ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

মোসাম্বি চাষে সফল ত্রিপুরার গৃহবধূ মল্লিকা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৯
মোসাম্বি চাষে সফল ত্রিপুরার গৃহবধূ মল্লিকা

আগরতলা (ত্রিপুরা): কোনো ধরনের সরকারি আর্থিক সাহায্য ও পরামর্শ ছাড়াই নিজের চেষ্টায় মোসাম্বি লেবু চাষ করে সফল হয়েছেন ত্রিপুরার গ্রামীণ এলাকার মল্লিকা দাস নামে এক গৃহবধূ। 

ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা থেকে প্রায় ১২৭ কিলোমিটার দূরে ধলাই জেলার অন্তর্গত কচুছড়া গ্রামের গৃহবধূ মল্লিকা প্রায় ৯ বিঘা জমিতে মোসাম্বি বাগান করেছেন। এ বছর প্রথমবারের মত বাগানে ফলন এসেছে।

ইতোমধ্যে প্রায় ৬০০টি মোসাম্বি বিক্রি করেছেন বলে জানান বাংলানিউজকে।  

ভারতের চাহিদার বেশির ভাগ মোসাম্বি চাষ করা হয় দক্ষিণের মহারাষ্ট্র এবং অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যে। এ রাজ্যগুলো থেকে এটি দেশের বিভিন্ন রাজ্যের পাশাপাশি বিদেশেও রফতানি করা হয়। পশ্চিমবঙ্গেও সামান্য পরিমাণ মোসাম্বি চাষ করা হয়।  

ত্রিপুরা রাজ্যে মোসাম্বি চাষের ভাবনা কী করে এলো তার মনে? বাংলানিউজের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্ন করা হলে মল্লিকা বলেন, অন্য রাজ্য থেকে মোসাম্বি আসে রাজ্যে। এক একটি মোসাম্বির দাম ২০ থেকে ২৫ রুপি পর্যন্ত হয়ে থাকে। একদিন বাজারে এটি কেনার সময় তার মনে হলো যে, রাজ্যে মোসাম্বি চাষ করলে কেমন হয়। খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারেন, ত্রিপুরার মাটি মোসাম্বি চাষের জন্য উপযুক্ত। এর পর তিনি অন্য রাজ্য থেকে উন্নত মিষ্টি জাতের কলমের চারা গাছ আনান বিভিন্ন ধরনের ফল ও ফুলের চারা বিক্রেতার মাধ্যমে। নিজেদের টিলা জমিতে এ চারা গাছ লাগান।  

যেহেতু এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের এবং রাজ্যের জন্য নতুন ধরনের একটি ফলের চাষ। এজন্য কী তিনি সরকারের কাছ থেকে কোনো আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো ধরনের সরকারি আর্থিক সহায়তা তো দূরে থাক, এখন পর্যন্ত কৃষি ও কৃষক কল্যাণের কোনো সরকারি আধিকারিকই তার বাড়িতে আসেননি বাগান পরিদর্শনের জন্য। তবে এ বিষয়টি নিয়ে তার মধ্যে কোনো আক্ষেপ নেই। মোসাম্বি চাষ করে সফল গৃহবধূ মল্লিকা।  ছবি: বাংলানিউজতার এ বাগানে ৭০০টি মোসাম্বি গাছ রয়েছে। বাগান তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ রুপি। এ বছরই বাগানে প্রথমবারের মত ফলন এসেছে। প্রথম বছরে বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানান মল্লিকা। ইতোমধ্যে তিনি তার বাগানের উৎপাদিত ফল বিক্রি শুরু করেছেন। প্রাথমিকভাবে ৬০০টি মোসাম্বি বিক্রি করেছেন। বাগান থেকে পাইকার এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিটি মোসাম্বি পাঁচ রুপি দরে বিক্রি করছেন। বাগানে আরও অনেক মোসাম্বি রয়েছে।

দাম কী তুলনামূলক কম নিচ্ছেন না, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, প্রথম বছর তাই তুলনামূলক অনেক কম দামে সব বিক্রি করে দিচ্ছেন। কারণ তার বাগানের কথা পাইকারসহ সাধারণ মানুষের কাছে যেন ছড়িয়ে পড়ে এবং সাধারণ মানুষ যেন তার বাগানের মোসাম্বির স্বাদ নিতে পারেন সেজন্য।  

তিনি জানান, রাজ্যে যে ক’জন বিচ্ছিন্নভাবে মোসাম্বি চাষ করছেন, তাদের বাগানের মোসাম্বি টক হয়ে থাকে বলে মানুষের ধারণ। তাই তিনি প্রথম থেকে বিষয়টি মাথায় রেখে ভালো মানের চারা গাছ দিয়ে বাগান করেছেন।  

মোসাম্বি চাষ করার আগে তিনি বা তার পরিবার কী কাজ করতো? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, তাদের জমি-জমা রয়েছে। এ জমিতে ধানসহ অন্য ফসল চাষ করা হয়ে থাকে।

মল্লিকা আশাবাদী আগামী বছরগুরোতে আরও বেশি ফলন হবে। আকারও অন্য রাজ্যের মোসাম্বির মত বড় এবং সুস্বাদু হবে। এ এলাকায় আর কোনো মোসাম্বির বাগান নেই, তবে তার বাগান দেখে এখন তার কাছ থেকে এটি চাষের বিষয়ে নানা তথ্য জানছেন। তাই তিনি ধারণা করছেন, আগামী বছরগুলোতে হয়তো এ এলাকায় আরও কিছু মুসাম্বি বাগান হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৯
এসসিএন/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।