ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

টানা ছুটিতে ‘সাগরকন্যা’ কুয়াকাটায় পর্যটকের ঢল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৮
টানা ছুটিতে ‘সাগরকন্যা’ কুয়াকাটায় পর্যটকের ঢল ‘সাগরকন্যা’ কুয়াকাটায় পর্যটকের ঢল। ছবি: বাংলানিউজ

পটুয়াখালী: টানা কয়েকদিনের ছুটিতে প্রকৃতিপ্রেমী ভ্রমণপিপাসুরা ভিড় জমাচ্ছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি ‘সাগরকন্যা’ কুয়াকাটায়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দু’দিন ধরে কুয়াকাটায় আগমন ঘটছে পর্যটকদের। তাদের পদচারণায় মুখর হয়ে হয়ে উঠেছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পর্যটকদের ঢলে হোটেল-মোটেল-কটেজের কক্ষগুলো পরিপূর্ণ হয়ে গেছে অনেকটাই। পাশাপাশি পর্যটকদের নিরাপত্তা ও পরম আতিথেয়তায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

 

ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদ-কোরবানি, পূজা-পার্বন, বড়দিন, ইংরেজি নববর্ষ ও বাংলা নববর্ষসহ ছুটির আনন্দ উপভোগ করতে দেশি-বিদেশি প্রকৃতি আর সমুদ্রপ্রেমী মানুষের ভিরে জমে ওঠে ‘সাগরকন্যা’ কুয়াকাটায়। পটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত সবকটি নদীর ওপর ব্রিজ হয়ে যাওয়া, সময় ও খরচ কমে যাওয়ায় গত কয়েকবছর ধরে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে কয়েকগুন।
‘সাগরকন্যা’ কুয়াকাটায় পর্যটকের ঢল।  ছবি: বাংলানিউজ
বিগত সময়ের ধারা অব্যাহত রেখে টানা প্রায় ৯ দিনের ছুটি পেয়ে শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) থেকেই কুয়াকাটায় পর্যটকদের সমাগম ঘটতে থাকে, যা দিনে দিনে বাড়ছে। এরই মধ্যে কুয়াকাটা জিরো পয়েন্টে শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধবিহার, মিশ্রিপাড়া সিমা বৌদ্ধবিহার, জাতীয় উদ্যান, লেম্বুর চর, শুটকি পল্লি, রাখাইন মহিলা মার্কেট, গঙ্গামতি, কাউয়ারচর, লাল কাকড়ার চর, ইলিশ পার্কসহ বিভিন্ন স্পটে পর্যটকদের ভিড়ে ফিরে পেয়েছে প্রাণচাঞ্চল্য।

ছুটি ট্যুর অ্যান্ড ট্যাভেলের পরিচালক আরিফুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, টানা কয়েকদিনের ছুটি থাকায় স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে গরমকে উপেক্ষা করে বেশ ভালোই পর্যটক রয়েছে কুয়াকাটায়। কেউ একা, কেউ পরিবার-পরিজন নিয়ে আবার কেউ পছন্দের মানুষকে নিয়ে উপভোগ করছেন কুয়াকাটার নৈসর্গিক সৌন্দর্য। এতে পর্যটকদের সর্বোচ্চ সহায়তা ও সেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

ফরিদপুর থেকে ঘুরতে আসা সরকারি চাকরিজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন বাংলানিউজকে বলেন, ঈদ-কোরবানিসহ উৎসবের বন্ধে স্বজনদের কাছে ছাড়া কোথাও যাওয়া হয়ে ওঠে না। তবে এবার অপ্রত্যাশিত ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়ানো চিন্তা মাথায় চাপে। তাই সবাইকে নিয়ে কুয়াকাটায় এসেছি। গত দু’দিনে বেশ কিছু জায়গা ঘুরেছি। এতে বাচ্চারা বেশ আনন্দ পাচ্ছে।

বরিশাল থেকে আসা কলেজছাত্র রিফাত হোসেইন বাংলানিউজকে বলেন, ৮-১০ জন বন্ধু নিয়ে কুয়াকাটায় বেড়াতে এসেছি। নানান জায়গায় ঘুরছি, বেশ মজা পাচ্ছি। ছুটিকে ঘিরে কুয়াকাটায় পর্যটকদের আগমন বেড়েছে ঠিকই কিন্তু প্রতিবারের মতো এবারেও হোটেলের ভাড়া, খাবারের দাম, আভ্যন্তরীণ পরিবহনের ভাড়া বেড়েছে অনেক।
‘সাগরকন্যা’ কুয়াকাটায় পর্যটকের ঢল।  ছবি: বাংলানিউজ
এছাড়াও অব্যাহত ভাঙন কিংবা বালু সরে যাওয়ার কারণে বিচ ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে বেরিবাধের কাছে চলে আসছে। বিচে যত্রতত্র জেলেদের নৌকা, জাল, রশি, গাছের কাণ্ড পড়ে থাকায় পর্যটকদের স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্নতা ঘটছে।

তবে সবকিছুর পরেও ৭২ ফুট দৈর্ঘ্যৈর ইলিশের পেটে বসে ভোজন বিলাস করা, সমুদ্র সৈকতে বসে বিভিন্ন ধরনের মাছ, কাকড়া বারবিকিউ করে খাওয়াসহ বিভিন্ন নতুন দর্শনীয় স্থান ও স্থাপনা ঘুরে দেখা নিয়ে পর্যটকদের উৎসাহের কমতি নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয় যানবাহনের চালকরা।

টানা ছুটির দিনগুলো কুয়াকাটায় উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ।

বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৮
এমএস/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।