ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

জোলানির সিরিয়ার ক্ষুদ্র সংস্করণ ইদলিব?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২৪
জোলানির সিরিয়ার ক্ষুদ্র সংস্করণ ইদলিব?

ইদলিবে, যা গত এক দশক ধরে সিরিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত। হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এখানে সবচেয়ে প্রভাবশালী গোষ্ঠী, 
যারা দামস্কের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিজেদের অবস্থান আরও শক্ত করেছে।

ইদলিবে মোহাম্মদ আল-জোলানির এইচটিএস অন্যান্য বিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে নির্মূল করেছে, যারা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করছিল তাদের সামনে দুটি বিকল্প রেখেছিল— হয় যুদ্ধ চালিয়ে যাও অথবা এইচটিএস-এ যোগদাও। পাশাপাশি, আসাদ বাহিনীকে দশক ধরে প্রতিরোধ করে তারা নিজেদের শাসন ব্যবস্থার উন্নয়নেও সফল হয়েছে।

আল জাজিরা তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই অঞ্চল থেকেই আসাদবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছিল এবং দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের পরেও এখানে স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রা স্থিতিশীল। সিরিয়ার অন্য অনেক অঞ্চলের বিপরীতে, এখানে স্থিতিশীলতা, ন্যায়বিচার, আদালত এবং পুলিশের কার্যক্রম চলমান।

আল জাজিরার প্রতিবেদক সেখানে সুনির্দিষ্ট চিহ্ন সম্বলিত পুলিশের টহল গাড়ি এবং অন্যান্য কার্যক্রমও দেখা গেছে বলে জানিয়েছে। যে চিত্র আজকের দিনে সিরিয়ার অন্য অঞ্চলে বিরল।  

২০১১ সালের আরব বসন্তে জনতার বিদ্রোহকে নৃশংসভাবে দমন করেছিলেন আসাদ, যা পরবর্তীতে একটি দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়। সেই গৃহযুদ্ধে দখলে থাকা অঞ্চলে ২০১৬ সাল থেকে এইচটিএস নিজেদের এমন একটি সিরিয়ার দায়িত্বশীল তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করে আসছেন, যা প্রেসিডেন্ট আসাদের শাসন থেকে মুক্ত।  

২০১৭ সালে সিরীয় স্যালভেশন গভর্নমেন্ট প্রতিষ্ঠা করে এইচটিএস। এর মাধ্যমে তারা ইদলিব প্রদেশ পরিচালনা করত। এই প্রশাসন বেসামরিক সেবা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, বিচারব্যবস্থা, এবং অবকাঠামো প্রদানের পাশাপাশি আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং সাহায্য বিতরণের দায়িত্ব নেয়।

তবে মানবাধিকারকর্মী, সংবাদ প্রতিবেদন এবং স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের মতে, এইচটিএস কঠোরভাবে শাসন পরিচালনা করে এবং ভিন্নমত প্রকাশ সহ্য করে না। স্বাধীন সাংবাদিকতা সংগঠন সিরিয়া ডিরেক্টস প্রতিবেদনে জানায়, মানবাধিকারকর্মীদের নিখোঁজের পেছনে রয়েছে এইচটিএস। সেবা থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ আনা বিরোধী সম্প্রদায়ের বিক্ষোভকারীদের ওপর সরাসরি গুলি চালানোর অভিযোগও রয়েছে গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে।

তবে বর্তমান বাস্তবতা ভিন্ন। জাতীয়ঐক্যের প্রয়োজনে এইচটিএসকে ক্ষমতা ভাগ করে নিতে হবে। এমন একটি সিরিয়া গড়তে হবে যা দেশের সব অংশের সকল সিরিয়ানের জন্য গ্রহণযোগ্য হবে এবং সমস্ত শূন্যতা পূরণ করতে সক্ষম হবে।

ধারণা করা হচ্ছে এইচটিএস যে ধরনের সিরিয়া গড়তে চায়, তার একটি ক্ষুদ্র সংস্করণ ইদলিব। যদিও দীর্ঘ সংঘাতে বহুধাবিভক্ত এই সমাজ কোন প্রক্রিয়ায় এক হবে, এমন প্রশ্নগুলো রয়েই গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২৪
এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।