‘ফিউচার ইন মোশন’ স্লোগানে দেশের বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় এই প্রদর্শনীর ১১তম আয়োজন করেছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)।
বুধবার (০১ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠানস্থলের সেলিব্রেটি হলে ‘বেসিস সফটএক্সপো’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী বলেন, তথ্য ও প্রযুক্তি খাত বর্তমান সময়ে সকল সমাজের উন্নয়নের চালিকা শক্তি। বেসিস ১৯৯৭ সাল থেকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে তথ্যপ্রযুক্তিতে নতুন পরিবেশ তৈরি করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়েছে। তাদের এই যাত্রাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে এখন প্রয়োজন প্রয়োজনীয় প্রণোদনা ও বিনিয়োগ।
তিনি আরো বলেন, আইসিটিবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে সফটওয়্যার খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। সফটওয়্যার ও টেকনোলজি প্রত্যেকের জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করছে। অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও এ খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এখন সময় এসেছে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির সঙ্গে সফটওয়্যার খাতকে কিভাবে কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া।
বক্তব্যে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, পৃথিবী সৃষ্টির পর নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর একটা করে পরিবর্তন এসেছে। সেই পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় তথ্যপ্রযুক্তিতে পরিবর্তন এসেছে। পৃথিবীতে এখন তথ্যপ্রযুক্তি খাত তিন ট্রিলিয়ন ডলার সমমূল্যের। তাই সেই বাজার ধরতে এবং দেশের বাজারকে সেই পর্যায়ে নিয়ে যেতে বেসিস যে কাজ করছে তা অসামান্য।
তিনি বলেন, দেশে আইসিটি খাতের আয় বাড়াতে স্থানীয় বাজারকে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। স্থানীয় চাহিদা পূরণে কাজ করার পাশাপাশি রপ্তানি আয় বাড়াতে হবে। এজন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বেসিসকে সম্ভাব্য সকল সহায়তা করবে।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সরকার ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করে বেসিসকে সঙ্গে নিয়ে সফটওয়্যার খাতে ২০১৮ সাল নাগাদ ১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। একইসঙ্গে এ খাতে ১ মিলিয়ন লোকের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছে। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে আইসিটি শিল্প গড়ে তোলার কাজ চলছে। আইসিটি খাতে সবচেয়ে বড় প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। এছাড়া ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই খাতে ট্যাক্স মওকুফ করা হয়েছে।
প্রতিন্ত্রী আরো বলেন, দেশের তরুণরা এ খাতে আগামীতে নেতৃত্ব দেবে। তাদের মধ্য থেকে উদ্যেক্তা তৈরীর লক্ষ্যেই সফটএক্সপোর আয়োজন করা হয়।
বেসিসের সভাপতি মোস্তাফা জব্বার বলেন, ১৯৯৭ সালে যাত্রা শুরু করে বেসিস। নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে বেসিস এখন তথ্যপ্রযুক্তিতে নেতৃত্বদানকারী প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে সফটওয়্যার খাতে রপ্তানি আয় ১৫৪ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু বেসিস সদস্যভূক্ত প্রতিষ্ঠানের হিসাব অনুসারে এখাতে আয় ৫৯৪ মিলিয়ন ডলার।
এছাড়াও আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানগুলোর রপ্তানি আয় যোগ করলে রপ্তানি আয় ৭০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এই হিসেবের পার্থক্যের কারণ হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের সি-ফর্ম। এই ফর্মে ৯ হাজার ৯৯৯ ডলার পর্যন্তও যারা উপার্জন করে তাদেরকে তালিকভুক্ত করা হয় না। এছাড়াও সফটওয়্যার সেবা খাত থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে যা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে যুক্ত হয় না।
প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, পোশাক খাতে ৫০ বিলিয়ন ডলার উপার্জন আইসিটি খাতে ৫ বিলিয়ন ডলার উপার্জন সমান। এতে মেধার শ্রম রয়েছে। একদিন সর্বোচ্চ রপ্তানি খাত হবে আইসিটি।
বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বেসিসের পরিচালক ও প্লাটিনাম স্পন্সর মাইক্রোসফট বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবির এবং বেসিসের পরিচালক ও বেসিস সফটএক্সপো ২০১৭ এর আহ্বায়ক সৈয়দ আলমাস কবীর।
অন্যান্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেসিস জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, সহ-সভাপতি এম রাশিদুল হাসান, ফারহানা এ রহমান, বেসিসের পরিচালক উত্তম কুমার পাল, মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, রিয়াদ এস এ হোসেন, বেসিসের সাবেক সভাপতিবৃন্দসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ, বেসিস সফটএক্সপো ২০১৭ এর আয়োজক কমিটি, স্পন্সর ও পার্টনার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৭
এসজেডএম