এ যাত্রায় তরুণী কোনোরকমে রক্ষা পেলেও রেগে মেয়েকে বকুনি দেন বাবা। বাবার বকুনিতে বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করলেন বলে মনে হলো না তরুণীকে দেখে!
তার নির্বিকার উত্তর, ‘সরি’।
মেয়ের এসব কাণ্ড দেখার পরও মা অবশ্য প্রথমদিকে চুপই ছিলেন। কিন্তু মেয়ের এমন হেয়ালি ‘সরি’ বলার পর মেজাজ হারালেন তিনিও। সতুরাং পাঠক বুঝতেই পারছেন- তরুণীর কপালে জুটেছে আরও কিছু বকুনি।
দুর্গোৎসব উপলক্ষে লোকে লোকারণ্য কলকাতা। গমগম করছে রাজপথ। উমা এখন স্বর্গ ছেড়ে নেমে এসেছেন বাঙালির আঙ্গিনায়। ফলে দেবী দুর্গাকে ঘিরে পশ্চিমবাংলায় উন্মাদনা এখন মধ্যগগনে। রাজপথ থেকে অলিগলির মাইকে টানা বেজে চলেছে আশা ভোঁসলে থেকে অরিজিতের গান। শহরজুড়ে এভাবেই সবাই মেতে উঠেছেন শারদ উৎসবে!
যদিও শনিবার (৫ অক্টোবর) সকালের দিকে অসুররূপী নিন্মচাপের জেরে বৃষ্টি সমস্যায় ফেলছিল উৎসুক নাগরিকদের। বৃষ্টি কমার সঙ্গে সঙ্গে তারা আবার শুরু করছেন নাচ-গান। হবে নাইবা কেন! হাতে তো সময় রয়েছে মাত্র দু’দিন। ৮ তারিখ বিজয়ার বিষাদে তাল কাটবে উৎসবের।
শুধু কলকাতা নয় পুরো ভারত মজে আছে উৎসবে। হিন্দুবাঙালির যেমন ব্যস্ত দেবী দুর্গাকে নিয়ে তেমনি অবাঙালিরা মেতে আছেন নবরাত্রি নিয়ে। নয়দিন একবেলা উপোবাস করে দেবী দুর্গারই আর এক রূপের পূজার্চনাই হল নবরাত্রি।
ফিরে আসি কলকাতার বাঙালিদের মধ্যে। মধ্য কলকাতার চিত্র। ১৭ কোটি রুপি ব্যয়ে সোনায় মোড়া দুর্গা দেখতে উপচে পড়া ভিড়। চারিদিকে কোলাহল, তীব্র বাদানুবাদ, ঠাকুর দেখার সঙ্গেই ওই বাগবিতণ্ডা যেন বাড়তি পাওনা! নাজেহাল হচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশ। যারা ফুরফুরে মেজাজে গাড়িতে চেপে বাবুয়ানি মেজাজে ঠাকুর দেখবেন বলে ঠিক করেছিলেন, তাদেরও আশায়ও গুড়েবালি! পুলিশের সোজাসাপ্টা কথা- ‘লাইন দিয়ে আসুন। দেখছেন না সবাই লাইনে আছে?’
এ পরিস্থিতি বড় বাজেটের মণ্ডপগুলোতে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিয়ে চাক্ষুস শিল্প নিদর্শন করতে চায় সবাই। দেবী দুর্গার প্রতীমাকে ফ্রেমবন্দী করতে চায় সবাই তাদের মোবাইলে।
ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে দশমীর আগের দিন। ফলে হাতে রয়েছে শনি আর রবি। মাত্র দু’দিন। সকালের দিকে মেঘলা আকাশ দেখে কিছুটা আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন হলেও, মুখে ভাগ্যদেবী সহায় বলে বেরিয়ে পড়েছেন আট থেকে আশির সবাই।
তবে বৃষ্টি থামার পর ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস করেছে মহানগরী। কোথাও বৃষ্টি হচ্ছে কোথাওবা বৃষ্টিহীন। এরমধ্যে আশ্বিনের ভ্যপসা গরমেই পূজা উপভোগ করছেন সবাই।
সপ্তমীর দুপুর থেকে জনস্রোত উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ কলকাতার মণ্ডপে মণ্ডপে। সূর্য ডুবতেই বেড়েছে জনজোয়ার। মণ্ডপে ঢোকার জন্য লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়েছে শিলপাড়া থেকে শিয়ালদহ, টালিগঞ্জ থেকে টালার পূজামণ্ডপে।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৯
ভিএস/এইচএডি