ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

‘রাইড বন্ধ থাকলে খাবো কী?’

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০২১
‘রাইড বন্ধ থাকলে খাবো কী?’ ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: মোটরবাইকে রাইড শেয়ার করা যাদের একমাত্র আয়ের উৎস অ্যাপভিত্তিক বাইক রাইড শেয়ারিং বন্ধ করায় তারা পড়েছেন বিপাকে। বিশেষ করে আয়ের একমাত্র উপায় বন্ধ হওয়ায় রুজি-রুটির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন তারা।

আন্দোলনকারীদের প্রশ্ন– রাইড বন্ধ থাকলে খাবো কী?

বুধবার (৩১ মার্চ) এক প্রজ্ঞাপনে মোটরবাইকে রাইড শেয়ারিং কার্যক্রম আগামী দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। করোনা সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় গণপরিবহনে সীমিত যাত্রী বহনের অংশ হিসেবেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানায় সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) সকাল থেকে অফলাইনে যাত্রী পরিবহন করা মোটরবাইক চালকদের মামলাও দিচ্ছে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। ফলে উভয় সংকটে পড়তে হয়েছে চালকদের। এজন্য রাইড শেয়ারিং সেবা চালু করে দেওয়ার দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সড়ক দখল করে আন্দোলন করতে দেখা গেছে বিভিন্ন শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মের চালকদের। এখন পর্যন্ত রাজধানীর ধানমণ্ডি, বাড্ডা এবং শাহবাগ এলাকায় এমন আন্দোলনের খবর পাওয়া গেছে।

রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকার এক বাইক চালক ইদ্রিস ভূঁইয়া বলেন, আমার তো আর কোনো ইনকাম নেই। বাইক চালাই। সকাল থেকে রোদে পুড়ে বাইক চালাই। মাস শেষে হয়তো হাজার বিশেক টাকা থাকে। এই দিয়েই সংসার চালাইতে হয়। এখন যদি রাইড বন্ধ থাকে তাহলে খাবো কী?

মিরপুর এলাকার আরেক বাইক চালক রাসেল মিয়া বলেন, আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে ধার দেনা করে বাইক কিনেছি কিছুদিন আগে। সরকারকে বলতে শুনেছি অর্থনীতির চাকা সচল রাখবে। তাই লকডাউন বা রাইড শেয়ারিং বন্ধ থাকবে এমন আশঙ্কা ছিল না। হুট করেই এমন একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। এখন তো আর ত্রাণের খাবার সামগ্রীও বিতরণ করছে না কেউ। তাহলে আমাদের যদি আয় না থাকে, আমরা যদি না খেয়ে থাকি সেটা দেখবে কে? আমাদের তো দৈনিক আয়, আমরা কীভাবে বেঁচে থাকবো?

রাইড শেয়ারিং বন্ধে সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে রাইড শেয়ারিং খাত সংশ্লিষ্টরা।   পরিবহন টিকিট এবং রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ‘সহজ’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মালিহা এম কাদির বাংলানিউজকে বলেন, যে কারণে রাইড শেয়ারিং বন্ধ করা হয়েছে অর্থ্যাৎ স্বাস্থ্যবিধি, সেটা তো নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। অ্যাপে না হলেও অনেকেই অফলাইনে রাইড শেয়ার করছেন। অ্যাপের মাধ্যমে করলে একটা নিরাপত্তা থাকে, সবকিছু ট্র্যাক করা যায়। অ্যাপে যারা নিবন্ধিত চালক তারা কিন্তু বিআরটিএর নিয়ম মেনে চলতে বাধ্য। কিন্তু অফলাইনে চললে সে তো আর কোনো নিয়মের মধ্যে নেই। অফিস আদালত খোলা, মানুষদের তো গন্তব্যে যেতে হবে। যাত্রীদের স্বার্থও তো দেখতে হবে। ইতোমধ্যে সম্ভাবনাময় এই খাত অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

তবে এখনই রাইড শেয়ারিং চালু করার বিষয়ে বিআরটিএ ভাবছে না বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) ও সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সরওয়ার আলম।  

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমরা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে নেই বরং বাস্তবায়নকারী পর্যায়ে আছি। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে আমরা তা বাস্তবায়নে আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাবো। এখনই রাইড শেয়ারিং চালু করার বিষয়ে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আপনারা এই বিষয়ক সমস্যা তুলে ধরতে পারেন। নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সেগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ হলে তারা ভিন্ন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০২১
এস এইচ এস/এইচএডি/ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।