তৃণমূল দলের প্রার্থী শঙ্কর সিং গত বিধানসভায় (মুখ্যমন্ত্রী পদের ভোট) বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হিসেবে রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম বিধানসভা থেকে জিতলেও এবার হাত (কংগ্রেস) ছেড়ে জোড়াফুলের পতাকা তুলে নিয়েছেন। নদিয়া, বিশেষ করে রানাঘাটে শঙ্কর সিংয়ের প্রভাব আজও প্রশ্নাতীত।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে চাকদহের জনসভায় ঝাঁপি খুললেন শঙ্কর সিং। অতীতে রাজনীতির টানাপোড়েনের নানা কাহিনী তার কথায় বারবার উঠে আসে। ফুটে উঠেছিল মমতার প্রতি সম্ভ্রমও। নির্বাচনী প্রচারণার এ জনসভায় মমতাকে বাংলার সেরা রাজনৈতিক মুখ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
শঙ্কর বলেন, ২০০১ সালে প্রণব দা (সাবেক রাষ্ট্রপতি) কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি। রাত ২টার দিকে আমিই প্রণব দাকে নিয়ে কালীঘাটে মমতার বাড়িতে যাই কংগ্রেস-তৃণমূলের জোট করতে। এরপরও নানা সময়ে মমতা ও আমার মধ্যে রাজনৈতিক ভালোবাসা ও তিক্ততা তৈরি হয়েছে।
এছাড়া শঙ্কর সিং মনে করেন, জ্যোতিবাবু ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পর মমতা ছাড়া এ রাজ্যে কোনো বিকল্প মুখই নেই। সোমেন মিত্র (রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি), দিলীপ ঘোষ (রাজ্য বিজেপি সভাপতি) ও সিপিআইএমের রাজ্য কমিটির সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্ররা কখনও মমতার বিকল্প হতে পারেন না।
তার যুক্তি, মমতা তার সময়ে নারী উন্নয়েনের জন্য চালু করেছেন ‘কন্যাশ্রী’ ‘সবুজসাথী’ এবং স্বাস্থ্যসাথীর মতো গুচ্ছ গুচ্ছ সামাজিক প্রকল্প। বাম আমলে সাইকেল ও স্কুলের পোশাকের সুযোগ থাকলেও, সবাইকে দেওয়া হতো না।
জনসভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে শঙ্কর বলেন, যা-ই হোক করে করে ২০২১ সালটা গেলে বাঁচি। কেন, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন? শঙ্করের জবাব, না না, এখনও সেরকম কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। তারপরই তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, এখন রাজনীতিতে প্রতি মুহূর্তে যেরকম স্ক্রিপ্ট চেঞ্জ হচ্ছে, তাতে আমার মতো পুরানোরা তাল মেলাতে হিমশিম খাচ্ছি।
আনুষ্ঠানিকভাবে কংগ্রেস ছাড়লেও শঙ্কর এখনও কংগ্রেসের পুরানো সঙ্গী দীপা, অধীর, অভিজিৎদের পাশাপাশি মৌসুম বেনজির নুরকে নিয়ে সমান আগ্রহী। অবশ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে মজাদার নানা রাজনৈতিক ঘটনার কথাও স্মরণ করলেন।
কিন্তু যা-ই হোক করে করে ২০২১ সালটা গেলে বাঁচি মন্তব্যের কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি তার কাছ থেকে। যদিও ২০২১ সালে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী পদে বিধানসভা নির্বাচন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৯
বিএস/টিএ