ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

কলকাতা উপ-হাইকমিশনে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উদযাপিত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২১
কলকাতা উপ-হাইকমিশনে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উদযাপিত

কলকাতা: বিশ্বের অবিসংবাদিত নেতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে।

বুধবার (১৭ মার্চ) কলকাতার ঐতিহ্যবাহী রবীন্দ্র সদন অডিটোরিয়ামে বঙ্গবন্ধুর ওপর আলোচনা সভা ও একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের নগর উন্নয়ন ও পৌর বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. পবিত্র সরকার ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. রাজশেখর বসু। অনুষ্ঠানের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান।

উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান তার শুভেচ্ছা বক্তৃতায় বলেন, দেশ ও জাতির প্রতি অসাধারণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ, বাংলা ভাষা এবং বঙ্গবন্ধু আজ অভিন্ন সত্তায় পরিণত হয়েছেন। সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়—বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতির এই মূলমন্ত্রকে ধারণ করে বলা যায় বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলার বন্ধুই নন, তিনি বিশ্ববন্ধু হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে গিয়েছেন।

ফিরহাদ হাকিম আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে সারাবিশ্ব বাঙালির প্রকৃত ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতো না। বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ নেতৃত্বের কারণেই বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি দেশ স্থান করে নিয়েছে।

ড. পবিত্র সরকার বলেন, বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ব রাজনীতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেন, যেখানে শোষিত ও অবহেলিত মানুষের কথা উঠে আসে। বাঙালি জাতীয়তাবাদের অস্তিত্ব যখন হুমকির মুখে তখন শেখ মুজিবই অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তা রক্ষার্থে হাল ধরেন।

অধ্যাপক ড. রাজশেখর বসু তার আলোচনায় বলেন, বঙ্গবন্ধু পূর্ব পাকিস্তানে ও স্বাধীন বাংলাদেশে জাতিরাষ্ট্র গঠনের দিক থেকে হিন্দু ও মুসলিমদের সমান সুযোগ ও সমঅধিকারের বিষয়ে ভাবতে পেরেছিলেন। এই দিক থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা যে রাষ্ট্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য হতে পারে, সে বিষয়ে শেখ মুজিবের মনে কোনো সংশয় ছিল না। আওয়ামী লীগের রাজনীতিই হোক বা মুক্তিবাহিনী হোক—শেখ মুজিব খুব জোর দিয়ে বলেছিলেন—আগামী বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ থেকে বাঙালি সংস্কৃতি মর্যাদার আসন নেবে। শেখ মুজিবের রাজনীতির মধ্যে বার বার এসেছিল দারিদ্র্য নিবারণের বিষয় এবং সেই জন্য তার কাছে সামাজিক ন্যায়, সামাজিক চাহিদা ও সামাজিক ক্ষমতার বিষয়গুলি উঠে এসেছিল।

দিনের কর্মসূচি অনুযায়ী সকালে উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পতাকা উত্তোলন করেন উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান। এরপর রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রেরিত বাণী পাঠ করে শোনান যথাক্রমে কাউন্সেলর (ক্রীড়া ও শিক্ষা) রিয়াজুল ইসলাম, কাউন্সেলর (কন্স্যুলার) মো. বশির উদ্দিন, প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) মো. শামসুল আরিফ এবং প্রথম সচিব (রাজনৈতিক-১) শামীমা ইয়াসমীন স্মৃতি। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

এদিন সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছাত্র জীবনের স্মৃতি-বিজড়িত ইসলামিয়া কলেজের (বর্তমানে মৌলানা আজাদ কলেজ) বেকার গভর্নমেন্ট হোস্টেলে (কক্ষ নং-২৪) তার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে উপ-হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী, কলকাতায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সোনালি ব্যাংক লিমিটেড ইন্ডিয়া অপারেশন্সের কর্মকর্তা, কলকাতায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

সন্ধ্যায় রবীন্দ্র সদনের অডিটোরিয়ামে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে মুজিবর্ষের গান এবং কলকাতায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন।

এরপর পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায় বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার ওপর কয়েকটি আবৃত্তি পরিবেশন করেন। সবশেষে সঙ্গীত শিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী চমৎকার সঙ্গীত পরিবেশন করে দর্শকদের মুগ্ধ করেন। অনুষ্ঠানের সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন উপ-হাইকমিশনের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক-১) শামীমা ইয়াসমীন স্মৃতি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩১ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২১
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।