ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

সন্তানের টিকটকের নিয়ন্ত্রণ এখন বাবা-মার হাতে

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২২
সন্তানের টিকটকের নিয়ন্ত্রণ এখন বাবা-মার হাতে

ঢাকা: বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের জন্য উদীয়মান প্রযুক্তিগুলো এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এখনকার দিনে প্রতিটি পরিবারে ইন্টারনেট থাকাটা একটি নিয়মে পরিণত হয়েছে, যেখানে বাসার সব ধরনের ডিভাইস সেই ইন্টারনেটে যুক্ত থাকছে।

কিন্তু এরপরও আমরা ভুলে যাই, নতুন প্রজন্মের জন্মই হয়েছে একটা প্রযুক্তিনির্ভর বা প্রযুক্তির উৎকর্ষের সময়ে। এখন যদি আপনি একটি স্মার্টফোন কোনো বাচ্চার হাতে দেন তাহলে সম্ভাবনা আছে যে, কীভাবে এটি চালু করতে হয় কিংবা কোন অ্যাপে কীভাবে কেনাকাটা করা যায় এ কাজটি তারা খুঁজে বের করতে পারবে। এর কারণ হলো শিশুরা যখন তাৎক্ষণিক ফলাফল দেখতে পায়, তখন তারা সেই কাজটি আরও দক্ষতার সঙ্গে করতে শিখে যায়। আর যোগাযোগ করতে পারে নানাভাবে এবং তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী কনটেন্ট তৈরিতে উদ্বুদ্ধ হয়।  

বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে প্রচুর পরিমাণে কনটেন্ট দেখা যায় এবং শেয়ার করা যায়, যা বিশ্বব্যাপী বাবা-মা ও অভিভাবকদের মধ্যে সন্তানদের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। এ বিষয়টি বিবেচনা করেই ফ্যামিলি পেয়ারিং নামে বাবা-মার নিয়ন্ত্রণে চালু করেছে টিকটক। এ ফিচারের মাধ্যমে বাবা-মারা তাদের অ্যাকাউন্ট সন্তানের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে লিঙ্ক করতে পারবেন, যার মাধ্যমে বাবা-মারা তাদের সন্তানদের অ্যাকাউন্টের সেফটি সেটিংস নিজেদের মতো করে সেট করে দিতে পারবেন।   

এখন বাবা-মা চাইলে তাদের সন্তানদের টিকটকে সময় বেঁধে দিতে পারছেন, ডিরেক্ট মেসেজ পাঠানোর অপশন বন্ধ করে রাখতে পারছেন এবং এমন কী রেস্ট্রিক্টেড মোড চালু করে দিতে পারছেন। এভাবে তাদের ডিজিটাল জীবনের অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন বাবা-মারা। একবার পেয়ারিং সম্পন্ন হলেই বাবা-মারা দূর থেকেই তাদের সন্তানদের ডিজিটাল নিরাপত্তা ও প্রাইভেসি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।  

বাবা-মা বা অভিভাবকদের অনুমতি ছাড়া সন্তানদের এসব প্যারামিটার বদল করতে বাধা দেয় টিকটক। এর সবকিছুই করা সম্ভব হবে তখনই যখন বাবা-মার একটি টিকটক অ্যাকাউন্ট থাকবে। সন্তানদের জন্য টিকটকে নিরাপদ বিনোদন নিশ্চিত করতে বাবা-মারা নিম্নে উল্লেখ করা ধাপগুলো অনুসরণ করে ফ্যামিলি পেয়ারিং চালু করতে পারবে।  

ফ্যামিলি পেয়ারিং মোড চালুর উপায়
টিকটক অ্যাপ ওপেন করে সেখান থাকা প্রোফাইল বাটনে ট্যাপ করুন।
এরপর অ্যাপের ডানদিকে উপরে দেখানো তিনটি লাইনবিশিষ্ট আইকনে ট্যাপ করুন আর এরপর সেটিংস ও প্রাইভেসিতে ট্যাপ করুন।  
এবার সেখানে দেখানো ফ্যামিলি পেয়ারিং অপশনটি ট্যাপ করুন ও পরবর্তী কার্যাবলী অনুসরণ করুন।  

স্ক্রিন টাইম মনিটর
ফ্যামিলি পেয়ারিং ফিচারে বাবা-মারা এখন তাদের সন্তানদের টিকটক দেখার সময় নির্ধারণ করে দিতে পারবেন। মনে করুন কোনো কিশোর এরইমধ্যে তার বেঁধে দেওয়া সময় ভিডিও দেখে শেষ করেছে। সেক্ষেত্রে তারা তাদের অ্যাপ থেকে আর টিকটকে ভিডিও দেখতে পারবে না যতক্ষণ না পর্যন্ত তার বাবা-মা নতুন করে তাকে পাসকোড না দেবেন। স্ক্রিনটাইম সুইচঅন করে দিলে তারা আর অ্যাপে প্রবেশ করতে পারবে না অথবা অন্য অ্যাকাউন্টেও যেতে পারবে না।  

ফ্যামিলি পেয়ারিং ফিচার চালু হওয়ার আগে ব্যবহারকারীরা একটি সেশনে টিকটকে কতটা সময় ব্যয় করেছেন তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন। নতুন ফিচারটি ব্যবহারকারীদের নির্দিষ্ট সময় পর একটা বিরতি নেওয়ার কথা মনে করিয়ে দেবে যেটি তারা নিজেদের মতো বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা দেবে। কিন্তু বর্তমানের রেস্ট্রিক্টেড স্ক্রিন টাইমের তুলনায় আগের ফিচারটি তেমন কার্যকরী ছিল না। কারণ সেটি একটি মাত্র সতর্ক বিজ্ঞপ্তি ছিল তাই অনেক সময় ব্যবহারকারীরা সেটি উপেক্ষা করেই ভিডিও দেখতেন।  

উল্লেখ্য, আগের ফাংশনটি ডিজেবল করে দিয়েছে টিকটক। সেইসঙ্গে কিশোর-কিশোরীদের জন্য স্ক্রিনটাইমে আরও শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলায় বাবা-মাদের সক্ষম করা হয়েছে।  

সেটআপ ও প্রাইভেসি
এ ফিচারটি দুটি সাব ক্যাটেগরিতে ভাগ করা হয়েছে। এর একটি  ডিসকভারবিলিটি বা আবিষ্কারযোগ্যতা ও অন্যটি সেফটি বা নিরাপত্তা। আবিষ্কারযোগ্যতা ফিচারটি বাবা-মাকে তাদের সন্তানদের অ্যাকাউন্ট পাবলিক নাকি প্রাইভেট মোডে থাকবে সেটি নির্ধারণ করতে দেয়, যা অতঃপর টিনেজদের বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রাখে। ডিরেক্ট মেসেজ দিয়ে সন্তানের সঙ্গে কারা যোগাযোগ করতে পারবে সেটিও নির্দিষ্ট করে দিতে পারবেন বাবা-মারা। তারা নির্দিষ্ট করে দিতে পারবেন কে তাদের সন্তানদের মেসেজ দিতে পারবেন, কিংবা একেবারেই মেসেজ অফ রাখতেও পারবেন। ডিরেক্ট মেসেজের ক্ষেত্রে টিকটক ছবি কিংবা কোনো লিঙ্ক পাঠানোর অনুমতি দেয় না এবং ১৬ বছরের নিচের ব্যবহারকারীদের জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে এটি ডিজেবল হয়ে যাবে।  

রেস্ট্রিক্টেড মোড
একটি বিনোদনমূলক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে টিকটকে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট পাওয়া যায়। ফলে বাবা-মারা সব সময় উদ্বেগে থাকেন তার সন্তানের কাছে বয়স উপযোগী নয় এমন সব কনটেন্ট চলে আসে কিনা। এক্ষেত্রে যদি শিশুরা সেসব কনটেন্টে আসক্ত হয়ে পড়ে তাহলে সেটি ভয়াবহ আকার নিতে পারে। আর তাই রেস্ট্রিক্টেড মোডের মাধ্যমে টিকটক অভিভাবকদের অনুমতি দেয় বয়সপোযোগী নয় এমন কনটেন্ট নিষিদ্ধ করতে।   

সবকিছু মিলিয়ে ফ্যামিলি পেয়ারিংয়ের উদ্দেশ্য হলো বাবা-মাদের এখানে যুক্ত করে তাদের সন্তানদের ডিজিটাল স্পেসে নিরাপদ রাখা। যদিও টিকটকের প্রাইভেসি পলিসি ও কমিউনিটি গাইডলাইনে পরিষ্কার করে বলা আছে নিরাপদ ইন্টারনেটের ব্যবহার নিয়ে। অন্য আরও বিনোদন প্ল্যাটফর্মের মতোই টিকটক তার ব্যবহারকারী ও বিনোদন কমিউনিটির মানুষের সুরক্ষা-নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২২
আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।