ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

কলকাতায় নির্বাচনী প্রচারণায় ঘুরেফিরে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২১
কলকাতায় নির্বাচনী প্রচারণায় ঘুরেফিরে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ পশ্চিমবঙ্গে ভোট হতে আড়াই থেকে তিনমাস বাকি

কলকাতা: রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে এবারে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন এক হাইভোল্টেজ নির্বাচনে পরিণত হয়েছে।

বিজেপির দাবি, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা নেই।

তাই নির্বাচনের দিন ঘোষনার অনেক আগেই পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। অপরদিকে, বিজেপি মিথ্যাচার করছে বলে দাবি রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের।

এর সঙ্গে ভারতে লাগাতার দাম বাড়ছে পেট্রোপণ্যের। ফলে গত শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র-যুবরা শহরে মিছিল করেছে।

সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) পেট্রোপণ্যের দাম বাড়ার বিষয়ে কলকাতা করপোরেশনের মেয়র পারিষদ দেবাশীষ কুমার বলেন, ‘যেভাবে রাজ্যে পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ্যাসের দাম বেড়েছে তার বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গকে যারা (বিজেপি) বলছেন সোনার বাংলা করবেন, তারা এ ধরনের মূল্যবৃদ্ধি করে বাংলাটাকে শ্মশান পরিণত করার চেষ্টা করছেন। কারণ পেট্রোপণ্যের দাম বাড়লে প্রতিটা পণ্যের দাম বাড়বে। ’

তিনি বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদী যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে পেট্রোপণ্যের দাম বাড়ানো নিয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন। আজ তিনি ক্ষমতায়। তিনিই দাম বাড়াচ্ছেন। এ দ্বিচারিতা মানুষ বুঝতে পারছেন। ফলে বাংলায় তৃতীয়বারের জন্য মমতার সরকারই গঠিত হতে যাচ্ছে। ’

কলকাতা করপোরেশনের অপর এক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আফতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মিথ্যাচার করছে মোদী সরকার। হিন্দু-মুসলমানের আগে আমাদের আসল পরিচয় আমরা বাঙালি। এক সাম্প্রদায়িক বাতাবরণ সৃষ্টি করে আমাদের বাঙালিসত্তা মুছে দিতে চাইছে। ২০১৪ সালে মোদী অনেক ভালো কথা বলে ক্ষমতায় এসেছিলেন, কিন্তু কথার সঙ্গে কাজের কোনো মিল নেই। দেশে বেকারত্ব বেড়েছে। এমনকি জিডিপিসহ অনেক বিষয়ে ভারতের চেয়ে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ, যা আমাদের জন্য লজ্জার। ’

বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, মোদী সরকার রাজনৈতিক ইমেজ পাওয়ার জন্য এসব বলছে। এ কথার কোনো যৌক্তিকতা দেখি না। কারণ এর কোনো সঠিক তথ্য ভারত সরকারের কাছেও নেই। তাদের একেক নেতা অনুপ্রবেশ নিয়ে একেক রকম তত্ত্ব দিচ্ছেন। কেউ বলছেন বিশ হাজার, তো কেউ বলেন এক কোটি। এখন কেন বাংলাদেশ থেকে লোক আসবে? তারা আর্থিকভাবে অনেক ভালো। দেশটিতে বেকারত্ব কমেছে। আসামে তো এত কিছু করলো। তাতে ফল কী হলো? ফলে বাংলার মানুষ সব বোঝে। বিজেপি যাই বলুক না কোনো, রাজ্যে মমতাই আবার আসবে। ’

অপরদিকে, থেমে নেই বিজেপি। এদিনই রাজ্যে এসে কলকাতা থেকে দক্ষিণেশ্বর মেট্রোসহ একগুচ্ছ সরকারি প্রকল্প ঘোষণা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এর পাশাপাশি রাজ্য বিজেপি নিয়মিত মিটিং-মিছিল করে গরু পাচার, কয়লা কেলেঙ্কারি, জঙ্গিযোগসহ রাজ্যের অন্ধকার দিক থেকে তিস্তা প্রসঙ্গ তুলে ধরছেন।

সম্প্রতি বিজেপির বরিষ্ঠ নেতা তথা সাবেক ত্রিপুরার গভর্নর তথাগত রায় বলেছিলেন, ‘তিস্তা না দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিচারিতা করেছেন মমতা। রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে তিস্তা ইস্যু মিটে যাবে। যেমনভাবে মোদীর আমলে মিটেছে ছিটমহল সমস্যা। ’

এদিকে, কলকাতায় কয়েকদিন আগে বাম ছাত্র-যুবদের নবান্ন অভিযানের মিছিলে বামকর্মী মইনুল মিদ্দার মৃত্যুর পর থেকেই সরগরম হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ। শহরে ভোটের আগে তারা যেমন প্রথম মিছিল করেছিল, ঠিক তেমনই আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে জনসমাবেশ করতে চলেছেন। তারপরেই ৭ মার্চ বিজেপির ব্রিগেড সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন মোদীসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা।

পশ্চিমবঙ্গে ভোট হতে আড়াই থেকে তিনমাস বাকি। ফলে রাজনীতিতে সরগরম হয়ে উঠেছে কলকাতা। আর ঘুরেফিরে আসছে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ।

বাংলাদেশসময়: ১৭১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২১
ভিএস/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।