পহেলগাঁও-কাণ্ডে বাধা সংঘর্ষ থামলেও চাপা উত্তেজনা চলছেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। হামলা-পাল্টা হামলার অবসান ঘটে উত্তেজনা বইছে এখন চিরবৈরী দুই দেশের কূটনৈতিক অঙ্গনে।
ভারত সরকার আবারও নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের এক কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করেছে। ‘ভারতে কূটনৈতিক মর্যাদার পরিপন্থি কাজকর্মে’ যুক্ত থাকার অভিযোগে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাকে। সরকারিভাবে ওই কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করা হয়নি। তবে সূত্রমতে বহিষ্কৃত কর্মকর্তা হাইকমিশনের একটি গোয়েন্দা শাখার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
এ নিয়ে গত আটদিনের মধ্যে দ্বিতীয়বার পাকিস্তানি কূটনৈতিক বহিষ্কারের ঘটনা।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুধবার (২১ মে) এক বিবৃতিতে পাকিস্তান হাইকমিশনের ওই কর্মকর্তাকে বহিষ্কারের তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বহিষ্কার হওয়া পাকিস্তানি কূটনীতিক আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক রীতিনীতি বহির্ভূত কাজে যুক্ত ছিলেন। যা ১৯৬১ সালের ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী অগ্রহণযোগ্য। কূটনীতিকরা যেন বিশেষ সুবিধার অপব্যবহার না করেন, পাকিস্তানকে সে সতর্কবার্তা দিয়েছে নয়াদিল্লি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই ওই কর্মকর্তার গতিবিধির ওপর নজর রাখছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। তিনি ভারতের অভ্যন্তরে সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহের চেষ্টায় যুক্ত ছিলেন এবং ভারতীয় নাগরিকদের সঙ্গে সন্দেহজনক যোগাযোগ স্থাপন করেছিলেন বলে তথ্য মেলে। এসব প্রমাণের ভিত্তিতেই তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে দেশত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এমন বহিষ্কারের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি ইসলামাবাদ। তবে বিশ্লেষকদের ধারণা, এ ঘটনাটি দুই দেশের মধ্যে চলমান রাজনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনার আগুনে ঘি ঢালবে নিশ্চিত।
আটদিন আগে একই ধরনের অভিযোগে পাকিস্তানের আরেকজন কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছিল ভারত।
চলতি মাসের শুরুতে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালনা করে ভারত। পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে হামলা চালায় ভারতীয় সামরিক বাহিনী। পাল্টা জবাবে ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’ অভিযান চালায় পাকিস্তান। ভারতের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী। দুই দেশের সামরিক বাহিনীর এমন হামলা-পাল্টা হামলা চারদিন ধরে চলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়।
এসএএইচ