এরমধ্যেই পরপর তিনদিন রাস্তায় নেমেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তবে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) নজিরবিহীনভাবে কলকাতায় প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হয়েছেন বাম, কংগ্রেস, তৃণমূলের নেতাকর্মীসহ বুদ্ধিজীবীরাও।
টানা তিনদিন মমতা ও তার দল প্রতিবাদ মিছিল করার পর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে রানি রাসমণি রোডে সমাবেশ করেছে তৃণমূল ছাত্রযুব দল। সেখানে মমতার ভাইপো তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কেন্দ্রের পাঁচজন মন্ত্রীও যদি বাবার বাবা অর্থাৎ দাদুর সার্টিফিকেট দেখাতে পারেন, আমি সংসদ সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দেবো।
তিনি বলেন, উত্তর প্রদেশে আপনারা (বিজেপি) যা করতে পারেন, পশ্চিমবঙ্গে তা পারেন না। আমরা ছিনিয়ে নিতে পারি। তাই সিএএ মানে সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট নয়। সিএএ মানে ‘ছিনিয়ে আনবো অধিকার’।
মমতা বন্দোপাধ্যায় শুরু থেকেই জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) ও সিএএ-র বিরোধিতা করেছেন, রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছেন। আজ অন্য রাজ্যও সেই একই কথা বলছে। এমনকি যেসব রাজনৈতিক দল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছিল, আজ তারাও রাস্তায় নেমেছে। এটাকে পশ্চিমবঙ্গের জয় হিসেবে অভিহিত করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তবে হিংসার পথে নয়, গণতান্ত্রিক পথে প্রতিবাদের আহ্বান জানান মমতার ভাইপো। সেই সঙ্গে আইন নিজেদের হাতে না তুলে নিতেও অনুরোধ জানান তিনি।
পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার বক্তব্যে বলেন, আসুন, সবাই কবিগুরুর মতো রাখিবন্ধন করে প্রতিবাদ জানাই। মনে রাখবেন, আমরা সবাই নাগরিক। এখানে কোনো অ্যাক্টই চালু হতে দেবো না। এই কথাটা সবার মধ্যে তুলে ধরুন। কারও দয়ায় আমরা এদেশের নাগরিক নই।
‘এরা (বিজেপি) মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করছে। কী মনে করছে, ক্ষমতায় আছে বলে সারাজীবন ক্ষমতায় থাকবে? তা হতে পারে না। ’
মোদী-শাহ জুটির উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, এত দর্প, দম্ভ অচিরেই চূর্ণ হবে। আপনি যাদের ভোটে প্রধানমন্ত্রী হলেন, তাদের বাদ দিচ্ছেন কী করে?
এদিন বামরাও তাদের ১৭টি সংগঠন একত্রিত করে প্রতিবাদ মিছিল করেছে। মিছিলটি রামলীলা ময়দান থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় পার্ক সার্কাসের মোড়ে। মিছিলে পা মেলান মহম্মদ সেলিম, বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র ও কনীনিকা ঘোষের মতো নেতারা। এতে অংশ নেন কলেজশিক্ষার্থীসহ ও সাধারণ মানুষেরাও। মিছিলটিতে হাজির ছিলেন কয়েক হাজার মানুষ।
এদিন প্রথমবারের মতো সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে কলকাতার রাজপথে নেমেছেন বুদ্ধিজীবীরাও। মৌলালীর রামলীলা ময়দান থেকে শুরু হয় তাদের মিছিলটি শেষ হয় এসপ্ল্যান্ডেরে ডেরিনা ক্রসিংয়ে। প্রতিবাদ জানাতে হাজির ছিলেন অপর্ণা সেন, কৌশিক সেনের মতো বহু নাট্য ব্যক্তিত্বরা। এদিন রাজ্য কংগ্রেসও বিতর্কিত এ আইনের বিরোধিতায় পথে নেমে বিক্ষোভ করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯
ভিএস/একে