা প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে বদ্ধ পরিকর। আমরা বাংলাদেশি নাগরিকদের সহায়তা করতে এবং থাইল্যান্ড-বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব ও সহযোগিতাকে আরও জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

টিআর/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।