যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিতে যাচ্ছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ বলছে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা বন্ধ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে কূটনৈতিক উদ্যোগ নিয়েছেন, তা ‘সত্যিকারের এক শান্তিদূতের’ কাজ।
গত মে মাসে ট্রাম্পের আকস্মিক এক ঘোষণা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চারদিন ধরে চলা সীমান্ত সংঘর্ষে যুদ্ধবিরতির সূচনা করে। এরপর থেকেই ট্রাম্প দাবি করে আসছেন, তিনি ‘একটি পারমাণবিক যুদ্ধ ঠেকিয়েছেন’ এবং ‘লক্ষাধিক প্রাণ বাঁচিয়েছেন’। যদিও এ জন্য তার যথাযথ কৃতিত্ব কেউ দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পাকিস্তান এই দাবি সমর্থন করে বলেছে, সংঘর্ষ থামাতে মূলত যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক হস্তক্ষেপই কার্যকর হয়েছিল। তবে ভারত দাবি করেছে, যুদ্ধবিরতি ছিল দুই দেশের সেনাবাহিনীর পারস্পরিক একটি সমঝোতা।
এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইসলামাবাদ বলেছে, ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লির সঙ্গে সুপরিকল্পিত কূটনৈতিক যোগাযোগের মাধ্যমে একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ট্রাম্প যে ভূমিকা রেখেছেন, তা কেবল তার দূরদর্শিতা ও রাষ্ট্রনায়কসুলভ নেতৃত্বের প্রমাণ নয়, বরং এক ‘সত্যিকারের শান্তিদূত’ হিসেবে তার অবস্থানকে দৃঢ় করে।
আল জাজিরা বলছে, পাকিস্তানের এই ঘোষণা এসেছে এমন এক সময়, যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর ইসরায়েলের হামলায় যোগ দেবে কিনা। এর আগে পাকিস্তান বলেছে, ইসরায়েলের এই সামরিক অভিযান আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করেছে এবং এটি পুরো অঞ্চলের শান্তির জন্য হুমকি।
দেশটির ভেতরে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, শান্তি পুরস্কারে ট্রাম্পকে মনোনয়ন দেওয়ার প্রস্তাব হয়তো ট্রাম্পের মনোভাব নরম করার কৌশলও হতে পারে।
পাকিস্তানি সিনেটের প্রতিরক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মুশাহিদ হুসেইন বলেন, ট্রাম্প পাকিস্তানের জন্য ভালো। যদি এতে তার আত্মপ্রশংসার প্রবণতা খুশি হয়, তাও মেনে নেওয়া যায়। ইউরোপের নেতারাও তো তার মন রক্ষা করতেই ব্যস্ত।
তবে এই উদ্যোগ পাকিস্তানে সর্বজনীন প্রশংসা পাচ্ছে না। গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব তালাত হুসেইন এক পোস্টে লিখেছেন, যিনি গাজায় ইসরায়েলের পৃষ্ঠপোষক, ইরানে হামলার উচ্ছ্বসিত সমর্থক তিনি কোনো শান্তি পুরস্কারের উপযুক্ত নন। ট্রাম্প যদি আবার মোদির দুইগালে চুমু খাওয়া শুরু করেন, তখন কী হবে?
এমজে