কলকাতা: বিশ্বে করোনাভাইরাসের দাপটে বর্তমানে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ভারতের। চারদিকে করোনার সংক্রমণ আর মৃত্যুর মিছিলে স্বজনহারাদের হাহাকার।
বিশেজ্ঞরা বলছেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ভারতের প্রতিটি রাজ্যের ওপর দিয়ে ভয়ঙ্করভাবে বয়ে যাবে করোনার ঝড়।
এরই মধ্যে দরজায় কড়া নাড়ছে খুশির ঈদ। গত বছরও ঈদে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল করোনাভাইরাস। এবারের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। ফলে পশ্চিমবঙ্গজুড়ে চলছে আংশিক লকডাউন। মাত্র ৫ ঘণ্টার জন্য খোলা থাকছে দোকান-পাট, বাজারঘাট।
কলকাতার নিউমার্কেটে কেনাবেচায়ও পড়েছে করোনা প্রাদুর্ভাবের প্রভাব। কলকাতার গড়িয়া থেকে নিউমার্কেটে আগত এক ক্রেতা বলেন, জানি এবারও কোথাও বেরোবার উপায় নেই। কিন্তু ঈদতো বছরে একবারই আসে। তাই পরিবারের জন্য অল্প কেনাকাটা করছি। এমন উৎসবে একটা নতুন বস্ত্র পরিবারের গায়ে তুলে দিতে কোন বাবা না চায়? তাই এখানে আসা।
গত ৫ মে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা দিয়েছেন বন্ধ থাকবে রেল, শপিংমল, রেস্তোরাঁ। দোকানপাট খোলার সময় সকাল ৭ থেকে ১০টা এবং বিকেল ৫টা থেকে ৭টা। এই স্বল্প সময়ে পসরা সাজিয়ে বসতেই দোকান বন্ধ করার সময় হয়ে আসছে দোকানিদের। ফলে মাত্র দুই ঘণ্টার জন্য খুলছে নিউমার্কেট।
পোশাক বিক্রেতা চুনীলাল উমরানিয়া বলেন, গোটা নিউমার্কেট মাত্র দুই ঘণ্টার জন্য খোলা থাকছে। এ অঞ্চলের বেশির ভাগ বিক্রেতা দূর থেকে আসেন। সকালে দোকান করে বাড়ি ফিরে ফের আসা অসম্ভব। তাই বিকেলের দুই ঘণ্টা আমাদের জন্য বরাদ্দ।
অপরদিকে বাংলাদেশি না থাকাটাও বড় ফ্যাক্টর কলকাতার নিউমার্কেটে। এখানকার বেশির ভাগ ক্রেতা বাংলাদেশি। আফসোস করে রাজেশ তিওয়াড়ি বলেন, এখন অবধি ডাল-ভাতটা জুটে যাচ্ছে। প্রাণে বাঁচাব না পেট বাঁচব বোঝা দায় হয়ে উঠেছে। বিদেশ থেকে বড়লোকেরা বয়ে নিয়ে এলো এই রোগ। তার ফল গরিব-মধ্যবিত্তরা ভুগছে। বাংলাদেশিরা তো এই অঞ্চলে একটা বড় ফ্যাক্টর। উপায় নেই, তারাও আসতে পারছেন না। গত বছর কোরবানি ঈদে আসতে না পারলেও আমরা কুরিয়ারের মাধ্যমে ব্যবসা করেছি। এ বছর এখন অবধি তা সম্ভব হয়নি। তবে আশা করছি দুঃস্বপ্নটা কেটে যাবে। আবার জমে উঠবে বাজার।
কিন্তু সেই সুদিন কবে আসবে তা আগামী সময়ে জানা যাবে। তবে এ কথা ঠিক গত বছরও ঈদে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল করোনাভাইরাস। গত বছর ভারতজুড়ে ছিল লকডাউন। তবে এখন অবধি ভারত লকাডাউনের পথে না হাঁটলেও পশ্চিমবঙ্গে চলছে আংশিক লকডাউন। ফলে কিছু সময়ের জন্য খোলা থাকছে দোকানপাট। আর তাতেই সাড়তে হচ্ছে বেচাকেনা।
এ ভাবে আর কতদিন? কারণ উৎসব তো আর প্রতিদিন আসে না। তবে এও ঠিক মানুষ বাঁচলেই তো টিকে থাকবে উৎসব। টিকে থাকবে আবেগ-আনন্দ-ধর্ম। কবে করোনা ঝড় থেমে ফের নতুন সুর্যোদয় হবে, তারই প্রহর গুণছেন কলকাতাসহ বিশ্ববাসী।
বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২১
ভিএস/এমজেএফ