ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পর্যটন

অযত্ন-অবহেলায় বহুকালের সাক্ষী রাজা হরিশচন্দ্রের প্রাসাদ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৪ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০১৯
অযত্ন-অবহেলায় বহুকালের সাক্ষী রাজা হরিশচন্দ্রের প্রাসাদ রাজা হরিশচন্দ্রের প্রাসাদ। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: কেউ বলে কোটবাড়ি ঢিবি, কেউ রাজা হরিশচন্দ্রের প্রাসাদ, রাজা হরিশচন্দ্রের বাড়ি। আবার কেউ রাজা হরিশচন্দ্রের মঠ বললেও প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের সাইনবোর্ডে এটি ‘রাজা হরিশচন্দ্রের প্রাসাদ। বহুকাল আগের এই প্রাচীন স্থাপনা পাল বংশের গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন ধারণ করলেও বর্তমানে এটি বিলীনের পথে। চরম অযত্ন এবং অবহেলায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে সপ্তম শতকে নির্মিত পাল রাজা হরিশচন্দ্রের সর্বেশ্বর রাজ্যের রাজধানী প্রাসাদটি।

সাভার বাসস্ট্যান্ড বাজারের পূর্ব পাশে মজিদপুরে অবস্থিত এই প্রাসাদ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পুরো প্রাসাদ এলাকা লোহার গ্রিল দিয়ে ঘেরা। কিন্তু যাওয়া-আসার পথে কোনো বাধা নেই।

এছাড়া দরজায় তালা থাকলেও স্থানীয় শিশুরা মূল প্রাসাদ এলাকায় খেলাধুলা করছে। না বুঝেই তারা ক্ষতি করছে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক নিদর্শনের।

মূল প্রসাদে ওঠার জন্য চারপাশে চারটি সিঁড়ি থাকলেও তা অনেকটাই ক্ষয় হয়ে গেছে। এছাড়া প্রাসাদের বেশ কয়েকটি স্পট ব্যাপকভাবে ক্ষয় হয়ে পড়েছে। বলতে গেলে নিদর্শনটি কালের সাক্ষী হয়ে কোনোমতে টিকে আছে। ঢিবি বা প্রসাদের দক্ষিণ পাশের একটি লাইন খনন করা থাকলেও বাকি পুরোটাই অবহেলিত। খনন করা হয়নি আর।

পুরো ঢিবি এলাকা এবং ঢিবির সব দেয়াল লতাপাতা ও ঘাসে ঢেকে গেছে। এতে করে ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

রাজা হরিশচন্দ্রের প্রাসাদ।  ছবি: বাংলানিউজস্থানীয়রা জানিয়েছে, বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন শতাধিক মানুষ আসে রাজার বাড়িটি দেখতে। মাঝে মাঝে বিদেশি লোকও আসে এখানে। ছুটির দিনে বেশি লোক হয়। আর এমন একটি স্থাপনার রক্ষণাবেক্ষণ যদি না হয়, তাহলে কালের গর্বে বিলীন হয়ে যাবে এই প্রাচীন নিদর্শন। বাড়িটির সব জায়গার রক্ষণাবেক্ষণ ও খনন কাজ যদি করা হয়, তাহলে এলাকাটি পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে। যদিও এ বিষয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই।

প্রাসাদটিতে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফরের নিয়োগ করা রক্ষণাবেক্ষণকারী জাহাঙ্গীর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এই প্রাসাদে দর্শনার্থী ঢুকতে চাইলে টিকিট লাগবে। কিছুদিনের মধ্যেই টিকেটের ব্যবস্থা করা হবে।

ঢিবির খনন কাজ শেষ করা হয়নি কেনো জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুনেছি বাজেটের অভাবে শেষ করা হয়নি। কবে নাগাদ আবার খনন কাজ শুরু করা হবে, তিনি তা জানাতে পারেননি।

রাজা হরিশচন্দ্রের প্রাসাদ।  ছবি: বাংলানিউজইতিহাসবিদদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাভারের বংশী নদীর তীরে ছিল পাল বংশের রাজা হরিশচন্দ্রের সর্বেশ্বর রাজ্যের রাজধানী। তার শাসনামলে সর্বেশ্বর রাজ্যের রাজধানীর নাম ছিল সম্ভার। আর তার প্রাসাদ ছিল সপ্তম শতকের এই স্থাপনাটি। পরবর্তীতে সম্ভার নাম থেকেই এই সাভার নামের উৎপত্তি।

এই স্থাপনার ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারলে, তা বাংলার ইতিহাসকে আরও সমৃদ্ধ করবে বলে মনে করেন ইতিহাসবিদরা।

বাংলাদেশের সময়: ০৫৩০ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০১৯ 
আরকেআর/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।