ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

আইসিটি খাতের উদ্যোক্তারা ছুটবে বাংলাদেশে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৮
আইসিটি খাতের উদ্যোক্তারা ছুটবে বাংলাদেশে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যে রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক / ছবি: কাশেম হারুন/বাংলানিউজ

ঢাকা: চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলার জন্য ছয়টি বিষয়ে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা হবে জানিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানিয়েছেন, এসব দক্ষ মানবসম্পদের জন্য সারা বিশ্বের প্রযুক্তি নিয়ে যারা কাজ করেন তারা ছুটে আসবেন।

বর্তমান সরকারের অধীনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ‘এগিয়ে যাওয়ার আরো চার বছর’ উপলক্ষে শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।  
 
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের উপস্থিতে বিগত ৪ বছরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং আগামীর পরিকল্পনা তুলে ধরেন পলক।

 

তিনি বলেন, আগামীতে নবীন, প্রবীণ, নারী, সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ, বৃদ্ধ সবাই ডিজিটাল সেবা পাবেন।
 
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নির্দেশনায় চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলার জন্য ছয়টি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
 
পলক বলেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ইন্টারনেট অব থিংকস, বিগ ডাটা অ্যানালাইসিস, সাইবার সিকিউরিটি, রোবোটিক্স ও ব্লক চেইনসহ কয়েক হাজার মানবসম্পদ নিয়ে কাজ করতে চাই। যাতে সারা বিশ্বে ইমার্জিং টেকনোলজি নিয়ে যারা কাজ করে তারা বাংলাদেশে ছুটে আসেন।
 
ভবিষ্যত আইসিটি নেতৃত্ব তৈরি করতে পদ্মাসেতু পার হয়ে মাদারীপুরের শিবচরে ৮০ একর জায়গায় ‘শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফিউচার টেকনোলজি’ নামে সেন্টার অব এক্সসিলেন্স তৈরির পরিকল্পনার কথাও জানান প্রতিমন্ত্রী।  
 
তিনি বলেন, ট্র্যাডিশনাল জায়গা থেকে ইমার্জিং জায়গায় পুরো পৃথিবী শিফট করছে, সেখানে শৈশব থেকে শুরু করে একটা ইকো সিস্টেম গড়ে তুলবো। যেখান থেকে ভবিষত বিশ্বের টেকনোলজি লিডাররা বাংলাদেশের মাটিতে তৈরি হবে।  
 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ইনোভেশন ডিজাইন অ্যান্ড এন্টারপ্রেনারশিপ একাডেমি’ অনুমোদন দিয়েছেন জানিয়ে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, এর কাজ হবে এন্টারপ্রেনার সাপ্লাই চেইন তৈরি করা। যাতে উবারের মতো উদ্যোগগুলো এখানে ব্যবসা করতে পারে, তেমনি দেশের উদ্যোগগুলো প্রতিযোগিতা করতে পারে। আমরা ২০২১ সাল নাগাদ এক হাজার আইডিয়া নিয়ে আসবো।
 
মানবসম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষার আধুনিকায়ন আইসিটি ব্যবহারের কথা জানিয়ে পলক বলেন, ক্লাসরুমের ধারণাকে লার্নিং স্পেসে নিয়ে আসতে চাই।
 
এ সময় আইসিটি প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টির আওতায় বিভিন্ন কর্মসূচির কথা জানান পলক।
 
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে ৪০ হাজার ছেলে-মেয়েকে উপার্জনের উপযোগী করে তোলা হবে, যাতে তারা ঘরে বসে ইউরোপ-আমেরিকায় উপার্জন করতে পারে। ‘সি পাওয়ার’ নামে প্রকল্পে সাড়ে ১০ হাজার নারীর কর্মসংস্থানের কাজ শুরু করেছি।  

‘নারীদের এন্টারপ্রেনার তৈরি করে তাদের মোবাইল, কম্পিউটারের কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে জেলা-উপজেলায় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। আড়াই হাজার কল সেন্টার এজেন্ট তৈরির সুযোগ রাখা হয়েছে। ’
 
প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তিন হাজারের বেশি শারীরিক ও মানসিক তরুণ-তরুণীকে এর মধ্য দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।  
 
‘ইন্টারনেট কানেকটিভির জন্য ইনফো সরকার-২ এর মাধ্যমে দেশব্যাপী বিভিন্ন স্থানে ১৮ হাজার ৪৩৪টি সরকারি অফিস নেটওয়ার্কে আনা হয়েছে। ইনফো সরকার-৩ এর আওতায় ২৬শ’ ইউনিয়ন ও ১৬শ’ পুলিশ স্টেশনকে সংযুক্ত করা হবে। এর আওতায় ২৬শ’ ইউনিয়নে ফ্রি ওয়াইফাই হটস্পট থাকবে। যেখানে সাধারণ মানুষ উচ্চগতির ইন্টারনেট বিনামূল্যে ব্যবহার করবে। ’ 

উন্নয়ন ও ভবিষ্যত তথ্যপ্রযুক্তি খাত নিয়ে পলক বলেন, সারা দেশে এক বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে সরকারি ২৮টি আইটি পার্কে ২০২১ সালের মধ্যে তিন লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হবে।

‘পাহাড়-পর্বত কোথাও যেন মানুষ ডিজিটাল সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেজন্য আইল্যান্ড পাইলট প্রজেক্টের আওতায় ডিজিটাল আইল্যান্ড প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে। ’
 
পলক বলেন, ভবিষ্যতে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসের বিল যেন ব্যাংকে গিয়ে লাইনে ধরে দিতে না হয় সেজন্য আর বেশি দিন লাগবে না, আমরা ডিজিটাল পেমেন্ট ওয়ালেটের মাধ্যমে নিয়ে আসতে পারবো।
 
‘ইন্টিগ্রেটেড ডিজিটাল গর্ভমেন্টের আওতায় সরকারি সেবা ৯০ শতাংশ অনলাইনে আনতে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে। আশা করছি ২০০ মিলিয়ন ডলারে ই-গর্ভনেন্স ব্যাপক পরিবর্তন করতে কাজে লাগাতে পারবো,’ যোগ করেন তিনি।    
 

আইসিটি প্রকল্পে উদ্ভাবনী আইডিয়া পেতে বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন ম্যাপের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান আইসসিট প্রতিমন্ত্রী।
 
তিনি জানান, বিগত ৪ বছরে জরুরি সেবায় ৯৯৯, আউটসোর্সিংয়ের অর্থ আনতে পে-পাল জুম, ন্যাশনাল হাইস্কুল প্রোগ্রামসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।  
 
আইসিটি বিভাগের সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৭
এমআইএইচ/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।