রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন নবান্নের কৃষি দপ্তরের কর্মকর্তা সম্পদ রঞ্জন পাত্র জানিয়েছেন, এই অকাল বৃষ্টি ফসলের জন্য ক্ষতিকর। তবে বৃষ্টিতে কী পরিমাণ ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে জেলাগুলো থেকে রিপোর্ট আসার পর ক্ষতির হিসাব নিরূপণ করা যাবে।
এই কর্মকর্তা বলেন, রাজ্যে এখন অনেক চাষি ফসলের বিমা করেন। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে যারা চাষ করেন, তাদের বাধ্যতামূলকভাবে ফসল বিমা করাতেই হয়। এছাড়া ব্যাংক ঋণের বাইরেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাজ্য সরকার ফসলের বিমা করিয়ে থাকে।
বিমার ক্ষতিপূরণের টাকা পেলে চাষিদের আর্থিক ক্ষতি অনেকটাই প্রশমিত হবে উল্লেখ করে সম্পদ রঞ্জন বলেন, তবে অসময়ের বৃষ্টির জন্য ফসলের যে ক্ষতি হয়েছে, তা সামগ্রিকভাবে রাজ্যের জন্য খারাপ। কারণ এতে ধান উৎপাদন কমে যাবে। রাজ্যে মোট যে পরিমাণ ধান উৎপাদিত হয়, তার বেশিরভাগই হয় এই সময়ে।
শুধু ধানই নয়, সরষে ও সবজি চাষেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মূলত শাক জাতীয় সবজির গোড়া পানিতে ডুবে যাওয়ায় ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয়েছে। সব জায়গায় একই দৃশ্য ধরা পড়েছে। একই সঙ্গে বাঁধাকপি ও ফুলকপি চাষেও ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে কৃষিদপ্তরের কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন।
এসব সবজি আগামী ডিসেম্বরে বাজারে আসতো। ফলে আগামী মাসেও বাজারে সবজির দামে প্রভাব ফেলতে পারে ‘বুলবুল’।
সোমবার থেকেই কৃষিদপ্তরে বিভিন্ন জেলার ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট আসতে শুরু করেছে। কিন্তু চূড়ান্ত রিপোর্ট পেতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের কৃষিদপ্তরের কর্মকর্তারা। কারণ যে জমিতে পানি জমেছে, সেই পানি যত দ্রুত বের করা যাবে, ফলনের ক্ষতি তত কম হবে। তাই চূড়ান্ত রিপোর্ট চলতি সপ্তাহের শেষে পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন তারা।
অতিরিক্ত কৃষি অধিকর্তা অনির্বাণ প্রধান জানান, ক্ষতিগ্রস্ত নয়টি জেলায় প্রায় ৬২ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছিল। এছাড়া প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছিল। এর সবটাই বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে। তার মধ্যে যে ধানগুলো একটু দেরিতে ফলন দিতো, সেগুলোর অবস্থা বেশি খারাপ। সবজি চাষেও ক্ষতি হয়েছে।
তবে শাক সবজি নতুন করে লাগালে ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে তার ফলন পাওয়া যাবে। কিন্তু অন্যান্য ফসলে যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন কৃষি কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৯
ভিএস/জেডএস