ভারতের গুজরাট রাজ্যের রাজধানী আহমেদাবাদে বিধ্বস্ত হওয়া ‘বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার’ প্লেনটির একটি ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই যন্ত্রটি দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে মুখ্য ভূমিকা রাখবে।
স্থানীয় পুলিশের বরাতে শুক্রবার (১৩ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্লেনটির ধ্বংসাবশেষের মধ্য থেকে উদ্ধার হওয়া এই গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রটি আহমেদাবাদের বি.জে. মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের ছাদে পাওয়া গেছে। প্লেনটি এই ভবনের ওপরেই ভেঙে পড়েছিল। গুজরাট সরকারের সহায়তায় ৪০ সদস্যের একটি দল ও এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো মিলিতভাবে ব্ল্যাক বক্সটি উদ্ধার করে।
ব্ল্যাক বক্স কী?
নাম ব্ল্যাক বক্স হলেও যন্ত্রটি উজ্জ্বল কমলা রঙের হয়। এ রঙ দেওয়ার কারণ, যাতে ধ্বংসাবশেষ বা পানির নিচে এটি খুঁজে পেতে সুবিধা হয়। স্টিল ও টাইটেনিয়াম দিয়ে নির্মিত এই যন্ত্র তীব্র তাপমাত্রা, পানি ও শক্তিশালী ধাক্কা সহ্য করতে পারে। তাই এটি দুর্ঘটনায় ধ্বংস হয় না। এটা মূলত ফ্লাইট রেকর্ডার। ইলেকট্রনিক রেকর্ডিং ডিভাইস। যার মধ্যে বিমানের সমস্ত তথ্য সংরক্ষিত থাকে। বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে ব্ল্যাক বক্স ব্যবহৃত হয়। এভিয়েশন বা বিমান নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা এটিকে ব্ল্যাক বক্স না বলে ফ্লাইট রেকর্ডার নামে চেনেন।
ব্ল্যাক বক্সটি প্লেনের গতি, উচ্চতা, ইঞ্জিনের পারফরম্যান্স ও ককপিটের ভয়েস রেকর্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রেকর্ড করে। এটি দুটি মূল অংশ হলো - ডিজিটাল ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (ডিএফডিআর) ও ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (সিভিআর)। প্রথম অংশটি ফ্লাইটের টেকনিক্যাল তথ্য সংরক্ষণ করে আর দ্বিতীয়টি পাইলটদের কথোপকথন ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে আদান-প্রদানের অডিও রেকর্ড করে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১২ জুন) স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে ভারতের গুজরাট রাজ্যের রাজধানী আহমেদাবাদে বিধ্বস্ত হয় এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনগামী বোয়িংটি। ওড়ার পাঁচ মিনিটের মাথায় এটি মেঘানি নগর আবাসিক এলাকায় বি.জে. মেডিকেল কলেজের একটি হোস্টেলের ওপর ভেঙে পড়ে। প্লেনটিতে ২৩০ জন যাত্রী ও ১২ জন ক্রু সদস্যসহ মোট ২৪২ জন আরোহী ছিলেন। তাদের মধ্যে ২৪১ জনই মারা যান। অলৌকিকভাবে একজন বেঁচে গেছেন। এছাড়া যে হোস্টেলের ওপর প্লেনটি আছড়ে পড়েছিল সেখানের ৫ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে ৫০ জনের বেশি।
এসএএইচ