কলকাতা: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রাক্কালে কলকাতায় ভাষা ও চেতনা সমিতির উদ্যোগে শুরু হয়ে গেল একুশে পালন।
কলকাতার সংস্কৃতির পীঠস্থান রবীন্দ্রসদন-নন্দন সংলগ্ন চত্বরে মাতৃভাষা দিবসের এই অনুষ্ঠানের সূচনায় ‘আমি বাংলায় গান গাই’ সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়।
সুরকার দেবজ্যোতি মিশ্র গানটির প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, এই গান যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন বাংলা ভাষা তার নিজস্ব সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকবে। প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের কন্ঠে এই গান শুনে আমি কেন, এখানে প্রত্যেক বাঙালির মনে আলাদা অনুভুতি জেগে ওঠে। ‘বাংলা আমার জীবনানন্দ’। এই লাইনটি শুনলে আমার শরীরে কাটা দেয়। বাংলার চেতনায় জীবনানন্দ দাশ যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন বাঙালির কন্ঠে প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের গান বেঁচে থাকবে।
ভাষা আন্দোলনে বাংলাদেশের মানুষের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে দেবজ্যোতি মিশ্র জানান, আগামী মার্চে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে তিনি বাংলাদেশ ১শ’ জনের একটি দল নিয়ে সঙ্গীত পরিবেশন করতে সেখানে উপস্থিত হবেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে পা দিয়ে বাংলা ভাষাকে উদযাপন করার যে পরিকল্পনা আমার আছে তা একুশে ফেব্রুয়ারির প্রাক্কালে কলকাতায় সেই উদযাপনের আরম্ভ হলো।
অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা ভাষা চেতনা সমিতির সম্পাদক তথা অধ্যাপক এমানুল হক বলেন, এক দল লোক পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষার অস্তিত্ব মুছে দিতে চাইছে। কিন্তু যতদিন আমরা বেঁচে আছি ততদিন পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষার যথাযথ সম্মান রক্ষার কাজ করে যাব।
দীর্ঘদিন তিনি বাংলা ভাষা নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি সমাজের প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের বিনামুল্যে শিক্ষা দিয়ে আসছেন। তিনি আরও বলেন, আমরা এক একজন মাতৃভাষা রক্ষার জন্য ভাষা যোদ্ধা হিসেবে কাজ করে যাব এবং পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষার সম্মান ঐতিহ্য রক্ষা করতে কোনো রকম লড়াইয়ে পিছপা হবো না। সারারাত ধরে চলবে ভাষা ও চেতনা সমিতির এই অনুষ্ঠান।
এছাড়া আগামীকাল আরও কয়েকটি অনুষ্ঠান আছে। ভাষা দিবসের সকালে কলকাতাস্থিত বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন থেকে একটি প্রভাতফেরী বের হবে। এছাড়া দিনভর উপ-হাইকমিশন নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এছাড়া মমতার সরকার একাধিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি জেলার বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তরফে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২১
ইউবি