সাম্প্রতিক হামলায় ইরান এমনভাবে ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আইরন ডোম, অ্যারো, পেট্রিয়ট-কে ব্যর্থ করে দেয় যে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গুলো নিজেদের অবস্থানেই হামলা চালাতে বাধ্য হয়, বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষক ও রাশিয়ার এয়ার ডিফেন্স বিশেষজ্ঞ ইউরি ক্নুতভ।
কিন্তু প্রশ্ন হল ইরান কীভাবে এটি করেছে?
জানা গেছে ইরান হামলার শুরুর দিকেই ইসরায়েলের মিসাইল গাইডেন্স ও কারেকশন সিগনাল সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করতে সক্ষম হয়।
এছাড়া আরেকটা পদ্ধতি যা ইরান ব্যবহার করেছে তা হল সোয়ার্মিং ট্যাকটিক্স ব্যবহার করে একযোগে আকাশ আচ্ছন্ন করে ফেলা। প্রতিটি ড্রোন তুলনা মূলক চোট ও কম ব্যয়বহুল, কিন্তু বিপুল সংখ্যায় আক্রমণ করে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিভ্রান্ত করতে সক্ষম। তাছাড়া ইসরায়েলের ইন্টারসেপটর মিসাইল নষ্ট করতে ইরান ভুয়া টার্গেট ছুড়ে সময় ও অস্ত্র ব্যয় করায়।
এরপর রয়েছে শব্দের চেয়ে ১৩ গুন বেশি গতি সম্পন্ন ফাত্তাহ হাইপারসনিক মিসাইল। এত দ্রুত মিসাইল কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থামাতে পারে না। আইরন ডোম বা অ্যারো-এর রিলোড টাইম ১১ মিনিটের মত, কিন্তু ফাত্তাহ ৭ মিনিটেই আঘাত হানে। যার ফলে আইরন ডোম-এর সফলতা ৮০-৯০% থেকে নেমে আসে মাত্র ১০-১৫% এ। ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষা ভুল টার্গেট চিহ্নিত করে, এবং ফাঁকা জায়গায় বা নিজস্ব অবস্থানে হামলা চালায়।
ক্নুতভ বলেন, ভিয়েতনাম যুদ্ধেও আমেরিকানরা একই রকম জ্যামিং ট্যাকটিক ব্যবহার করেছিল, যাতে মিসাইল সিগন্যাল বিভ্রান্ত হয়। ১৯৭০ ও ১৯৭৩ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধেও ইসরায়েল ও মিশর (সোভিয়েত সহায়তায়) একে অপরের রাডার বিভ্রান্ত করত।
ইরানের ফাত্তাহ ও হজ কাসেম মিসাইল ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদরদপ্তর ও প্রধান বিমানঘাঁটি যেখানে এফ-৩৫ ও এফ-১৬ মোতায়েন রয়েছে; সুনির্দিষ্ট আঘাত হানে। ইসরায়েল ভুল টার্গেটে হামলা চালায়, যেগুলো ইরান কৌশলে বানিয়েছে — এই প্রতারণা এত সফল ছিল যে কয়েকটি ইসরায়েলি স্ট্রাইক পুরোপুরি মিস করে।
ইসরায়েলের আগের স্ট্রাইক গুলো বিশ্লেষণ করে নতুন স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করে। ব্যাকআপ কমান্ড সেন্টার, মোবাইল লঞ্চ সিস্টেম ও দ্রুত পুনর্বিন্যাস কৌশল ব্যবহার করে আক্রমণের কার্যকারিতা বাড়ায়।
সূত্র: স্পুটেনিক
এমএম