ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

ঈদের দিনও সিএএ-এনআরসি নিয়ে হুংকার ছাড়লেন মমতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২৪
ঈদের দিনও সিএএ-এনআরসি নিয়ে হুংকার ছাড়লেন মমতা

কলকাতা: বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) ভারতজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। আগামী ১৯ এপ্রিল দেশটিতে হতে যাচ্ছে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট।

দেশটির বিভিন্ন রাজ্যের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার আসনেও ভোটগ্রহণ হবে। ফলে উৎসবের মধ্যেই ভোট উত্তেজনা রয়েছে সব সম্প্রদায়ের মধ্যে। আর সেই সন্ধিক্ষণে ঈদকে সামনে রেখে সব রাজনৈতিক দল প্রচারণায় নেমেছে।

কলকাতার রেড রোডে ঈদের শুভেচ্ছা বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শহরের নিরিখে সবচেয়ে বড় অস্থায়ী ঈদগাহ হয়ে ওঠে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম সংলগ্ন রেড রোড। প্রতি বছরের মত এবারও রেড রোডে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে প্রতি বছর ভোট থাকে না। এবার ভোট। তাই ঈদের শুভেচ্ছা দেওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক বার্তাও দিলেন তৃণমূল নেত্রী।

মমতা বলেছেন, বাংলার মানুষ সম্প্রীতি জানে। সব সম্প্রদায়কে নিয়ে একসঙ্গে শান্তিতে বসবাস করছে। কিন্তু একদল বাইরে থেকে এসে শান্ত বাংলাকে অশান্ত করে তুলছে। মনে রাখবেন, আমি থাকতে আপনাদের ওপর কেউ অত্যাচার কেউ করতে পারবে না।

এরপরই মমতা বলেছেন, আমি জানি সবার মধ্যে সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে একটা ভীতি কাজ করছে। মুসলিম সম্প্রদায় আতঙ্কে আছে। কিন্তু আমি থাকতে আপনার নিশ্চিন্তে থাকুন। বাংলায় এনআরসি হতে দেব না। সিএএ হলো মাছের মাথা আর এনআরসি হলো লেজ। আর মধ্যিখানে পেটিটা হচ্ছে ইউনিফর্ম সিভিল কোড অর্থাৎ অভিন্ন দেওয়ান বিধি। আমরা এটা মানবো না।

তিনি বলেন, ওরা সিএএর মাধ্যমে এনআরসি আনবে। আমরা থাকতে তা আনতে দেব না। পশ্চিমবঙ্গে যারা বাস করে, তারা সবাই ভোট দেয়। তাহলে তারা কীভাবে শরণার্থী হল? 

বিজেপির উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, আমার সঙ্গে লড়তে এলে জেনে রেখো তুমি আমায় জেলে পুরে দিতে পারো, তুমি আমার গলা কেটে দিতে পারো, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি আমি যদি কারও খারাপ না চাই, তাহলে আমার কেউ খারাপ করতে পারবে না।

মমতা আরও বলেছেন, যদিও এখানে রাজনীতি করা উচিত নয়। কিন্তু মনে রাখবেন এটা নির্বাচনের সময়। আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। মনে রাখবেন, রাজ্যে লড়াইটা আমাদের সঙ্গে বিজেপির। আপনারা দেখে নেবেন, বাংলায় একটি ভোটও যেন সিপিএম-কংগ্রেস ও বিজেপি না পায়। তৃণমূল কংগ্রেস থাকলে বাংলায় শান্তি থাকবে।

মমতা বিশ্বাসঘাতক: অধীর রঞ্জন
এদিকে বিজেপিবিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোট ছাড়ায় মমতাকে বিশ্বাসঘাতক বলেছেন কংগ্রেসের রাজ্য শাখার সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। কংগ্রেস নেতা এদিন দাবি করেন, বিজেপিবিরোধী জোটের সঙ্গে বেইমানি করে নরেন্দ্র মোদীর হাত শক্ত করেছে মমতা।

কংগ্রেস নেতার বক্তব্য, কেন্দ্রীয় এজেন্সির (তদন্তকারী সংস্থা) অপব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেই ইন্ডিয়া জোট তৈরি করা হয়েছিল। সেই জোট থেকে বেরিয়ে এসে প্রথমেই আপনি (মমতা) তাকে দুর্বল করে মোদীর হাত শক্ত করেছেন। সবথেকে বড় বিশ্বাসঘাতক আপনি।  

পাশাপাশি সিএএ এবং এনআরসি ইস্যুতে প্রত্যক্ষভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও দোষারোপ করেছেন অধীর।

অধীর বলেছেন, আমরা বহু আগে বারবারে বলেছিলাম, সিএএ-এনআরসি ইস্যু ঘুমিয়ে আছে। চলে যায়নি। লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদী-দিদির হাত ধরে তা আলোচিত হবে বাংলায়।

এই প্রসঙ্গ টেনে অধীর বলেছেন, আসলে মোদী দিদির সব সেটিং। এই ইস্যুর বিরোধিতা করে সংসদে যখন ভোট দেওয়া হচ্ছিল তখন তৃণমূলের সংসদ সদস্যরা চালাকি করে তা থেকে বিরত ছিলেন। তারা সেদিন চালাকি করে সংসদ বয়কট করেছিলেন। সেদিন কেনো তারা এর বিরুদ্ধে ভোট দিলেন না? আমরা সব বিরোধী দল তার বিরোধিতা করে ভোট দিয়েছিলাম। কিন্তু তৃণমূল পাশ কাটিয়ে বের হয়ে গেছে। অধীরের যুক্তি, এর থেকেই বোঝা যায় বিজেপি-তৃণমূল বড় সমঝোতা রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২৪
ভিএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।