ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

বন্ধই থাকছে রাইড শেয়ারিং সেবা

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৮ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২০
বন্ধই থাকছে রাইড শেয়ারিং সেবা

ঢাকা: সাধারণ ছুটির পর বাস, ট্রেন, লঞ্চের মতো গণপরিবহন চালু হলেও এখনই চালু হচ্ছে না রাইড শেয়ারিং সেবা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধই থাকছে উবার-পাঠাও-সহজের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোর রাইড শেয়ারিং কার্যক্রম।

ব্যাপক হারে কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে, গেলো ২৬ মার্চ দেশব্যাপী সব ধরনের গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। রাইড শেয়ারিং সেবাও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ে।

দুই মাসের বেশি সময় পর গণপরিবহন চালু হলেও এখনওরাইড শেয়ারিং চালুর সিদ্ধান্ত নেয়নি বিআরটিএ। কবে নাগাদ এই সেবা চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, নিশ্চিত নয়সে বিষয়টিও।
 
ইতোমধ্যে রাইড শেয়ারিং সেবা দেওয়া ১২টি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়ে সেবা চালু না করার নির্দেশনা জানিয়েছে বিআরটিএ। চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বেশ কয়েকটিরাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মও।  

বিআরটিএ পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) একেএম মাসুদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, রাইড শেয়ারিং এখনও বন্ধ আছে। কবে চালু হবে সে বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আমাদের মধ্যে দ্রুতই এ বিষয়ে একটি আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
 
বিআরটিএ সূত্রে জানা যায়, রাইড শেয়ারিংয়ে বেশিরভাগইমোটরসাইকেল হওয়ায় চালক ও যাত্রীর শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে উভয়ের স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিশ্চিত করা বেশ কঠিন হওয়ায় এখন পর্যন্ত এমন সিদ্ধান্ত সংস্থাটির।
 
এদিকে বিআরটিএর এমন সিদ্ধান্তে বেশ বিপাকে পড়েছে দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসা রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলো। রাইড শেয়ারিং এ স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি সর্বাধিক নিশ্চিত করা যায় এমন দাবি তুলে যত দ্রুত সম্ভব এই সেবা কার্যক্রম চালুর আহ্বান প্ল্যাটফর্মগুলোর।
 
‘সহজ’ এর প্রতিষ্ঠাতা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মালিহা এম কাদির বাংলানিউজকে বলেন, রাইড শেয়ারিং সেবা এখন চালু করে দেওয়া উচিত। গণপরিবহনের চেয়ে এখানে ঝুঁকি অনেক কম। গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতের বিষয়টি খুবই অনিশ্চিত; বাসে উঠতে গেলেও দশজন মানুষ খুব কাছাকাছি চলে আসে। সেই তুলনায় প্রাইভেট কার বা মোটরবাইকে ঝুঁকি অনেকখানি কম।  

‘কারে তো চালক মোটামুটি একটা দূরত্বেই থাকেন আর মোটরবাইকে চালক যাত্রীর বিপরীত দিকে থাকেন। বেশিরভাগ চালকই পিঠে ব্যাকপ্যাক রাখেন। ফলে তাদের মাঝে কিন্তু একটি দূরত্ব নিশ্চিত হয়। ’
 
স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতনতায় চালকদের বার্তা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান সহজ প্রধান। মালিহা কাদির বলেন, চালকেরা যেন স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন হন তার জন্য তাদের আমরা বার্তা দিচ্ছি। সেবাটি চালু হলে যাত্রীদের ফিডব্যাক পেলে আমরা পরিষ্কার বুঝতে পারব যে, কোন চালক সেগুলো মানছেন বা মানছেন না। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।  

‘অবস্থার তাগিদে প্রয়োজন হলে আমরা চালকদের জন্য মাস্ক বা অন্য স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী দেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় রাখবো। তবুও কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের আবেদন এই সেবা চালু করে দেওয়া হোক। ’
 
অন্যদিকে রাইড শেয়ারিং সেবা চালু না হলে স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি নিরাপত্তা ঝুঁকিও আছে বলে মনে করেন ‘পাঠাও’ এর প্রধান বিপণন ও জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দা নাবিলা মাহাবুব। নাবিলা বলেন, বিগত দুই মাস ধরে অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং সেবা কার্যক্রম বন্ধ আছে। কিন্তু খেয়াল করলে দেখবেন এতে রাইড শেয়ারিং কিন্তু বন্ধ নেই। অনেকেই যাদের বাইক আছে তারা কিন্তু অফলাইনে যাত্রী পরিবহন করছে। এতে কিন্তু যাত্রী এবং চালক সবাই আরও ঝুঁকিতে থাকছেন।  

‘যাত্রী-চালক কেউ কাউকে চেনেন না, তাদের যাত্রার বিষয়ে কোথাও কোনো তথ্য থাকে না। এমন একটি রাইডে দু’জনইঅথবা একজনও যদি কোনো বিপদে পড়েন তাহলে পরবর্তীতে এর কোনো ‘ট্রেস’ কিন্তু পাওয়া যায় না। আগেও অ্যাপ ছাড়া যাত্রী পরিবহনের ঘটনায় দুই পক্ষেই কিন্তু আমরা নিরাপত্তা ঝুঁকি দেখেছি। অনেকের জীবনও চলে গেছে অথচ প্রযুক্তিগত যে সমাধান আমাদের কাছে আছে সেটিকেকাজে লাগানোর এখনই সময়। ’

তিনি আরও বলেন, পাঠাও থেকে আমরা নিরাপদ রাইড শেয়ারিং সেবাযাত্রীদের জন্য প্রস্তুত করেছি। বাইকারদের স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার নিশ্চিত করা, এমন পরিস্থিতির জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মতো বিষয়গুলো আমরা করছি। এজন্য আমাদের গ্রাহক, চালক এবং ইন্ডাস্ট্রিং পক্ষ থেকে জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে রাইড শেয়ারিং সেবা পুনরায় চালু করার দাবি জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০২০
এসএইচএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।