ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পর্যটন

অপার সৌন্দর্যের সাজেক ভ্যালি

মো. জাহিদ হাসান জিহাদ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০২২
অপার সৌন্দর্যের সাজেক ভ্যালি

সাজেক থেকে:  ‘ছোট বড় অসংখ্য পাহাড়। সবুজের অরণ্যে মেঘের হাতছানি।

পাহাড়ের বুক চিরে আঁকাবাকা পিচঢালা পথ, সেই পথের বাঁকে বাঁকে আদিবাসীদের বাড়ি কখনো কখনো উঁকি দিয়ে উঠছে। পাহাড়ের টিলা থেকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে সবুজে মোড়া প্রকৃতি ও নীল আকাশ।

পাহাড় ও মেঘের অপূর্ব মিলনের জন্যই বুঝি সাজেককে বলা হয় মেঘের রাজ্য। খাগড়াছড়ি শহর থেকে প্রায় ৬৭ কিলোমিটার দূরে দুর্গম পাহাড়ের চূড়ায় সাজেকের অবস্থান।

সাজেকে যেতে হলে খাগড়াছড়ির সদর থেকে চাঁন্দের গাড়ি (স্থানীয় পরিবহন) করে ঘণ্টা তিনেকের পথ। পাহাড়ি এ পথে ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের স্বাগত জানাতে ছোট ছোট আদিবাসী শিশুদের হাত নাড়তে দেখা যায়। সেই সঙ্গে পাহাড়ে সবুজ অরণ্য যেনো তাদের সৌন্দর্য দিয়ে আকর্ষণ করে।

সোমবার (০৩ জানুয়ারি) সকাল ৮টা নাগাদ খাগড়াছড়ি শহর থেকে চাঁন্দের গাড়িতে ঘণ্টাখানেক যাওয়ার পরে দিঘানালায় পৌঁছালাম। এরপরে আমাদের অপেক্ষা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে সাজেক যাওয়ার। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনীদের কার্যক্রম প্রশংসনীয়।

সকাল সাড়ে ১০টায় সাজেকের উদ্দেশে সেনাবাহিনীর টহল টিমের সঙ্গে পর্যটকদের শতাধিক চাঁন্দের গাড়ি ছুটে চলে পাহাড়ের বুক চিরে। বেলা ১২টা নাগাদ রুইলুই পাড়ায় পৌঁছায়। তারপর চোখের সামনে স্বপ্নের সাজেক। পাহাড়ের সর্বোচ্চ চুড়ায় রুইলুই পাড়ার অবস্থান। যেদিকে তাকানো যায় মেঘ আর পাহাড়ের মিলনমেলা। আর অদূরে আসাম রাজ্যের পাহাড়। এ যেনো প্রকৃতির এক অপার সৌন্দর্য।

সাজেক দুইটা পাড়া রয়েছে, রুইলুই এবং কংলাক। যেটা রুইলুই ও কংলাক পাহাড় নামেও অনেকে বলে। রুইলুই থেকে কংলাক পাহাড়ের দূরত্ব মাত্র ৩ কিলোমিটার। রুইলুয়ে কটেজে ওঠা অনেক পর্যটকই একবার ঘুরে আসে কংলাক পাহাড় থেকে।

কুষ্টিয়া থেকে আসা পর্যটক জয়শ্রী পাল। তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। এসেছেন সাজেকে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সাজেক না এলে দেখতে পারতাম না বাংলার প্রকৃতি এতোটা সুন্দর। চোখের সামনে পাহাড় আর মেঘ দেখে মন ভরে যায়। এছাড়া আদিবাসীদের জীবনযাত্রা পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে কাঠ ও বাঁশের তৈরি ছোট ছোট ঘর নজর কাড়ে।

আরেকজন পর্যটক মৌসুমী খাঁন বাংলানিউজকে জানান, সাজেক আমার কাছে ভয়ংকর সৌন্দর্যের হাতছানি, তাইতো সেই সূদুর কুষ্টিয়া থেকে ছুটে আসা। এখানে এসে পাহাড়ি ফল, বাঁশের চোঙে পাহাড়ি মুরগি রান্না এবং আদিবাসীদের হাতে বানানো বাঁশের চোঙে চা খেয়ে অন্যরকম স্বাদ পেয়েছি, সঙ্গে চোখের সামনে মেঘ ও পাহাড়ের সূর্যের লুকোচুরি দেখে আত্মতৃপ্তি পেলাম।

আসাদুর রহমান বাবু বাংলানিউজে জানান, সাজেক পাহাড়ের চূড়ায় কাঠের তৈরি কটেজগুলোর লাগোয়া বারান্দা থেকে যেনো মনে হয় এই বুঝি হাত বাড়ালে মেঘ ছোঁয়া যাবে। তবে কটেজে থাকতে হলে আগে থেকে খোঁজ নিয়ে বুক করে রাখায় ভালো। সেই সঙ্গে খাবার পানি আনলে ভালো হয়, কেননা এখানে খাবার পানির দাম তূলনামূলক বেশি।

বাংলাদেশ সময়: ০০০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।