শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) কলকাতার নন্দন-২, ৩ এবং নজরুল তীর্থ-২ প্রেক্ষাগৃহে শুরু হওয়া বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব চলবে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন অনুষ্ঠান শুরু হবে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এক ভাষায় একই সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী। মাঝে শুধু রাজনৈতিক কাঁটাতারের বিভাজন আমাদের আলাদা করে রেখেছে। কিন্তু আমাদের সংস্কৃতিকে কখনওই বিভাজন করা যাবে না। গত ১০ বছরে ইন্টারনেট আবার আমাদের এক জায়গায় এনে দিয়েছে। কোনো অশুভ শক্তি আমাদের আলাদা করতে পারবে না। এ বিভাজন কমাতে আমরা আগের থেকে অনেকটাই সক্ষম হয়েছি। তবে আরো কাজ করতে হবে আমাদের দুই দেশের।
দুই বাংলা একে অপরের কাছে জনপ্রিয় বোঝাতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, ইউরোপের কোনো সাংস্কৃতিক কাজ অনেকগুলো দেশ একসঙ্গে মিলে করে, তা বই বা সিনেমা হোক না কেন। আমরা বাঙালিরা তা পারি না। তবে সময় এসেছে বাঙালিকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু সব সময় বাঙালির কথা ভেবেছেন। গোটা পৃথিবীতে বাংলায় ভাষণ দিতেন। তার অবদানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ তৈরি হয়েছে। বাংলা ভাষা আজ শুধু আমাদের নয়। গোটা পৃথিবীর বাঙালির। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলা ভাষা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সম্মান পেয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনিও সারা পৃথিবীতে এখনও বাংলায় ভাষণ দেন। এটাই আমারে জন্য গর্ব।
তিনি বলেন, তথ্যমন্ত্রী হিসেবে আমার এটাই প্রথম বিদেশ সফর। আমি সব সময় চেয়েছি, কলকাতা দিয়ে সফর শুরু হোক। কারণ কলকাতা আমার কাছে এক নস্টালজিয়া স্থান। আমি ভাগ্যবান কলকাতা দিয়েই আমার সফর শুরু হয়েছে। আর তা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবের মধ্য দিয়ে। ১৯৫৭ বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের যাত্রা বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই শুরু হয়েছিল। এখানে পশ্চিমবঙ্গের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব আমাকে একটি প্রস্তাব দিয়েছেন যে শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দরে সরাসরি বাংলাদেশি বিমান ওঠা নামা করুক। আমি এই প্রস্তাব অবশ্যই মন্ত্রণালয়ে রাখবো। আমি ঘোষণা করছি, শুরু হোক দ্বিতীয়বারের জন্য বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব।
হাছান মাহমুদ ছাড়াও অনুষ্ঠানে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব, চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ, সদ্য ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস, অভিনেতা ফেরদৌস, অভিনেত্রী জয়া আহসান ও বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান এবং ফার্স্ট সেক্রেটারি (প্রেস) মোফাকখারুল ইকবালসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠান শেষে রিভা গাঙ্গুলি দাস এক প্রশ্নে বলেন, সম্ভবত এই মাসের শেষে আমি ঢাকায় দায়িত্ব নেবো। আমার মনে হয়ে এরকম অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মানুষে-মানুষে যত যোগাযোগ বাড়বে ততই দুই দেশ একে অপরকে আরও চিন্তে পারবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমার জানা মতে আগের থেকে ভারতীয় ভিসা পাওয়ার পদ্ধতিটা অনেক সহজ হয়েছে। ঢাকায় গিয়ে দেখবো, কীভাবে ভিসা পদ্ধতি আরও সহজ করা যায়।
পরিচালক গৌতম ঘোষ বলেন, অনেক হয়েছে পৃথকভাবে অনুষ্ঠান করা। এবার বাঙালির অনুষ্ঠান একসঙ্গে করার কথা ভাবা উচিত। তামিল, তেলেগু, মালায়লাম, কেরালা অর্থাৎ দক্ষিণ ভারত একসঙ্গে চলচ্চিত্রটা পরিচালনা করছে। আর তাতে লাভবানও হচ্ছে। আমাদের দুই বাংলার মেধা একস্থানে হলে সমগ্র বাঙালি জাতির উন্নতি হবে। এভাবে আমাদের ভাবতে হবে। বাঙালির অনুষ্ঠান একসঙ্গে পালন হোক।
পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, শুধু সাংস্কৃতিক আদান প্রদান করলেই হবে না। বাড়াতে হবে যোগাযোগ। বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ আছে কলকাতার। শিলিগুড়ির পথও এখন অনেক উন্নত। সেই নিয়ে দুই বাংলার নেত্রী একটা পরিকল্পনা করুক।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৯
ভিএস/এমআইএইচ/এসআই