বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) এশিয়া প্যাসিফিক আইসিটি অ্যাওয়ার্ড (এপিকটা)-২০১৯ এর চতুর্থ দিন। এদিনই জাজিং সেশনের দ্বিতীয় ও শেষ রাউন্ডে নিজেদের প্রকল্প উপস্থাপন করবে এবারের ১৯তম আসরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আসা প্রতিযোগী দলগুলো।
জাপানের মতো এপিকটাভুক্ত দেশগুলোতে বাংলাদেশের তরুণদের কাজের সুযোগ করা যায় কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে আলমাস বলেন, অবশ্যই করা যায়। তবে আমার মনে হয়, এতে আমাদের ‘ব্রেইন ড্রেন’ হবে। আমাদের মেধাবী তরুণরা বাইরে চলে যাবে। বাইরে গিয়ে তো তারা বাইরের দেশের জন্য কাজ করবে, আমাদের জন্য না। তার থেকে বড় কথা, আমাদের নিজেদের দেশেই এখনো চাহিদার তুলনায় দক্ষ জনবল তৈরি হয়নি এই খাতে। আমাদের আরও লোকবল প্রয়োজন। তাই আমার মনে হয়, আরও অধিক পরিমাণে তরুণদের এই খাতে দক্ষ করে গড়ে তুলে তাদের দেশেই কাজে লাগানো যায়।
এর জন্য তাদের যথাযথ পারিশ্রমিক ও উন্নত ক্যারিয়ার তৈরির প্রেক্ষাপট দেওয়ার দাবিও জানান তিনি।
আলমাস কবীর বলেন, এটা ঠিক জেজ বিদেশে কাজ করতে পারলে আয়ের অঙ্কটা বেশি হবে। কিন্তু পুরো দেশ বা জাতির কথা চিন্তা করলে লং টার্মে গিয়ে এর একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এমনটা না করে তাদের দেশেই উপযুক্ত আয় ও উন্নত ক্যারিয়ারের সুযোগ দেওয়া গেলে তারাও দেশেই থাকতে আগ্রহী হবে। এতে করে লং টার্মে একটি ইতিবাচক ফলাফল পাবো আমরা।
এপিকটা অন্তর্ভুক্ত সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আইসিটিতে উন্নত অন্য দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের তরুণদের দুর্বলতা কোথায় এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে, আমাদের তরুণরা ভালো করছে। দেশের পাশাপশি বিশ্ব দরবারে ও নিজেদের সামর্থ্যের স্বাক্ষর রাখছেন তারা। তবে আমাদের আরও উন্নত করতে হবে। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে পেশাদারিত্ব আরও বাড়াতে হবে। পেশাদারিত্ব বলতে আমি শুধু কাজ বুঝাচ্ছি না বরং কাজ উপস্থাপনেও আরও বেশি দক্ষ ও আন্তরিক হতে হবে। একটা পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করলেও সেটাকে ফুটিয়ে তুলতে হবে।
এবারের আসরে বাংলাদেশের তরুণরা ভালো করছে বলেও জানান বেসিস সভাপতি এবং প্রতিযোগিতার ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যান্ড সাপ্লাই চেঞ্জ ক্যাটাগরিতে হেড জাজের দায়িত্ব পালন করা আলমাস কবীর।
আরও পড়ুন...
** এপিকটায় শেষ হলো বাংলাদেশের দলগুলোর ইকুইপমেন্ট টেস্ট
** ঘণ্টা বাজিয়ে শুরু হলো এপিকটার ১৯তম আসর
** প্রথম রাউন্ডে পিচ করলো দেশের ১৬টি দল
তিনি বলেন, এবারে আমাদের প্রস্তুতি বেশ ভালো। বেসিস থেকে প্রতিযোগিদের আমরা যে প্রশিক্ষণ দিয়েছি, সেখানে পিচিংয়ের সময় ছিল ৭ মিনিট। অর্থ্যাৎ ৭ মিনিটের মধ্যেই আমরা আমাদের উপস্থাপনা তুলে ধরার প্রশিক্ষণ নিয়েছি। কিন্তু এখানে এসে আমরা পাচ্ছি ১০ মিনিট। সেই হিসেবে বাড়তি ৩ মিনিটের একটা অ্যাডভানটেজ বাংলাদেশের দলগুলো পাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
এপিকটার সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আরও বেশি পারস্পরিক সহযোগিতার প্রতি জোর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন আলমাস কবীর।
তিনি বলেন, এপিকটা বলতে এখন শুধু বোঝায় বছরে একটা অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান। কিন্তু এপিকটার আরও বড় পরিসরে সফলতার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। সর্বশেষ নির্বাহী কমিটির সভায় ও আমি এই বিষয়টি তুলে ধরেছি। এক বা একাধিক সদস্য রাষ্ট্র নিজেরা মিলে অথবা এপিকটার উদ্যোগেও সদস্য রাষ্ট্রগুলোতে নিজেদের কাজের পরিধি বাড়াতে পারি আমরা। নিজেদের মধ্যে আরও বেশি কানেক্টিভিটি এবং ইন্টেগ্রিটি বাড়াতে হবে। এ ধরনের প্রতিযোগিতার ইতিবাচক দিক হচ্ছে যে, ভালো জিনিসগুলো উঠে আসে। তবে আয়োজন শেষ হলেও সেই ভালো জিনিসগুলোকে, নতুন নতুন আইডিয়াগুলোকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে হবে আমাদেরই।
সবশেষে বাংলাদেশের দলগুলোর জন্য শুভ কামনা ব্যক্ত করেন বেসিস প্রধান। শুধু পুরস্কার না বরং এমন বড় আসরে অংশগ্রহণে যে অভিজ্ঞতা ও নেটওয়ার্কিং অর্জিত হচ্ছে, সেটিকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে আরও দারুণ কিছু করার পরামর্শ দেন আলমাস কবীর।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৯
এসএইচএস/আরবি