ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

নেপালে ত্রিশুলী পাড়ের ‘জীবন চাকা’ 

সুবল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৭
নেপালে ত্রিশুলী পাড়ের ‘জীবন চাকা’  নেপালে ত্রিশুলী পাড়ের ‘জীবন চাকা’। ছবি: সোহেল সারওয়ার

নেপাল থেকে ফিরে: সুউচ্চ পাহাড়-সারিকে দুভাগ করে সাপের মতো চলে গেছে ত্রিশুলী নদী।  এক পাড়ে কাঠমান্ডু থেকে পোখারা যাওয়ার সড়ক, অন্য পাড়ের পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে স্থান পেয়েছে ঘরবাড়ি।  পুরোটা পথ মাড়িয়ে যেতে যেতে এমনিতেই চিরসবুজ পাহাড় চোখের প্রশান্তি দেবেই। তাতে যেন বাড়তি সৌন্দর্য যোগ করেছে এই নদী।

হিমালয় পর্বতের পাদদেশ থেকে সৃষ্ট এই ত্রিশুলী নদীর পাড়কে ঘিরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য হোটেল ও রেস্তোরাঁ।  নদীটি মিশেছে ভারতের গঙ্গার মোহনায়।

 
নেপালে ত্রিশুলী পাড়ের ‘জীবন চাকা’।  ছবি: সোহেল সারওয়ারসড়কের পাশে হওয়ায় ত্রিশুলী নদীকে ঘিরে পাহাড়ি এলাকায় বসবাসরত অনেকে গড়ে তুলেছেন আধুনিক রেস্তোরাঁ। যা পোখারা শহরের সারাংকোট থেকে হিমালয় পর্বত দর্শনে যাওয়া পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে।   

হাইওয়ে চেবলো রেস্টুরেন্ট, চায়না টাউন, নেপালি কিচেন, ত্রিশুলী ভিউ, ট্যুরিস্ট রেস্তোরাঁ, ভিজিটরস রেস্টুরেন্ট, এক্সপ্রেস বার, হাইওয়ে ফুডল্যাডসহ শতাধিক হোটেল ও রেস্তোরাঁ চোখে পড়েছে।  রেস্তোরাঁর পাশাপাশি পর্যটকদের জন্য গড়ে তুলেছে ট্যুরিস্ট জোনও। নেপালের মনোরম স্থানগুলো দর্শন করতে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা এখানে যাত্রাবিরতি করেন। তখনই ত্রিশুলী নদী দর্শনে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে পর্যটকরা। অনেকেই কাঠমান্ডুর অদূরে বেশ কয়েকটি ট্যুরিস্ট জোন থেকে রাইডিং বোট ভাড়া করে ত্রিশুলী নদীতে ঘুরে বেড়ায়।  
নেপালে ত্রিশুলী পাড়ের ‘জীবন চাকা’।  ছবি: সোহেল সারওয়ার‘নেপালি কিচেন’ রেস্তোরাঁর মালিক নিরোজ সরকার বাংলানিউজকে জানান, কাঠমান্ডু এবং পোখারা যাওয়ার পথে পর্যটকেরা আমাদের রেস্তোরাঁয় আসেন। পর্যটকদের নিয়েই আমাদের বিজনেস।  যত বেশি পর্যটক আসে, ততবেশি আমাদের ব্যবসা হয়।  মাঝখানে বেশ কিছু দিন পর্যটকদের আনাগোনা কম ছিল। তবে দেশি-বিদেশি পর্যটকের আনাগোনায় বর্তমান মুখর নেপাল। পাশাপাশি হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোও জমজমাট।  
নেপালে ত্রিশুলী পাড়ের ‘জীবন চাকা’।  ছবি: সোহেল সারওয়ারদিল্লি থেকে ঘুরতে আসা শিব শংকর বাংলানিউজকে জানান, শুধু পোখারার সারাংকোট নয়, পুরো নেপালের সৌন্দর্য দেখতে আমরা পরিবারসহ প্রায়সময় এখানে আসি।  বিশেষ করে হোলি উৎসবকে ঘিরে নেপালে থাকে বাড়তি উন্মাদনা। সেই সুবাদে আমরাও নেপালিদের আনন্দে একাত্মতায় শামিল হই। ত্রিশুলী নদীতে রাইডিং বোট নিয়ে ঘোরাফেরা করি।  হিমালয় পর্বতের বরফগলা পানি থেকে সৃষ্ট খরস্রোতা এ নদীটি সত্যিই অনেক সুন্দর। যা সড়কের ধারে হওয়া পর্যটকদের বেশি আকৃষ্ট করে।   
 
নেপালে ত্রিশুলী পাড়ের ‘জীবন চাকা’।  ছবি: সোহেল সারওয়ারঅন্যদিকে, নেপালিরা ৩৯৫ কিলোমিটার আয়তনের পাহাড়ঘেরা কাঠমান্ডু শহরে যেমনি বসত করছেন, তেমনি পুরো নেপালের বেশিরভাগ সুউচ্চ পাহাড়েও তাদের বসতি চোখে পড়ার মতো।  সারি সারি ভাবে পাহাড়গুলো কেটে কেউবা পাহাড়ের মাঝখানে, কেউবা তারও ওপরে বসত করছেন। তাও আবার পাথর-সিমেন্ট দিয়ে বানানো ঘরে। খরস্রোতা ত্রিশুলী নদীর এই পাড়ে সুউচ্চ সড়ক আর ওপারে ঘরবসতি।  নদীর এপার থেকে ওপারে যেতে নেপালিরা বেশিরভাগ ব্যবহার করছে তার (ক্যাবল) দিয়ে বানানো একধরনের ঝুলন্ত ব্রিজ।  এছাড়া নদী সংলগ্ন পাহাড়ের কোলঘেঁষে বসানো ক্যাবল কারও পর্যটকদের আকর্ষণ করছে বেশ।  
 
বাংলাদেশ সময়: ০১৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৭
এসবি/টিসি

**হোলির রঙে রঙিন নেপাল

**পাহাড়ের বুকে বসতি, আঁকাবাঁকা সড়কের দেশ নেপাল

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।