মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হওয়ার পর তখনকার রাজনৈতিক নেতৃত্ব দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন এই অরবিন্দ ভবন থেকে। সেই স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধায় কলকাতায় মুজিবনগর দিবসের অনুষ্ঠান হচ্ছিলো ভবনটিতে।
যোগাযোগ করলে উপ-দূতাবাসের প্রধান তৌফিক হাসান বাংলানিউজকে বলেন, মুজিবনগর দিবসের অনুষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে আমরা অরবিন্দ ভবনে পালন করে আসছি। নিয়ম মেনে এবারও আমরা অনুষ্ঠান করার জন্য ভবনে অফিসিয়াল চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের কাছে খবর এসে পৌঁছায়, ‘কেউ কেউ’ নাকি চাইছে না অরবিন্দ ভবনে মুজিবনগর দিবসের অনুষ্ঠান হোক। এমনও শুনেছি ‘কেউ কেউ’ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের কাছে চিঠি দিয়ে আবেদন করেছেন, অনুষ্ঠানটি না হওয়ার জন্য। যেহেতু আমরা লিখিতভাবে অনুষ্ঠান করার কোনো নিশ্চয়তা পাইনি, সেজন্য আমরা এবার উপ-দূতাবাস প্রাঙ্গণেই অনুষ্ঠানটি করেছি।
এক প্রশ্নের জবাবে উপ-দূতাবাস প্রধান বলেন, নিয়ম অনুযায়ী আমাদের যোগাযোগ করতে হয় ভবনের অফিস সেক্রেটারির সঙ্গে। আমরাও সঠিক জানি না, আসলে কারা বিরোধিতা করছেন। সম্ভবত অরবিন্দ ভবনের ট্রাস্টের ‘কেউ কেউ’ বিরোধিতা করছেন।
তৌফিক হাসান বলেন, এখনতো ভারতে নির্বাচন চলছে। নির্বাচনের পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের যোগাযোগ করবো। তখনই বিষয়টা স্পষ্ট হবে।
একাত্তরের স্মৃতি জড়ানো বলে কয়েক বছর আগে অরবিন্দ ভবনের একটি অংশে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর বানানোর পরিকল্পনা করা হয়। তবে ভবনটিতে কোনো ঘর দেওয়া যাবে না বলে তখনই ট্রাস্টের তরফ থেকে আনঅফিসিয়ালি জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ভবন ছাড়া বাইরের জমির কিছুটা অংশ দিলে সেখানে বাংলাদেশ সরকার নিজ ব্যয়ে জাদুঘর বানাবে জানিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করে উপ-দূতাবাস। এ প্রস্তাবে রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ও সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছিলেন।
এদিকে বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণের দিন তথা মুজিবনগর দিবস যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালিত হয়েছে কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস প্রাঙ্গণে। সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উপ-দুতাবাস প্রধান তৌফিক হাসান। এরপর বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন উপ-দূতাবাস মসজিদের ইমাম।
পরে সান্ধ্যকালীন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যাপক বুলবুল ওসমান, সাবেক সাংবাদিক সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত এবং ভারতের সাবেক সংসদ সদস্য সরদার আমজাদ আলী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তৌফিক হাসান।
বক্তৃতা শেষে কলকাতায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অতিথিদের মুগ্ধ করেন। পরে আমন্ত্রিতরা নৈশভোজে অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৯
ভিএস/এইচএ/