ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৫ কার্তিক ১৪৩১, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

নব্বইয়ে এসে আধার কার্ড পেলেন নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫০ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২৩
নব্বইয়ে এসে আধার কার্ড পেলেন নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন

কলকাতা: বাঙালি নোবেলজয়ী ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অমর্ত্য সেনকে নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করল দেশটির ডাক বিভাগ। খ্যাতনামা প্রবীণ এই মানুষটির আধার কার্ড (ভারতের অন্যতম জাতীয় পরিচয় পত্র) কিভাবে তৈরি করা হয়েছে এবং তা তৈরিতে ডাক বিভাগের কী ভূমিকা ছিল তা নিয়েই এই তথ্যচিত্র।

পাসপোর্টের পরই জাতীয় পরিচয় পত্র হিসেবে ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পূর্ণ নথি আধার কার্ড। নোবেলজয়ী এই মানুষটির এতদিন কোনও আধার কার্ড ছিল না। সেটি যাতে তৈরি করে দেওয়া হয়, তারজন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নব্বই ছুঁয়ে ফেলা এই অর্থনীতিবিদ। তাঁর এই আবেদনের কথা জানানো হয় ডাক বিভাগকে। সঙ্গে সঙ্গে উদ্যোগী হয় তারা। আধার কার্ড তৈরির যাবতীয় প্রক্রিয়া নেওয়া হয়৷ প্রবীণ ও সম্মানীয় এই মানুষটির হয়রানির দিকটি বিবেচনা করেই অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের প্রতীচী বাড়িতেই ডাক বিভাগের একটি ইউনিট নিয়ে পৌঁছে যায়। ছবি তোলা থেকে, আঙুলের ছাপ নেওয়া অর্থাৎ বায়োমেট্রিক সব কাজটাই সারা হয় প্রতীচীর অন্দরে। পুরো প্রক্রিয়াটি ক্যামেরাবন্দি করে রাখে ডাক বিভাগ। সেই ফুটেজ দিয়েই তৈরি করা হয়েছে একটি তথ্যচিত্র। সেই তথ্যচিত্রই বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) পোস্ট করা হয়েছে ডাক বিভাগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে।

সম্প্রতি, অমর্ত্য সেন ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে একের পর এক ঘটনা সামনে এসেছে। অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতীর অতিরিক্ত জমি দখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছিল। শুধু তাই নয়, অমর্ত্য সেনের নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। স্বাভাবিকভাবেই অমর্ত্য সেনের মতো একজন প্রথিতযশার পক্ষে এই ঘটনা যথেষ্ট অসম্মানজনক বলেই মনে করে ওয়াকিবহাল মহল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকেও হস্তক্ষেপ করতে হয় বিষয়টিতে। এরপরেই অমর্ত্য সেনের বাবা প্রয়াত আশুতোষ সেনের উইল অনুযায়ী সম্পূর্ণ জমি তার পুত্র অমর্ত্য সেনের নামেই রেকর্ড করে দেয় রাজ্য ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর। এরই মধ্যে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি শান্তিনিকেতন ছেড়ে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন।

এরকম এক ব্যক্তি অমর্ত্যের আধার কার্ড তৈরি করতে পেরে নিজেদের গর্বিত বলে মনে করছেন বীরভূম জেলা ডাক বিভাগের সুপারিনটেনডেন্ট সুব্রত দত্ত।

তিনি বলেন, আমাদের কাছে এটা গৌরবের। বলাই বাহুল্য তিনি অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি৷ আমরা ওঁর বাড়িতেই সমস্ত পরিকাঠামো নিয়ে গিয়েছিলাম। ডাক বিভাগের স্থানীয় সমস্ত কর্মী ও কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ওঁর আধার কার্ড তৈরি করা হয়েছে।

একটি পোস্ট কার্ডে নেওয়া হয় তাঁর স্বাক্ষর। সেখানে বাংলায় নিজের নাম লেখেন অমর্ত্য সেন। একদিকে, যখন অমর্ত্যকে বেনজির আক্রমণ করে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালিত বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, অন্যদিকে, সেই কেন্দ্রেরই অধীনে থাকা ভারতীয় ডাক বিভাগ যেভাবে তাঁকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাল, তা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০২৩
ভিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।