ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

জনরোষে জর্জিয়া সরকারের নতি স্বীকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৯ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০২৩
জনরোষে জর্জিয়া সরকারের নতি স্বীকার

সরকারের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ঘিরে গণবিক্ষোভ জর্জিয়ায় অস্থিরতার জন্ম দিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, রাশিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে জর্জিয়ার সরকার মত প্রকাশের অধিকার খর্ব করার উদ্যোগ নিচ্ছে।

তাদের আশঙ্কা ইউরোপীয় মূল্যবোধের দিকে এগোনোর বদলে সরকার স্বৈরাচার ও রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ মেনে নেওয়ার পথে এগোচ্ছে। ২০০৮ সালে রাশিয়ার হামলার জের ধরে জর্জিয়ার দুটি অঞ্চল বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ায় দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মস্কোর বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব দেখিয়ে আসছে।  

জর্জিয়ার সরকার সংসদে এমন এক আইন পেশ করেছিল, যার আওতায় কোনো সংগঠন বিদেশ থেকে ২০ শতাংশের বেশি অর্থ পেলে সেটিকে ‘বিদেশি এজেন্ট’ হিসেবে সরকারের কাছে নথিভুক্ত করতে হবে। আর তা না করলে মোটা অঙ্কের জরিমানা দিতে হবে।

এমন উদ্যোগের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। রাজধানী টিবিলিসিতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, জলকামান ও স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করে দ্বিতীয় দিনের বিক্ষোভ ভাঙার চেষ্টা করেছে। তবে মঙ্গলবারের মতো বিক্ষোভকারীরা পুলিশের দিকে লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা বা পাথর ছোড়েনি। সে দিন ৭৭ জনকে আটক করা হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যায় হাজারো মানুষ সংসদ ভবনের সামনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউক্রেনের পতাকা হাতে বিক্ষোভ দেখান। তাদের স্লোগান ছিল ‘রাশিয়ার আইন আমরা মানব না’।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার দেশের পতাকা ওড়ানোর জন্য জর্জিয়ার মানুষের প্রতি ধন্যবাদ জানান। ইউক্রেনের সঙ্গে জর্জিয়াও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হয়ে উঠবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

প্রবল জনরোষের মুখে জর্জিয়ার সরকার বৃহস্পতিবার সকালে বিতর্কিত আইনের খসড়া প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ক্ষমতাসীন ‘জর্জিয়ান ড্রিম’ পার্টির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যে এই আইনের ফলে সমাজে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে৷ সে কারণে এই আইনের খসড়া প্রত্যাহার করা হচ্ছে৷

এর আগে ক্ষমতাসীন দল স্বৈরাচারী পদক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করেছিল। তাদের মতে, ১৯৩০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদিত এক আইনের আদলে জর্জিয়ার আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছিল।  

দলের সভাপতি ইরাকলি কোবাখিডজে বিরোধী পক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ইন্ধন জোগানোর অভিযোগ করেন। বিরোধীদের ধারণা, এমন আইন কার্যকর হলে জর্জিয়ায় এনজিও ও সংবাদ মাধ্যমের একটা অংশ সরকারের রোষের মুখে অসহায় হয়ে পড়বে।

জর্জিয়ার প্রেসিডেন্ট সালোমে জুরাবিচভিলিও শুরু থেকে এই আইনের বিরোধিতা করে এসেছেন। তার মতে, ভিন্নমত দমন করতে রাশিয়া ঠিক এমনই আইন কার্যকর করেছে।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০২৩
আরএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।