ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

সারাংকোট-চোখের আরামের নাম!

তাসনীম হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৭
সারাংকোট-চোখের আরামের নাম! সারাংকোট। ছবি: সোহেল সরওয়ার

নেপাল থেকে ফিরে: ভোর ছয়টায় যদি পোখারার সারাংকোটের সুন্দর দৃশ্য মাত্র এক ছবিতে তুলে ধরতে কোনো দুঁদে ফটোগ্রাফারকেও বলা হয়, নিশ্চিত তিনিও টাল খাবেন। সারাংকোটের চারপাশে প্রকৃতি তার এতো এতো রূপ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রেখেছে-কোনটা রেখে কোনটা ধরবেন?

ডানপাশে যদি ক্যামেরার লেন্স ধরা হয়-পাওয়া যাবে অন্নপূর্ণার চূড়া, বামে যদি ক্লিক করেন ধরা পড়বে ফেওয়া লেকের উচ্ছ্বলতা।   যদি পেছনে-সেখানে সূর্য তার রঙিন মুখ নিয়ে ‘জন্ম’ নিতে মুখিয়ে আছে।

 

আর সময়টা যদি সন্ধ্যায়ও হয়, তাতেও প্রকৃতি মুখ ফেরাবে না। সামনের দিকে তাকান।   সেখানে পেছনের দৃশ্যটা না থাকার বদলা দেবে প্রকৃতি-সূর্যাস্ত দিয়েই।   চোখের আরাম পেতে আর কি-ই বা চাই?

পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেপাল ভ্রমণে আসা মানুষের ট্যুরবুকে এক নম্বর চয়েস থাকে তাই পোখারা।   কেননা ছোট্ট শহরটার গায়েই যে প্রকৃতির তীর্থস্থান সারাংকোটের অবস্থান।
 সারাংকোট।  ছবি: সোহেল সরওয়ার
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু শহর থেকে পশ্চিমে ২১০ কিলোমিটারের বড় পথ পর পোখারা শহর।   সূর্যোদয়ের আগেই সারাংকোটের পথ ধরতে তাই সবাই আগেরদিন গিয়ে উঠেন পোখারায়।   ছোট-বড় অনেক হোটেলে ভরা হিমালয় কন্যার দ্বিতীয় প্রধান এই শহর।   অনেকে আবার সূর্যোদয়টা মিস হবে এমন আশঙ্খায় রাতেই চলে যান সারাংকোটে।   সেখানেও আছে রাত্রীযাপনের যথেষ্ট সুযোগ। পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে অতিথিদের অপেক্ষায় আছে ১২টি হোটেল-রেস্তোরাঁ।
 
১১ মার্চ ভোর ছয়টায় সারাংকোটে গিয়ে দেখা মিলল-ভ্রমণপিপাসুদের মিছিল।   সৌন্দর্য ভালোভাবে উপভোগের জন্য সেখানে রয়েছে কয়েক তলা বিশিষ্ট বেশ কয়েকটি ভবন।   সেই ভবনগুলোর ছাদে দাঁড়িয়ে সবার অপেক্ষা পূব আকাশে-কখন সূর্য দেখা দেবে।   তবে এই দফায় সূর্য বিরূপ আচরণ করে বসল।   মাত্র ৫ মিনিটের জন্য রঙিন মুখ দেখিয়ে তারপর মেঘের আড়ালে লুকিয়ে যেন চূড়ান্ত ‘প্রতারণা’ই করল সে! তবে সময়ের বয়স বাড়তেই সূর্যও তার ‘বিশাল’ কিরন নিয়ে হাজির। তাতেই বরফ ঢাকা অন্নপূর্ণার চকচকে রূপ ধরা পড়ল। সারাংকোট।  ছবি: সোহেল সরওয়ার

পোখারার লুম্বিনী এলাকার বাসিন্দা রামভক্ত নিউপানির বহুবছর ধরে সঙ্গী চার চাকার একটি ছোট্ট গাড়ি।   নেপালের সব পথ ‘চেনা’  বছর পঞ্চাশের এই চালক বললেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমাদের দেশে ভ্রমণ করতে আসা মানুষের খুব কমেরই সারাংকোটের পথে পা ছোঁয়ার ভাগ্য হয় না।   না হয় প্রায় সবার এই দেশে আসার মূল কারণ থাকে সারাংকোট এসে চারপাশের সৌন্দর্য অবলোকন। ’
 
সারাংকোটের পথে পথে কথা হয় নানান দেশের মানুষের সঙ্গে। তাদের সবারই একই বক্তব্য-‘নেপালে এলাম, পোখারার সারাংকোটে এলাম না।   তা তো হয় না। ’
 
পোখারা শহর থেকে গাড়িতে মিনিট ৪৫ এর পথ সারাংকোট। কিলোমিটার মাপলে, তা মাত্র ২৫।   সেই পথের পুরোটা জুড়েই পাহাড়-সমতলের সম্প্রীতি।   সেই পথ মাড়িয়ে যেতে পারলেই হল।   তবেই-প্রকৃতি আলাপ করিয়ে দেবে তার সৌন্দর্যের ‘পুরো প্যাকেজ’ সারাংকোটের সঙ্গে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৭
টিএইচ/টিসি/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।