সিরিয়ার বিদ্রোহীরা দাবি করছে তারা দক্ষিণ-পশ্চিম সিরিয়ার দার'আ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং রাজধানী দামেস্কের কাছাকাছি এগিয়ে যাচ্ছে। বিরোধীরা এখন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাহিনীর সঙ্গে উত্তরে ও দক্ষিণে দুই দিক থেকে লড়াই করছে এবং দামেস্ককে ঘিরে ফেলার চেষ্টায়।
২০১১ সালে দারআ শহরেই সিরিয়ার গণঅভ্যুত্থানের সূচনা হয়। সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এখনো দারআর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিদ্রোহীদের দাবির সত্যতা নিশ্চিত বা অস্বীকার কোনোটাই করেনি।
স্থানীয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী সাউদার্ন অপারেশনস রুম এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের বাহিনী পুরো দারআ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং শহরের আশপাশের এলাকাগুলো তল্লাশি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সুরক্ষিত করার কাজ শুরু করেছে।
বিদ্রোহীরা শুক্রবার সিরিয়া-জর্ডান সীমান্তে নাসিব ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ক্রসিংয়টি এম৫ হাইওয়ের দক্ষিণতম পয়েন্ট, যা আলেপ্পো থেকে দামেস্ক হয়ে যায়।
উত্তরের বিদ্রোহীরা এক সপ্তাহ আগে আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর হাইওয়ে ধরে দক্ষিণে অগ্রসর হয়ে বৃহস্পতিবার হামা শহর দখল করেছে এবং এখন হোমসের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। যদি তারা হোমসের দখল নিতে পারেন, তবে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নগরের নিয়ন্ত্রণ হারাবেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ।
বিদ্রোহীদের নেতৃত্ব দেওয়া দল ‘হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে বলেছে, ‘আমাদের বাহিনী হোমস নগরের বাইরের সর্বশেষ গ্রামটি মুক্ত করে ফেলেছে এবং আমরা এখন নগরের দ্বারপ্রান্তে। ’
এইচটিএস একসময় আল-কায়দার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল। এই দলের নেতৃত্বেই এবার সিরিয়ায় আসাদ বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা শুরু করেছেন বিদ্রোহীরা।
বিরোধীরা উত্তর ও দক্ষিণ থেকে দামেস্কের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। একই সময়ে, কুর্দি-নেতৃত্বাধীন বাহিনী পূর্ব সিরিয়ার অংশে প্রবেশ করেছে।
কুর্দিরা উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে এবং এক দশক ধরে তারা নিজ অঞ্চলে স্বায়ত্তশাসন বজায় রেখেছে। এখন তারা আশঙ্কা করছে বিরোধীদের আক্রমণ তাদের স্বায়ত্তশাসনের জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে। বিদ্রোহীদের লক্ষ্য আসাদ শাসন উত্খাত করা হলেও কুর্দিরা বলছে, এই সহিংসতা তাদের অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী ৩ লক্ষাধিক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭,২০২৪
এমএম