কলকাতা: তিনদিনের সফরে ভারতে এসেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। ৯ তারিখ সোনা মসজিদ-মেহেদিপুর হয়ে সড়ক পথে ভারতে প্রবেশ করেন তিনি।
রোববার (১১ ডিসেম্বর) সড়ক পথ ধরে, বেনাপোল হয়েই দেশে ফিরবেন তিনি। তবে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে দেশে ফেরার কারণ জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সীমান্তে বিজনেস ভিসা কিছু সমস্যা হচ্ছে নিজে গিয়ে বিষয়টা দেখব।
তিনি আরও বলেন, আমি শুক্রবার রাতে কলকাতায় পৌঁছে বিষয়টা শুনেছি যে বর্তমানে যাতায়াতে দুই দেশের নাগরিকের সমস্যা হচ্ছে। এ বিষয়ে বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্সের একজন প্রতিনিধি আমাকে চিঠি দিয়ে গেছেন। ইতোমধ্যে আমাদের পররাষ্ট্র দপ্তর ঢাকাতে আমি নির্দেশনা দিয়েছে যে তারা তাদের কাউন্টার পার্ট সঙ্গে নিয়ে ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমসের সঙ্গে কথা বলতে। মুলত এসব কাজের সহযোগিতার বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন কমিটি আছে। সেই কমিটিতে এ বিষয়ে দ্রুত উত্থাপন করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছি।
তবে আমার মনে হচ্ছে করোনার নিউ ভেরিয়েন্ট ওমিক্রনের কারণে নতুন নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। এটা মনে করেই সম্ভবত, বিভিন্ন দপ্তর বিভিন্নভাবে ট্রিট করছেন। তবে আমি মনে করি যাদের ভিসার মেয়াদ আছে তারা অবশ্যই ভারতে আসতে পারবেন। বাংলাদেশে, ভারতীয় ব্যবসায়ীরা কোনো সমস্যা পড়েছে এরকম রিপোর্ট এখনও পর্যন্ত পাইনি। তবে ভারতে, বাংলাদেশি ব্যবসায়ী পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে সমস্যায় পড়েছে। আশাকরছি খুব তাড়াতাড়ি এর নিষ্পত্তি ঘটবে।
আমার অভিজ্ঞতা নিয়ে আমি অবশ্যই আমাদের সরকারকে জানাব। দুই প্রধানমন্ত্রী, নরেন্দ্র মোদি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে একটি এগ্রিমেন্ট আছে। যেখানে স্পষ্ট করে বলা আছে, আমরা আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে নিয়ে যেতে চাই ৬৫ সালের আগের অবস্থায়। দিল্লির সঙ্গে কথা হচ্ছে, দ্রুত সমাধান করার জন্য।
তবে ভিসা সমস্যা নিয়ে বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্সের তরফে উৎপল রায় শনিবার (১১ ডিসেম্বর) বলেন, বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স এবং ভারত সরকারের উদ্যোগে কলকাতার সায়েন্স সিটিতে আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত ‘ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফেয়ার’হবে। মুলত এটি ব্যবসায়িক মেলা। এখানে বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো মিনিস্ট্রি অফ কমার্সে তরফে বাংলাদেশের ২৫টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য সামগ্রী নিয়ে ৫৪ জন প্রতিনিধিকে পাঠাচ্ছেন। এজন্য বাংলাদেশের এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো থেকে অফিশিয়ালি চিঠি নিয়ে ইন্ডিয়ান হাইকমিশনে গত ২ ডিসেম্বর ২৫ প্রতিষ্ঠান ভিসার আবেদন করে। আমরাও ভারতীয় হাইকমিশনকে এ বিষয়ে ইনভিটেশন লেটার পাঠিয়েছিলাম।
কিন্তু গত দুইদিন ধরে আমরা জানতে পারছি যে, পেট্রাপোলে আসার পর তাদের ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশন থেকে আমন্ত্রিত বাংলাদেশি ব্যসায়ীকে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে। অথচ তাদের প্রত্যেকের কাছে বৈধ বিজনেস ভিসা আছে। এ বিষয়ে আমি পেট্রাপোলের চিফ ইমিগ্রেশন অফিসার মিস্টার ওম প্রকাশ শর্মার সাথে কথা বলেছি। উনি জানিয়েছেন, তাকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একজন হায়ার অফিসিয়াল ওভার ফোন ইনস্ট্রাকশন দিয়েছেন যে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে কটা ইমিগ্রেশন আছে তা বন্ধ রাখতে। আমি ওনার কাছ থেকে জানতে চেয়েছি লিখিত পারমিশন ছাড়া ব্যবসায়ীদের জন্য আপনি কিভাবে বর্ডার বন্ধ করে দেন।
আমরা আমাদের বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্সের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের, ভারতীয় হাইকমিশনে লিখিত চিঠি পাঠিয়েছি। পাশাপাশি কলকাতার ফরেন রেজিস্ট্রার অফিস (এফআরও) কর্তা মিস্টার কিটি ভুটিয়া, ওনার কাছেও আমরা লিখিতভাবে কমপ্লেন জানিয়েছে।
আমরা বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স মনে করছি যে কাজটা পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন করছে সেটা অনৈতিক। তার কারণ, এমন কোনো লিখিত ইনস্ট্রাকশন বা অর্ডার বা নির্দেশ ভারত সরকারের হোম মিনিস্ট্রি থেকে ইস্যু হয়নি। একটা ফোনের ওপরে ভিত্তি করে ইমিগ্রেশন অফিসার কি করে বৈধ বিজনেস ভিসাধারীদের ভারতে আসতে দিচ্ছে না। এ নিয়ে আমি রোববারও, পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন অফিসারের সঙ্গে আবার একবার কথা বলবো। তিনি আমাকে সময় দিয়েছেন। যাতে সুষ্ঠুভাবে বিনা ঝঞ্ঝাটে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা ভারতে আসতে পারে সেদিকে নজর রেখেছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২১
ভিএস/এনটি