কাছারীটিলায় প্রায় ১২-পরিবার লোকের বসবাস। প্রতিটি পরিবারই বাঁশ থেকে ধূপকাঠির শলা তৈরির কাজের সঙ্গে যুক্ত।
ত্রিপুরা বাঁশের জন্য বিখ্যাত। রাজ্যে প্রায় ১৯ প্রজাতির বাঁশ পাওয়া যায়। তবে মুলি, বেতু ইত্যাদি বিশেষ কিছু প্রজাতির বাঁশ থেকেই শলা তৈরি হয় বলে জানান শ্যামল দাস নামে এক ব্যক্তি। স্বামী-স্ত্রী ও দুই সন্তান মিলে চারজনের পরিবার। ছেলেমেয়েরা স্কুলে পড়ে। স্বামী-স্ত্রীর পাশাপাশি পড়াশুনার ফাঁকে তারাও শলা তৈরির কাজে হাত লাগায়।
তিনি আরো জানান, তারা এক একটি বাঁশ ২৬ থেকে ৩০ রুপি দিয়ে কিনে আনেন। এক একটি বাঁশ থেকে প্রায় ৩ থেকে সাড়ে তিন কেজি শলা তৈরি হয়। প্রতি কেজি শলা বিক্রি করা হয় ১৫ রুপি করে। এই শলা চলে যায় কর্ণাটক রাজ্যে যেখানে দেশের (ভারতের) সব চেয়ে বেশি ধূপকাঠি তৈরি হয়। অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে যে সকল ট্রাক মাছ নিয়ে রাজ্যে আসে, সেসব ট্রাক ফেরার সময় বাঁশের শলা নিয়ে যায়।
আরো এক ব্যক্তি বিজয় দাস জানান, বাঁশ কিনে আনার পর গাঁটগুলি বাদ দিয়ে একটি বাঁশগুলি কাটতে হয়। তারপর বাঁশ গুলি ফালি করে ভেতরের নরম অংশ ফেলে শলা তৈরি করতে হয়। সব ক’টি শলার আকার এক হতে হবে। নইলে শলাগুলিকে বাতিল করে দেবে ক্রেতারা। শলা তৈরির জন্য রীতিমত প্রশিক্ষণ নিতে হয় বলেও জানান বিজয়।
তবে বাঁশের কোনো অংশই ফেলার নয়। বাঁশের পরিত্যক্ত গিট ও ভেতরের নরম অংশ নিজেদের রান্নাবান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
বাঁশের শলা তৈরির পাশাপাশি তারা গ্রামীণ রোজগার যোজনার মত প্রকল্পেও কাজ করে থাকেন বলে জানান।
বাড়ির গৃহস্থালী কাজের ফাঁকে ফাঁকে মহিলারাও শলা তৈরির কাজ করে থাকেন। এতে তাদের হাতে টাকা আসে। এ দিয়ে নিজেদের সংসার চালানোর সহায়তা করা যায়। এছাড়াও নিজেদের বিভিন্ন চাহিদাও মেটানো যায়। এছাড়া ছেলেমেয়েদের অনেক প্রয়োজন মেটানো যায়।
কল্যাণপুরের পাশাপাশি রাজ্যের তেলিয়ামুড়া, সীমনা, কুমারঘাট, পেঁচারতল, কাঞ্চনপুর ইত্যাদি এলাকায় প্রচুর বাঁশের শলা তৈরি হয়। মূলত রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় কিছু মানুষ মূল পেশা হিসেবে এবং কেউ কেউ বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবে অন্য কাজের অবসরে এই শলা তৈরির কাজ করে থাকেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৬১১ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৭
এসসিএন/জেএম