কলকাতা: আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গসহ গোটা ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকর হবে বলে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) তা নিয়ে মুখ খুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার রাজ্যের কোচবিহার জেলার সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, এনআরসি হবে না বলে লড়াই করেছে কারা। আমরাই। বন্ধুরা আপনারা তো ইতোমধ্যেই নাগরিক। নতুন করে ক্যা ক্যা করে চিৎকার করছে। এটা ফ্যা ফ্যা করে ভোটের রাজনীতি করার জন্য। আপনারা সবাই নাগরিক। আপনাদের সবাইকে নাগরিক হিসেবে আমরা স্বীকৃতি দিয়েছি। প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী সিএএ কে ব্যঙ্গ করে ক্যা ক্যা বলে থাকেন।
এরপর ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) উদ্দেশে মমতা বলেছেন, বিএসএফের অত্যাচারে মানুষ অত্যাচারিত। বিএসএফ সিদ্ধান্ত, সীমান্তে আলাদা আইডেন্টিটি কার্ড দিতে চায়। মনে রাখবেন বিএসএফ বর্ডার এরিয়ার ভেতরে ঢুকে আলাদা করে আইডেন্টিটি কার্ড দিতে চাইছে। নেবেন না। বলবেন আমার আধার কার্ড আছে, রেশন কার্ড আছে। আমি তোমার দুই নম্বরি কার্ড নেব না। মনে রাখবেন, ওই কার্ড নিলে এনআরসিতে (জাতীয় নাগরিক পঞ্জি) পড়ে যাবেন। আপনাদের সব বাদ দিয়ে দেবে।
মুখ্যমন্ত্রী বিএসএফের উদ্দেশে আরও সুর চড়িয়ে বলেছেন, যখন-তখন, যাকে-তাকে গুলি করে মেরে দিচ্ছে, যেন জমিদারি পেয়ে গেছে। গ্রামে-গঞ্জে ঢুকে কোনো অত্যাচার করলে সঙ্গে সঙ্গে থানায় এফআইআর করবেন। এটা মাথায় রাখবেন। ওরা ভয় দেখিয়ে ভোট করতে চায়। মনে রাখবেন, বিপদে পড়লে আমি আছি। বাঘের বাচ্চার মতো আছি। তাই ভয় পাবেন না।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) রাজ্যটির দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কুলপি এলাকার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের সভায় গিয়েছিলেন শান্তনু। সেখানেই তিনি বলেন, যারা ১৯৭১ সালের পরে ভারতে এসেছেন, তাদের নাগরিকত্ব দরকার। কারণ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত করতে হবে। বিজেপি সরকার সিএএ চালু করলে আর কোনও সরকারের ক্ষমতা নেই আমাদের যখন খুশি ঘাড় ধাক্কা দিয়ে দেশ থেকে বার করে দেয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার সিএএ চালু করবে।
মূলত, ভারতের মধ্যে তৃণমূল নেত্রী বরাবরই সিএএ প্রসঙ্গে দাবি করে আসছেন, যে নাগরিকরা ভোট দেন, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড আছে, তারাই এ দেশের নাগরিক। শান্তনুর এ মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের নারী মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেছেন, প্রতিবার নির্বাচন এলেই যদি আপনি মনে করেন সিএএ তুলে আলোড়ন তৈরি করবেন, অরাজকতা তৈরি করবেন, সেটা আর হবে না। বাংলার মানুষ এসব আর বিশ্বাস করে না।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২৪
ভিএস/আরবি