ত্রিপুরার দক্ষিণ জেলার বিলোনিয়া মহকুমার এক অখ্যাত গ্রাম বড়পাথারি। এ গ্রামেরই যুবক গোপাল দাস(৩৪) পেশায় গাড়িচালক।
বেশ কিছুদিন ভালোভাবে কাটার পর তার মালিক বদল হয়। এরপর টানা ছয় মাস তাকে কোনো বেতন দেওয়া হয়নি। উপরন্তু তার ওপর চলতে থাকে অত্যাচার-নির্যাতন। গত সপ্তাহে তার মালিক তাকে ঘর থেকে বের করে দিলে তিনি একটি গ্যারেজে আশ্রয় নেন। এক পর্যায়ে তাকে মেরে ফেলারও চেষ্টা করা হয়। তিনি কোনোক্রমে তার স্ত্রীকে ফোন করে তার এই বিপদের কথা জানান।
গোপালের স্ত্রী বিলোনিয়ার বিজেপি কার্যকর্তা রণজিৎ সরকার'র সঙ্গে দেখা করে গোটা ঘটনা খুলে বলেন। রণজিৎ এরপর রাসেল সিনহা নামে বিজেপির এক যুবক সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানান।
রাসেল সৌদি আরবে গোপালের সঙ্গে কথা বলেন। রাসেল তাকে প্রাধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী'র সাহায্য প্রার্থনা করে একটি ভিডিও কোনোভাবে পাঠাতে বলেন। রাসেলের কথামতো গত ৩১ আগস্ট গোপাল হোয়টসআপে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করার আর্জি জানিয়ে একটি ভিডিও পাঠান। রাসেল সেই ভিডিওটি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ'কে টুইটারের মাধ্যমে পাঠান।
সুষমা স্বরাজ এই ভিডিও দেখে রাসেলকে আশ্বস্ত করেন, যে কোনো মূল্যে গোপালকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
এরপর ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রকের আধিকারিকরা গোপালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পাশাপাশি সৌদি আরবে ভারতীয় দূতাবাসকে নির্দেশ দেন গোপালকে দেশে ফেরত আনার বন্দোবস্ত করতে। এরপর মাত্র ৪ দিনের মধ্যেই গোপালের ভারতে ফিরে আসার বন্দোবস্ত হয়ে যায়।
অবশেষে বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতের প্লেনে গোপাল দাস আগরতলায় ফিরে আসেন। তাকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন স্ত্রী ববিতা দাস, ত্রিপুরা প্রদেশ বি জে পি'র সভাপতি বিপ্লব কুমার দেব, দলের ত্রিপুরা রাজ্যের অবজারভার সুনীল দেওধর, প্রদেশ কমিটির সম্পাদিকা প্রতিমা দাস ও রাসেল সিনহা।
বিমানবন্দরের গেট থেকে বের হতেই সুনীল দেওধর গোপালকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন। গোপাল এসময় রাসেল সিনহাকে বুকে জড়িয়ে ধরেন। বিমানবন্দরে উপস্থিত সংবাদ মাধ্যমকর্মীদের কাছে তিনি তার ওপর অমানুষিক নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন। তাকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করায় তিনি ভারত সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৭
এসসিএন/জেএম