ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

রাষ্ট্রপতি বিতর্ক: মন্ত্রী অখিলের হয়ে ক্ষমা চাইলেন মমতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২২
রাষ্ট্রপতি বিতর্ক: মন্ত্রী অখিলের হয়ে ক্ষমা চাইলেন মমতা মমতা বন্দোপাধ্যায়

কলকাতা (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত): ভারতের রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের কারা প্রতিমন্ত্রী অখিল গিরি। এ নিয়ে সরব রাজ্যের বিজেপি শিবির।

এ অবস্থায় ক্ষমা চেয়েছেন বিজেপি সুপ্রিমো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সোমবার (১৪ নভেম্বর) নবান্নে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, অখিলের এ ধরনের মন্তব্য করা ঠিক হয়নি। তাকে দলের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দল। আর তার হয়ে আমি ক্ষমা চাইছি, দুঃখপ্রকাশ করছি।

তিনি বলেন, আমি মনে করি সৌন্দর্য শুধুমাত্র রঙের মধ্যে হয় না। সৌন্দর্য শুধুমাত্র দেখার মধ্যে হয় না। সৌন্দর্যটা হচ্ছে ভেতরের। রাষ্ট্রপতি একজন অমায়িক নারী, খুবই মিষ্টি। ব্যক্তিগতভাবে আমি ওনাকে পছন্দ করি। এটা অখিল অন্যায় করেছে।

এদিকে অখিলের সেই বিতর্কিত মন্তব্য প্রসঙ্গে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নাম নিয়েই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাংবাদিকদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার মন্ত্রিসভার আদিবাসী আরেক মন্ত্রী বীরবাহ হাঁসদার নাম উল্লেখ করে বলেন, সে ঝাড়গ্রামের মেয়ে। একজন আদিবাসী পরিবারের মেয়ে। তাকে যদি কেউ বলে জুতোর নিচে রেখে দেওয়ার মতো, সেটা কি খুব রুচিকর মন্তব্য? নাকি কাউকে দাঁড়কাকের মতো দেখতে বলাটা রুচিকর? এক তরফা আক্রমণ করছে বিজেপি, কুৎসিত কথা বলছে ওরাও।

এরপর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতিকে সন্মান করি। তিনি হলেন সর্বোচ্চ সম্মানীয়। অখিলের এমন মন্তব্য করা ঠিক হয়নি। অখিল এটা অন্যায় করেছে। আমি কনডেম করছি। আমি এর জন্য লজ্জিত। আমি ক্ষমা চাইছি। অখিলকে দলের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে। এটা আমাদের দলের সংস্কৃতি নয়। যদি ভবিষ্যতে আবার এ ধরনের কিছু হয়, তাহলে দলের পক্ষ থেকে নিশ্চিত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। রাষ্ট্রপতিকে আমরা সম্মান করি।
গত শুক্রবার (১১ নভেম্বর) রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন অখিল। তিনি বলেন, ‘আমরা রূপের বিচার করি না। তোমার রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে আমরা সম্মান করি। কিন্তু, তোমার রাষ্ট্রপতিকে কেমন দেখতে বাবা?’ যদিও এজন্য পরে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।

ক্ষমা চেয়ে বলেন, ‘দাঁত ফোকলা মন্ত্রী’, ‘কাকের মতো দেখতে’ বলে একমাস আগে কটাক্ষ করেছিলেন শুভেন্দু। সেই রাগ সামলাতে না পেরে দলীয় সমাবেশে মুখ থেকে বের হয়ে গেছে। আমি বয়স্ক মানুষ। আমার মনে ক্রোধ জন্মেছিল। রাষ্ট্রপতিকে আমি কোনও অসম্মান করতে চাইনি। তার প্রতি আমার অগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে। যে কথা আমার মুখ থেকে বেরিয়েছে, তা ক্রোধের বশে বেরিয়ে গেছে। আমি অনুতপ্ত।

কিন্তু রাষ্ট্রপতির চেহারা নিয়ে অখিল গিরির কুরুচিকর মন্তব্যে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। অখিল গিরির বিধায়ক পদ খারিজের দাবি তুলেছে বিজেপি। থানায় এফআইআর থেকে প্রতিবাদ মিটিং, মিছিলও করেছে তারা। এমনকি জাতীয় পর্যায়েও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে মন্তব্যের জেরে অখিল গিরিকে চিঠি দিয়েছে জাতীয় নারী কমিশন। চিঠিতে নিজের মন্তব্যের জন্য লিখিত ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে অখিল গিরিকে। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজিকে চিঠি লিখে অখিল গিরির বিরুদ্ধে আইনুনাগ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল চিঠিতে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৭ ঘণ্টা, ১৪ নভেম্বর, ২০২২
ভিএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।