প্রতিবারের মতো এবারও ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে সমাগম হয়েছে কয়েক লাখ পর্যটক। টানা পাঁচদিনের ছুটিতে এবার কক্সবাজারে চার লাখ পর্যটকের সমাগম হবে এমনই আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পর্যটক বরণে এখানকার প্রায় চারশো হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজগুলোকেও সাজানো হয়েছে নতুন সাজে। পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে কাজ নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশ। শুধু কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতই নয়, রামুর বৌদ্ধবিহার, হিমছড়ি, ইনানী, মহেশখালী, সোনাদিয়া ও ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ জেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলোতেও বিভিন্ন বয়সী মানুষের উপচেপড়া ভিড় পড়েছে। তবে হালকা বৃষ্টি ও মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে গরমের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেলেও কিছু কিছু বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে পর্যটকদের।
পুরান ঢাকা থেকে মঙ্গলবার সপরিবারে কক্সবাজার আসেন আব্দুর রহিম। তিনি বলেন, সত্যিই অসাধারণ। মেঘাচ্ছন্ন পরিবেশ থাকাতে সমুদ্রসৈকতকে আমরা অন্যভাবে উপভোগ করছি। খুব ভালো লাগছে।
রাঙামাটির যিশু চাকমার অনুভূতি, সারা বছরই তো পাহাড়ে থাকি, তাই সাগর আমাদের অন্যভাবে টানে। আর কক্সবাজার বলে কথা, এটা তো বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত।
‘স্বপ্নের সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখা, বালুকা বেলায় ছোটাছুটি, সমুদ্রের মোহনীয় গর্জন শোনার অনুভূতি কি সাধারণ কিছু? আর সমুদ্রের লোনাজলে গা ভাসানোর লোভ কে সামলাতে পারে। সত্যিই অসাধারণ একটা জায়গা। এখানে আসলেই তো মন ভালো হয়ে যায়’। এভাবেই বললেন উন্নয়নকর্মী ড. আছিং।
তার মতে, কক্সবাজার পুরোটাই প্রাকৃতিক সৈকত। এখানে কোনো ধরনের কৃত্রিমতা নেই। তাই কক্সবাজার সৈকতের আবেদনই অন্যরকম। অন্যদিকে টানা পাঁচদিনের ছুটিতে পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে টুরিস্ট পুলিশ, জেলা পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম জয় বাংলানিউজকে বলেন, প্রাথমিক হিসাবে টানা পাঁচদিনের ছুটিতে আমরা আশা করছি, প্রায় চার থেকে পাঁচ লাখ পর্যটক কক্সবাজার বেড়াতে আসবে।
তিনি বলেন, পর্যটকেরা যেন কোনোভাবেই হয়রানি বা প্রতারণার শিকার না হয়, সেজন্য জেলা প্রশাসনের সাতজন ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ক্রমে সমুদ্রসৈকতসহ আশাপাশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে দায়িত্ব পালন করছেন। সমুদ্রসৈকতের লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলীসহ ১১টি পয়েন্টে স্থাপন করা হয়েছে তথ্য কেন্দ্র (ইনবক্স)। যেকোনো অভিযোগ এখানে অভিযোগ করতে পারবে পর্যটকেরা। পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে একটি হটলাইন নম্বর (০১৭৩৩৩৭৩১২৭)।
আমরা আশা করছি, এবারের ঈদে পর্যটকদের ভ্রমণ অনেক নিরাপদ এবং অনেক আনন্দদায়ক হবে যোগ করেন তিনি।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার থেকে টুরিস্টরা আশা করেছে তাদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে টুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তিনি বলেন, এসব পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে রাত-দিন ২৪টি ঘণ্টা টুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে। পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছে টুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা। এছাড়া বিচবাইক, বাইসাইকেল, জেডেস্কি টহলসহ বিভিন্নভাবে পর্যটকদের নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, শুধু কক্সবাজার সৈকত নয়, সৈকতের আশপাশে যেসব পর্যটন কেন্দ্রগুলো আছে হিমছড়ি, ইনানীসহ আশপাশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে টুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে পাঁচদিনের বাড়তি চাপ সামলানোর পাশাপাশি পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি ব্যস্ততম বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে সাদা পোশাকেও দায়িত্ব পালন করছে টুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা জুন ০৫, ২০১৯
এসবি/এএটি