দীপাবলি অর্থাৎ একাধিক দীপের সমাহারে যে আলোর সৃষ্টি হয় তাই দীপাবলি। একাধিক পার্বনের মিলিত উৎসবে একসাথে পালন হয় দীপাবলিতে।
অপরদিকে এই অমাবস্যায় দীপান্বিতা নক্ষত্র স্পষ্ট হলে অবাঙালি হিন্দুরা তাদের পুজোর মধ্যে দিয়ে নতুন বছর শুরু করে। ঠিক যেমনটা বাঙালির পয়লা বৈশাখ। এই দিন তারা লক্ষ্মী-গণেশ পুজো করেন। আবার উল্টোদিকে পৌরাণিক মহাকাব্য রামায়ন অনুযায়ী এই রাতেই শ্রীরাম তাঁর চোদ্দ বছর বনবাস শেষ করে এবং দুষ্টের দমন অর্থাৎ রাবনকে বধ করে অযোধ্যা ফেরেন। সম্পূর্ণ অযোধ্যাবাসী তাঁর ফেরার আনন্দে সমস্ত অযোধ্যা নগরীতে দীপ জ্বালায়। এই একাধিক উৎসব ও নতুন বছরের সমষ্টি, একসাথে পালন হয় দীপাবলির মাধ্যমে।
দীপাবলির রাতে বাড়ি বাড়ি জ্বলে ওঠে একাধিক প্রদীপ বা মোমবাতি। তার সাথে জ্বলে ওঠে রঙ-বেরঙের আতশবাজি। কোথাও কোথাও চলে আতশবাজির প্রদর্শনী। এই প্রদর্শনী দেখার জন্য সব ধর্মের মানুষ অঞ্চলে অঞ্চলে সামিল হন। বাড়ি বাড়ি চলে মিষ্টি বিতরণ। তবে এবারে আতশবাজির দিকে নজর থাকবে দিল্লির প্রশাসনের। কারণ আতশবাজি জ্বললে যে ধোঁয়া নির্গত হয় তার থেকে দূষণের মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যায়। তাই এবারই প্রথম দিল্লির হাইকোর্ট আতশবাজির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। যে কারণে দিল্লিতে এবারে আতশবাজি বিক্রি বন্ধ করেছে প্রশাসন। তবে নিষেধাজ্ঞা এ বছর শুধুমাত্র দিল্লিতেই বহাল আছে। আগামী বছর এই নিষেধাজ্ঞা হয়তো হতে পারে গোটা ভারতেই।
অপরদিকে কালীপুজো এবং দীপাবলিকে সামনে রেখে উৎসবে মেতে উঠছে গোটা কলকাতা। মন্দিরে মন্দিরে, বিভিন্ন মণ্ডপে এবং কিছু বাড়িতে কালী পুজোর চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে। কালীপুজো হয় রাতে। কলকাতার উল্লেখযোগ্য কালী মন্দিরগুলো হলো, ঠনঠনিয়া কালী মন্দির, অ্যান্টনি ফিরিঙ্গী প্রতিষ্ঠিত ফিরিঙ্গী কালী মন্দির, লেক কালী বাড়ি, ঢাকা কালী বাড়ি এবং দক্ষিণেশ্বর মন্দির।
কালীপুজো হয় স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বাড়িতেও। এই পুজোতে তিনি নিজেও সামিল হন। পুজোয় সমস্ত পশ্চিমবঙ্গবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি।
কালীপুজো উপলক্ষে আতশ বাজির রোশনাই দেখা যাবে কলকাতা সহ সারা পশ্চিমবঙ্গের আকাশে। তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে ৯০ ডেসিবলের বেশি শব্দ উৎপন্ন হয় এমন শব্দ বাজি এবং ডিজে বা অতিরিক্ত জোরে স্পিকার বাজানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবে সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে দীপাবলির উৎসবে মেতে আছেন পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা ভারতবাসী।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩২ ঘণ্টা, ১৯ অক্টোবর, ২০১৭
ভিএস/আরআই