ঢাকা: বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) আওতাধীন সিভিল এভিয়েশন একাডেমি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির এক নতুন মাইলফলক অর্জন করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত আইসিএও গ্লোবাল ইমপ্লিমেন্টেশন সাপোর্ট সিম্পোজিয়ামে আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইসিএও) সেক্রেটারি জেনারেল জুয়ান কার্লোস সালজার একাডেমিকে গোল্ড মেম্বারশিপ হস্তান্তর করেন।
বেবিচকের পক্ষে সংস্থার সদস্য (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) এয়ার কমডোর আবু সাঈদ মেহ্বুব খান এবং সিভিল এভিয়েশন একাডেমির পরিচালক প্রশান্ত কুমার চক্রবর্তী ফলক গ্রহণ করেন বলে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায় বেবিচক।
আইসএও সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, খুব কম দেশই এত অল্প সময়ের মধ্যে সিলভার থেকে গোল্ড ক্যাটাগরিতে উন্নীত হতে পারে। বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন একাডেমির এই অর্জন সম্ভব হয়েছে এর চেয়ারম্যানের অসামান্য দিক-নির্দেশনা ও সার্বক্ষণিক তদারকির ফলে। এই গুরুত্বপূর্ণ অর্জনের জন্য সিভিল এভিয়েশন একাডেমি এর সংশ্লিষ্ট সব সদস্যদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া দায়িত্ব গ্রহণের পর সিভিল এভিয়েশন একাডেমি পরিদর্শন করেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সিলভার থেকে গোল্ড সদস্যপদ অর্জনের লক্ষ্যে নির্দেশনা দেন। পরবর্তীতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি অর্জিত হয়।
এই প্রসঙ্গে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, সত্যিকার অর্থেই এটি বিশাল অর্জন। অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা এটি অর্জন করতে পেরেছি। এর ফলে বাংলাদেশের এভিয়েশন সেক্টরে আরও অনেক দক্ষ জনবল এবং বিশেষজ্ঞ তৈরি হবে।
তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমরা প্ল্যাটিনাম ক্যাটাগরিতেও উন্নীত হতে পারবো। এছাড়া বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন একাডেমি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির এক নতুন মাইলফলক এর জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর এভিয়েশন খাতে দক্ষ ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনবল তৈরির লক্ষ্যে সিভিল এভিয়েশন একাডেমি আইসিএওর সক্রিয় সহযোগিতায় প্রশিক্ষণের মানোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। মানদণ্ড অনুসরণ করে কার্যক্রম পরিচালনার ফলে সিভিল এভিয়েশন একাডেমি সিলভার ক্যাটাগরি থেকে গোল্ড ক্যাটাগরিতে উন্নীত হয়েছে। একাডেমি নিয়মিতভাবে আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ আয়োজনসহ ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়ের বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে, যা শুধু বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের জন্যই নয়, বরং দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্সের জন্যও ব্যাপক সুবিধা বয়ে আনবে। গোল্ড সদস্য হিসেবে সিভিল এভিয়েশন একাডেমি এখন আইসিএও প্রণীত স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন ট্রেনিং মডেলের অধীনে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা ও মান বজায় রাখার দায়িত্ব পালন করছে।
সিভিল এভিয়েশন একাডেমির গোল্ড সদস্যপদ অর্জনের ফলে এই অঞ্চলের এভিয়েশন ইন্সট্রাক্টর ও ইন্সপেক্টরদের দক্ষতা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হবে, যা আইসিএও অডিটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আইসিএও-এর আটটি গুরুত্বপূর্ণ ক্রিটিকাল এলিমেন্টের মধ্যে চতুর্থটি হলো ট্রেনিং। দক্ষ মানবসম্পদ গঠনের মাধ্যমে সার্ভাইলেন্স এবং রিসল্যুশন অব সেফটিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, যা আসন্ন আইসিএও অডিটে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুসংহত করবে।
সিভিল এভিয়েশন একাডেমির গেল্ড সদস্যপদ অর্জনের ফলে আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ খাতে বাংলাদেশের সক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন থেকে বাংলাদেশে প্রশিক্ষিত আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষক তৈরি হবে, যারা দেশ ও বিদেশে আইসিএওর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কোর্স ডেলিভারি দিতে সক্ষম হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ এখন আইসিএও ট্রেনিং প্যাকেজ উন্নয়ন ও সরবরাহের সক্ষমতা অর্জন করেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বব্যাপী প্রশিক্ষণ প্রদান করা সম্ভব হবে, যা দেশের বিমান চলাচল প্রশিক্ষণখাতে নতুন আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫
এমআইএইচ/এএটি