তবুও সঙ্কট যেনো বেড়ে-ই চলেছে। আর এর জেরেই টানা দুই মাস ধরে জামশেদপুরে টাটা মোটরসের উৎপাদন মাঝে মধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
শুধু টাটা মোটরস নয়, গাড়ির সঙ্গে যুক্ত অসংখ্য অনুসারী শিল্পও বন্ধ হয়েছে এই দুই মাসে। টাটা মোটরসের পর এবার হরিয়ানা রাজ্যের গুরুগ্রাম ও উড়িষ্যার মানেসরে মারুতির সর্ববৃহৎ কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হওয়ার পথে।
আগামী সপ্তাহে দু’দিন মারুতির ওই দুই ইউনিট বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছে সংস্থার তরফে। কোম্পানির তরফে কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, বিক্রি নেই, অর্ডার নেই, তাই উৎপাদন এক ধাক্কায় অনেকটাই কমেছে।
অথচ মন্ত্রী, সচিব থেকে কেন্দ্রীয় কর্তাদের ব্যবহারের জন্য অফিসিয়াল গাড়ির সিংহভাগই মারুতি থেকেই নেওয়া হয়। এই অবস্থায় স্বয়ং অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন যেখানে বলছেন, আবার নতুন করে গাড়ি কেনা হবে। তখনই উৎপাদন ইউনিট বন্ধ রাখার বিষয় যথেষ্ট অস্বস্তিকর কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে।
প্রসঙ্গত, অর্থমন্ত্রী কয়েকদিন আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সরকার পুরনো গাড়ি বদলে ফেলে আবার নতুন গাড়ির অর্ডার দেওয়া হবে মারুতিকে।
এছাড়া হুন্ডাই ও হন্ডা কোম্পানিও ঘোষণা করেছে যেভাবে অর্ডার এবং বিক্রি কমছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে একই পথ বেছে হবে। অটোমোবাইল সেক্টরের সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে গ্রামীণ অর্থনীতিতে।
কারণ শহরে ফোর হুইলার বিক্রিকেই উন্নত বাণিজ্য হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু গ্রামে সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে ট্রাক্টর ও টু হুইলারের। গ্রামীণ অর্থনীতি কতটা কোণঠাসা হয়েছে তার প্রমাণ টু হুইলার প্রস্তুতকারক প্রতিটি সংস্থার গ্রামীণ এলাকায় বিক্রি হু হু করে কমছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে হুন্ডাই ও হোন্ডা কোম্পানি একথা বলেছেন।
তবে অটোমোবাইল সেক্টরের বাজার খারাপ শুধুই যে তিনমাসের আর্থিক মন্দার কারণ, তা কিন্তু নয়। এর সঙ্গে রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রতিক বাজেট।
তাতে দেখা যাচ্ছে, সরকার ইলেকট্রিক বা ব্যাটারি চালিত গাড়ি ও টু হুইলারের উপর বেশি জোর দিচ্ছে। আর তাই একটা বড় অংশের ভারতবাসী অপেক্ষা করছে ইলেকট্রিক কারের পুরোদমে বাজারে আসার অপেক্ষায়। তাই পেট্রল ডিজেল গাড়ির বিক্রি অনেকটাই থমকে গিয়েছে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৯
ভিএস/এমএ