জামশেদপুরে টাটা মোটরসের উৎপাদন মাঝে মধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। আর মারুতি সুজুকির দুই ইউনিট উৎপাদন বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছিল।
ক্রমাগত অর্থনৈতিক মন্দার কারণে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে ভারতের। ফলে লোকসান কমাতে পর্যায়ক্রমে এক এক করে উৎপাদন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে অটোমোবাইল সংস্থাগুলো। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উৎপাদন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল অশোক লেল্যান্ড। স্বাভাবিক আর্থিক মন্দার জেরে উৎপাদন বন্ধ হলে কর্মীদের রুজি-রোজগারে প্রভাব পড়বে। আর হচ্ছেও তাই। এর ফলে ৩ হাজার অস্থায়ী শ্রমিকসহ ৫ হাজার স্থায়ী শ্রমিকের রোজগারে সরাসরি প্রভাব পড়েছে।
জানা গেছে, চলতি সপ্তাহে অশোক লেল্যান্ডের বিক্রি গতবারের তুলনায় ৭০ শতাংশ কমেছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে এ বছরের আগস্ট মাসে ট্রাক ও বাসের বিক্রি কমেছিল ৬৩ শতাংশ। এছাড়া ওই মাসে সংস্থাটির ছোট গাড়ির বিক্রি কমছে ১২ শতাংশ। ফলে উৎপাদন বন্ধ রাখার কথা ঘোষোণা দিতে বাধ্য হয়েছে ট্রাক উৎপাদনকারী সংস্থাটি।
গত কয়েক মাস ধরে ভারতে গাড়ির বাজার মন্দার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। প্রায় প্রত্যেক অটোমোবাইল সংস্থাই কর্মী ছাঁটাইয়ের রাস্তা বেছে নিয়েছে। এর জেরে শুধুমাত্র চেন্নাই রাজ্যে গত ৩ মাসে সব অটোমোবাইল মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজার স্থায়ী কর্মী ছাঁটাই হয়েছেন। এর সঙ্গে সংস্থাগুলো হুটহাট উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়ায় রুজি-রুটিতে টান পড়েছে অস্থায়ী কর্মীদের।
গত ছয় বছরের মধ্যে চলতি বছরের এপ্রিল-মে ও জুনে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার বা জিডিপি পতন হয়েছে রেকর্ড পরিমাণে। জিডিপি নেমে এসেছে ৫ শতাংশে। এই আর্থিক মন্দা সামাল দিতে লড়াই করছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবুও সঙ্কট যেন বেড়েই চলেছে।
তবে অটোমোবাইল সংস্থাগুলোর বাজার খারাপ শুধুই যে তিন মাসের আর্থিক মন্দার কারণে এমনটা মানতে নারাজ অর্থনীতি বিশ্লেষকরা। এর সঙ্গে রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রতিক বাজেট।
তাতে বলা হয়েছে, সরকার ইলেকট্রিক বা ব্যাটারি চালিত গাড়ি এবং টু হুইলারের ওপর বেশি জোর দিচ্ছে। আর তাই ভারতের একটা বড় অংশ অপেক্ষা করছেন ইলেকট্রিক গাড়ি পুরোদমে বাজারে আসার জন্য। তাই পেট্রোল-ডিজেলচালিত গাড়ির বিক্রি সাময়িক ধাক্কা খাচ্ছে বলেও মত প্রকাশ করছেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৯
ভিএস/এইচএডি