নতুন বছরকে বরণ করতে কলকাতার রাজপথ থেকে অলিগলির পরিবেশ ছিল আনন্দমুখর। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বিভিন্ন ভাষাভাষির মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে বিভিন্ন এলাকায় মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করে।
এসব অঞ্চলে শোভাযাত্রায় রংবেরঙের মুখোশ, প্যাঁচা, রাস্তায় দেওয়া আলপনা সবই করেছে কলকাতায় কলাবিভাগে অধ্যয়নরত বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া তারা নিজেরাও এই মঙ্গল শোভাযাত্রায় সঙ্গীত ও নৃত্যের মধ্য দিয়ে অংশ নেয়।
কলকাতার অন্যতম মঙ্গল শোভাযাত্রায় বের হয় যাদবপুর অঞ্চলে। মূল আয়োজক যাদবপুর বিশ্ববিধ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এবার তাদের শোভাযাত্রায় চিন্তন ছিল ‘সম্প্রীতি’। তাদের প্রধান ব্যানারের ক্যাপশন ছিল কবীর সুমনের গানের একটি লাইন ‘ধর্ম বলতে মানুষ বুঝবে, মানুষ শুধু’।
বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী ছাড়াও শোভাযাত্রায় বিশিষ্ট সঙ্গীত প্রতুল মুখোপাধ্যায়, অধ্যাপক পবিত্র সরকারসহ কলকাতার কবি, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে প্রতুল মুখোপাধ্যায় বলেন, দু’টি পহেলা বৈশাখ হলে ক্ষতি কি! আমরা পরপর দু’দিন উদযাপন করছি। একদিন বাংলাদেশ আজ পশ্চিমবাংলায়। তবে বাংলাদেশের ক্যালেন্ডার অনেক আধুনিক। পশ্চিমবাংলার মতো ৩২ বা ৩৩ এ এখন আর তাদের মাস শেষ হয় না। যেদিন একই ক্যালেন্ডার এ রাজ্যে ব্যবহার হবে সেদিন একদিনেই উদযাপন হবে পহেলা বৈশাখ। এমনই এক নববর্ষে ‘আমি বাংলার গান গাই’ গানটা লিখি। আজ এই গানটারও জন্মদিন।
অধ্যাপক পবিত্র সরকার বলেন, পহেলা বৈশাখের ইতিহাস এর মধ্যেই আছে দুই ধর্মের মিলনের স্মৃতি। সম্রাট আকবর বাংলা সন তৈরি করেছিলেন এবং পহেলা বৈশাখকে বছরের প্রথম দিন হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। সেই ঐতিহ্য বহন করছি আমরা। কাজেই এটা একটা অসাম্প্রদায়িকতার ঐতিহ্য। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে নবর্ষের প্রথমদিনই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব হয়ে উঠুক এটাই আমাদের কাম্য।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৯
ভিএস/এএ