এই চিত্র আখাউড়া ইমিগ্রেশন ভবনের সামনে। অথচ এই ইমিগ্রেশন দিয়ে প্রতি দিন শত শত লোক দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছেন আগরতলায়।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) আখাউড়া ইমিগ্রেশন পার হয়ে আগরতলা ভ্রমণের সময় এমন সব অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া দিয়ে আগরতলা যেতে হলে প্রথমেই পড়বে ট্যাক্স অফিস। ভ্রমণ কর দেওয়ার জন্য পর্যটকদের সেখানে যেতে হয়। টিন শেডের সেই কর ভবনের অত্যন্ত নাজুক অবস্থা। বৃষ্টি হলে সেই ঘরের সামনে জমে থাকে পানি। সেই পানি আর গাছের পাতায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এর সাথে দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
এরপর বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর চেকপোস্ট পেরিয়ে কয়েক গজ এগুলেই বাংলাদেশ অংশের ইমিগ্রেশন ভবন। টিন শেডের ঘরে দু’টি রুম থাকলেও একটিতেই কাজ চলে সকল পর্যটকদের। আরেকটিতে দেখা যায় কর্মকর্তা কর্মচারীদের জিনিসপত্র।
ইমিগ্রেশন ভবনের সামনের রাস্তায় একটুখানি বৃষ্টি হলেই হাঁটু পানি জমে যায়। এর জ্বলন্ত প্রমাণ দুই দিন আগের সারা দেশে যে বৃষ্টিপাত হয়েছে তার চিহ্ন এখানেও রয়ে গেছে। বৃষ্টির পানি এখনও পুরোপুরি শুকায়নি।
ইমিগ্রেশন ঘরে যাওয়ার যে পথ সেটিও শ্যাওলা পড়ে করুণ অবস্থা। আর পথের কোথাও ঢালাইয়ের নুড়ি, পাথর, বালি উঠে গর্ত হয়ে গেছে। পথের কোথাও আবার নোংরায় ভরা।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের আগরতলা থেকে যখন কোনো পর্যটক বাংলাদেশে আসেন বা বিদেশি কোনো পর্যটক যখন এই স্থলবন্দর দিয়ে আগরতলায় যান তারা নিশ্চয় বাংলাদেশ সম্পর্কে খারাপ ধারণা নিয়ে যান।
ইমিগ্রেশন অফিসের সামনে দায়িত্বরত ইমিগ্রেশন পুলিশ কনস্টেবল মো. নয়ন বাংলানিউজকে বলেন, ইমিগ্রেশন ভবনটি অনেক পুরনো। এই ভবনের সংস্কার দরকার। তাছাড়া ভবনের সামনের জায়গা মাটি দিয়ে উঁচু করে দেওয়া খুবই প্রয়োজন। কেননা এখানে একটু খানি বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। পানি যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। বৃষ্টি হলে মানুষ ঠিকমত যেতে পারে না।
শুধুমাত্র নোংরা পরিবেশ বা বৃষ্টির পানিই শেষ নয়। এই স্থলবন্দরে বিদ্যুৎ না থাকলে নেই বিকল্প ব্যবস্থা। ফলে বিদ্যুৎ গেলে আর পর্যটকদের ছবি তোলা হয় না। শুধুমাত্র ফরম পূরণ করেই ছেড়ে দেওয়া হয়। এতে অনেক সময় সন্ত্রাসী বা দুষ্কৃতিকারীদের পার পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া একটি মাত্র কম্পিউটারে কাজ করায় লাইন দীর্ঘ হতে থাকে। এ নিয়ে পর্যটকদের ভোগান্তির শেষ নেই।
ছোট ওই ইমিগ্রেশন ভবনে নেই মহিলাদের জন্য আলাদা বসার ব্যবস্থা। যে দু’টি টয়লেট আছে তার একটি ব্যবহারের অযোগ্য। বাকি একটি দিয়ে নারী-পুরুষ সবার জন্য ব্যবহার করা হয়।
আখাউড়া ইমিগ্রেশন দিয়ে প্রায়শই যাতায়াত করেন রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, ‘এখানে টাকা ছাড়া কখনো ইমিগ্রেশন হয় না। কিন্তু সেবার মান দেখেন? সামান্য একটু বৃষ্টি হলে হাঁটু পানি পেরিয়ে ভবনের ভেতরে আসতে হয়। তারপরেও নেই সংস্কার। এভাবেই চলছে দেশের ব্যস্ততম এই স্থলবন্দরটি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩১ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৭
এসএম/আরআর/আরআই