ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

অরূপ রূপের বকখালি-হেনরিজ আইল্যান্ড

আবু আফজাল মোহা. সালেহ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০৮ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৫
অরূপ রূপের বকখালি-হেনরিজ আইল্যান্ড

প্রকৃতির অন্যতম নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনা জেলার বকখালি সমুদ্র সৈকত এবং সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে অবস্থিত হেনরিজ আইল্যান্ড।

এরই মধ্যে স্থান দুটি ভ্রমণপিয়াসুদের অন্যতম বিশেষ আকর্ষণে পরিণত হয়েছে।

এ যেন টু-ইন-ওয়ান! এক জায়গা দেখতে এসে দুটি স্থানই ভ্রমণ করে যান পর্যটকরা।

বকখালির মায়াবি ও শান্ত সমুদ্র সৈকত উপভোগ করে পাখি ডাকা ছায়া সুনিবিড় নির্জন হেনরিজ আইল্যান্ড দেখে মনের প্রশান্তি বেড়ে যায়।

বকখালি সমুদ্র সৈকতের শান্ত ঢেউয়ে গা না ভেজালে বোঝাই যাবে না প্রতিবছর মানুষ কেন সমুদ্রের দিকে ছোটে? এখানকার সমুদ্রজলে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দুর্লভ দৃশ্য প্রকৃতির প্রতি বিস্ময় বাড়িয়ে দেয়।

১০ টাকায় চেয়ার ভাড়া করে সমুদ্র তটে বসে সমুদ্রের গর্জন ও অপরূপ দৃশ্য উপভোগে দেবে বাড়তি আনন্দ।

পাশের দোকান থেকে শামুক, হস্তশিল্পের বিভিন্ন জিনিসপত্র কিনে স্মৃতির সংগ্রহশালাকে একটু সমৃদ্ধ করেও নিতে পারেন।

এখানে থাকার জন্য বিভিন্ন মান ও দামের আবাসিক হোটেল রয়েছে। আছে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন ট্যুরিস্ট লজ।

বকখালির সৌন্দর্য অবগাহন শেষে গাড়ি রিজার্ভ বা শেয়ার করে যেতে পারেন হেনরি আইল্যান্ডে। বকখালি থেকে হেনরি মাত্র ৩ কিলোমিটারের পথ।

যারা নির্জনতা পছন্দ করেন তাদের জন্য এটি আদর্শ জায়গা। এখানেই রয়েছে নির্জন কিরণ সৈকত। বেলাভূমিতে চোখে পড়বে হাজার-হাজার লাল কাঁকড়া। এখান থেকে বহুদূরে দেখা যায় সুন্দরবনের কিছু কিছু দ্বীপ।

সুন্দরী, হেতাল, গরান, গেওয়া প্রভৃতি বৃক্ষ আছে সেখানে। দিনের পর পর দিন, মাসের পর মাস এসব ম্যানগ্রোভ গাছের নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকার দৃশ্য আপনাকে বিনয়ী করে তুলবে।

যদি শীতকালে সেখানে ভ্রমণে যান তাহলে ওই সময়কার বাহারি অতিথি পাখি দেখে বিমোহিত হতে পারেন। ‘ওয়াচ টাওয়ারে’ উঠে তাকালে নিশ্চুপ মুগ্ধতা আপনাকে আরও গ্রাস করবে।

একটু বেশি ভাড়ায় সেখানে স্থাপিত বিভিন্ন কটেজে রাত যাপন করার ব্যবস্থা আছে। এসব কটেজে থাকলে রাতের বেলার ঝিঁ-ঝিঁ পোকার ডাক আপনার মনের ভেতর জন্ম দেবে এক ভিন্নরকম অনুভূতির!

এখানে থাকার বিশেষ সুবিধা হলো-বকখালি বা হেনরি আইল্যান্ডের আশেপাশে আরও কিছু পর্যটন কেন্দ্র খুব সহজেই ভ্রমণ করা যায়।

যেভাবে যাবেন?
বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকে প্লেনে কলকাতায় যেতে হবে। আর বাংলাদেশ থেকে ট্রেন, বাস এবং আকাশ পথে কলকাতায় যাওয়া যায়।

সেখান থেকে শিয়ালদাহ স্টেশন থেকে নামখানাগামী (সাউথ) ট্রেনে চেপে প্রথমে নামখানা যেতে হবে। তারপর ভ্যানে করে নামখানা নদীবন্দর পার হয়ে বকখালির বাসে চড়ে পৌঁছে যেতে পারেন কাঙ্ক্ষিত স্থানে।

এছাড়া কলকাতার এসপ্লানেড থেকে সকালে ভূতল পরিবহনে চড়ে নামখানা হয়ে হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদী পার হয়ে বকখালিতে যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।

এসব পরিবহনে যাওয়ার খরচই অল্প। আর ঢাকা থেকে কলকাতার রিটার্ন প্লেন ভাড়া ১১ হাজার ১০৪ টাকা (রিজেন্ট এয়ারওয়েজ)। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সেও প্রায় একই খরচ পড়বে।  

প্রিয় পাঠক, ভ্রমণ যাদের নেশা, বেড়ানোর সুযোগ এলে যারা উড়িয়ে দেন সব বাধা, কাজের অংশ হিসেবে যারা ভ্রমণ করেন কিংবা যাদের কালেভদ্রে সুযোগ হয় ভ্রমণের তারা সবাই হতে পারেন ট্রাভেলার্স নোটবুক’র লেখক।

আপনার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন বাংলানিউজের পাঠকদের সঙ্গে। আর একটা কথা লেখার সঙ্গে ছবি পাঠাতে ভুলবেনই না, সেই সঙ্গে বাতলে দিন সেখানে যাওয়ার পথঘাটের বিবরণও।  

প্রিয় পাঠক, আপনার ভ্রমণ আনন্দ বিশ্বজুড়ে বাঙালির কাছে ছড়িয়ে দিতে আমাদের ই-মেইল করুন-

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৩ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৫
টিআই/এমএ/এটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।