কলকাতা: কলকাতার গার্ডেন রিচ এলাকায় নির্মাণাধীন বহুতল ভবন ভেঙে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ জনে। শুক্রবার (২২ মার্চ) দুর্ঘটনার চারদিনের মাথায় ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও এক মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
গত সোমবার (১৮ মার্চ) রাতে কলকাতার মুসলিম অধ্যুষিত গার্ডেন রিচ এলাকায় নির্মাণাধীন বহুতল ভবন একটি টালির বাড়ির ওপর ভেড়ে পড়ে। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছিল। দুর্ঘটনার চারদিনের মাথায় আরও এক মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত গার্ডেন রিচ কাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ জনে।
নতুন করে উদ্ধার হওয়া মৃত ব্যক্তি ওই এলাকায় ‘শেরু চাচা’ নামে পরিচিত ছিলেন। স্থানীয়দের মতে, নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ করছিলেন তিনি। বহুতল ভেঙে পড়ার পরেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য মতে, গার্ডেন রিচ থানার অন্তর্গত ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ চলছিল। সোমবার রাতে বিকট শব্দে ভবনটি পাশের একটি টালির বাড়ির ওপর ভেঙে পড়ে। তাতে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে একাধিক মুসলিম পরিবারের।
রমজানের মধ্যে এতগুলো প্রাণ গেল এর দায় কার? অবিলম্বে মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে বহিষ্কার করার দাবি তুলেছে বাম, কংগ্রেস ও বিজেপি। সোচ্চার হয়েছেন বর্তমান ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। ঘটনা নিয়ে ক্ষুব্ধ সাবেক মেয়র শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বলেছেন, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী অন্যায় মেনে নিয়েছেন। সেখানে কলকাতার মেয়র কখনই দায় এড়াতে পারেন না। পাশাপাশি তিনি ওই রাজ্যের জয়ী বিধায়ক হয়ে বর্তমানে মেয়রের সঙ্গে রাজ্যের নগরন্নোয়ন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে ফিরাদ কখনই দায় এড়াতে পারেন না।
যদিও মেয়র বলেছেন, কখনই এর দায় তার বা সেই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের নয়। যে কারণে নিচু তলার তিন ইঞ্জিনিয়ারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রোমোটারকে। অপরদিকে স্থানীয়রা বলছেন, সবাই সবটা জানতো এমনকি পুলিশও। প্রতিবাদ করলে দুষ্কৃতরা গুলি করে মেরে দেওয়ার হুমকি দিত। ফলে সব জেনেও চুপ থাকতে হতো স্থানীয়দের।
এত সরু গলিতে অবৈধ ভবন নির্মাণের কাজ চলছিল, যেখানে তিন চাকার গাড়িও প্রবেশ করতে পারবে না। ফলে রাবিশের ওই স্তূপ সরিয়ে উদ্ধার কাজ চালাতে যথেষ্ট সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা টিমকে। যে কারণে ঘটনার চারদিন পরও শুক্রবার নতুন করে মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে মৃতদের পরিবারকে ৫ লাখ ও আহতদের ২ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন মেয়র ফিরাদ হাকিম।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২৪
ভিএস/আরবি