কক্সবাজার থেকে ফিরে: যখন কোনো কিছুর শুরুই হয়নি বা অস্তিত্ব থাকে না তখন ‘শূন্য’ অবস্থা বিরাজ করে। কিন্তু কোনো কিছু শুরু হয়ে গেলে ধীরে ধীরে সেটি বেড়ে ওঠে।
তেমনি একটি উদ্যোগ দেশিয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি ডট কম ডট লিমিটেড। উদ্যোক্তাদের শুরু করা অনলাইন মার্কেটপ্লেসটি আজ প্রায় এক হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছে। পুরুষদের পাশাপাশি আছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী কর্মী। চেয়ারম্যান, প্রশাসন ও মানবসম্পদ বিভাগের পরিচালক এবং প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তার মতো পদে নারী নেতৃত্ব রয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে।
জানা যায়, ৮ জন উদ্যোক্তা নিয়ে ২০১৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু হয় ইভ্যালির। যাত্রা শুরুর মাত্র দুই বছরের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটিতে এখন কাজ করছে প্রায় নয় শতাধিক কর্মী। এছাড়াও চুক্তিভিত্তিক ফ্রিল্যান্সার হিসেবে দেশজুড়ে কাজ করছে ছয় হাজারের বেশি ডেলিভারি বয় তথা ‘ইভ্যালি হিরো’।
ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল বাংলানিউজকে বলেন, শুরুতে আমরা অল্প কজন উদ্যোক্তা ছিলাম মাত্র। হয়তো সাত আটজন হবে। সেই ইভ্যালিই আজ নয় শতাধিক সদস্যের পরিবার। আপনারা হয়তো জানেন আমরা আরও কর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। প্রতিদিনই ইন্টারভিউ নেওয়া হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন খাতের সফল পেশাজীবীরাও আমাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। এমন অভিজ্ঞদের পাশাপাশি নতুন নতুন মেধাবী তরুণ মুখও আমাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে।
করোনাকালে চাকরির বাজারে যখন বৈশ্বিক দুর্দশা চলছে তখন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে ইভ্যালি।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন বলেন, করোনার মাঝে আমাদের মতো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সুযোগ ছিল সাধারণ মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে দেওয়ার। সেই কাজটি করতে আমাদের প্রচুর সদস্য নিয়োগ দিতে হয়েছে। এই সময়ে যখন অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নতুন নিয়োগের বদলে পুরনো কর্মী ছাঁটাই, বেতন না দেওয়া বা বেতনের একটি অংশ কেটে দেওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে তখন ইভ্যালি নতুনদের নিয়োগ দিয়েছে। করোনার সময়েই মনে হয় সবথেকে বেশি কর্মী আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।
শামীমা নাসরিন আরও বলেন, করোনার সময় আমরা গ্রোসারি শপ হিসেবে ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপ চালু করেছি। এরপর খাবার ডেলিভারি সেবা ই-ফুড চালু করেছি। এখানেও অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
কর্মী নিয়োগের পাশাপাশি বেড়েছে ইভ্যালি অফিসের কলেবরও। ঢাকার মতো রাজধানীতে কর্মীদের জন্য অফিস স্পেসের ব্যবস্থা করাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল বলে জানিয়েছেন ইভ্যালির উদ্যোক্তারা।
ইভ্যালির প্রশাসন ও মানবসম্পদ শাখার পরিচালক সাবরিনা নাসরিন বলেন, নতুন কর্মীদের নিয়োগ দেওয়াই একমাত্র বিষয় নয়। অফিসে তাদের বসার জায়গা করতে হবে, ল্যাপটপ বা কম্পিউটার থেকে শুরু করে পেশাগত দায়িত্ব পালনের যাবতীয় লজিস্টিক সেবাও তাদের দিতে হবে। মাত্র এক হাজার ৫০০ বর্গফুট আয়তনের ইভ্যালি অফিসে এত কর্মীর জায়গা হয় না। আমাদের অফিসের আয়তন বাড়াতে হয়েছে। রাজধানীর মতো বাণিজ্যিক অংশে যেখানে সামান্য একটু খালি জায়গা পাওয়াও দুরুহ সেখানে আমাদের অফিসের স্পেস বাড়াতে হয়েছে। এখন আমাদের অফিসের আয়তন প্রায় ১৫ হাজার বর্গফুট। এর পাশাপাশি ডিজিটাল প্রতিষ্ঠান হিসেবে কর্মীদের ল্যাপটপ, কম্পিউটারসহ নানা ডিজিটাল ডিভাইস দিতে হয়েছে। কিন্তু করোনার সময় থেকে দেশে এসব ডিভাইসের আমদানি প্রায় বন্ধ ছিল। কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে গ্রাহকদের উন্নত সেবা দেওয়ার পরিসর বৃদ্ধির পাশাপাশি সমান্তরালভাবে আমাদের এসব সমস্যারও সমাধান করতে হয়েছে।
তবে আরও অধিক সংখ্যক তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ইভ্যালি কাজ করবে, জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতনরা।
মোহাম্মদ রাসেল বলেন, আমাদের আরও মেধাবী এবং দক্ষ তরুণ দরকার। ই-কমার্স খাতে কাজের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। আমরা ‘এন্ট্রি লেভেল’ থেকে শুরু করে ‘টপ লেভেল’ এ নতুন নতুন নিয়োগ দিচ্ছি। আমরা আনন্দিত যে, পরিবার হিসেবে ইভ্যালি তার সব সদস্যদের কাছে একটি আস্থা ও স্বস্তিদায়ক কর্মস্থলের নাম যেখানে তরুণরা তাদের ক্যারিয়ারের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সম্ভাবনা খুঁজে পান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২১
এস এইচ এস/এইচএডি