জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাম্প্রতিক ভাষণকে ‘সস্তা চটক’, ‘একঘেঁয়ে’ ও ‘ঘ্যানঘ্যানে’ বলে তীব্র সমালোচনা করেছেন দেশটির বিরোধী দলীয় নেতা ইয়াইর লাপিদ। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের চলমান সংকট ও গাজা যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলো এড়িয়ে গিয়ে নেতানিয়াহু শুধু আত্মপ্রচার আর পুরনো অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করেছেন।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বক্তব্য দেন নেতানিয়াহু। কিন্তু তিনি মঞ্চে ওঠার পরই উপস্থিত অনেক রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা মিলনায়তন ছেড়ে চলে যান। ফাঁকা আসনের মধ্যে দেওয়া এই ভাষণে ইউরোপীয় দেশগুলোর সমালোচনা করে নেতানিয়াহু অভিযোগ তোলেন, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ইউরোপ ইসরায়েলকে ‘আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে’। এমনকি তিনি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টিকে ‘ইসরায়েলের গলায় ছুরি ধরার’ সঙ্গে তুলনা করেন।
নেতানিয়াহু উত্তেজিত কণ্ঠে বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়ে আপনারা আসলে ইহুদি হত্যাকে উৎসাহিত করছেন। একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র আমাদের গলায় ছুরি ধরে থাকবে, তা আমরা কখনো মেনে নেব না। তিনি আরও দাবি করেন, ইউরোপীয় নেতারা ‘নিষ্ঠুর মিডিয়া ও ইহুদিবিরোধী জনমতের’ চাপে নতি স্বীকার করে হামাসকে পুরস্কৃত করছেন।
ভাষণ শেষ হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লাপিদ লেখেন, আজ বিশ্ব ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর ক্লান্তিকর, একঘেঁয়ে এবং সস্তা চটকে ভরা বক্তব্য দেখেছে। এক কথায়, পুরো সময় তিনি কেবল ঘ্যানঘ্যান করেছেন। গাজায় বন্দি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি কিংবা যুদ্ধ বন্ধে কোনো পরিকল্পনার কথা তিনি বলেননি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, দুই বছর পার হলেও কেন এখনো হামাসকে নির্মূল করা সম্ভব হলো না?
ইসরায়েলের আরেক বিরোধী দল ইসরায়েল বেইতেইনু পার্টির প্রধান অ্যাবিগডর লেইবেরম্যানও এক্সে পোস্ট করে বলেন, জাতিসংঘে নেতানিয়াহুর ভাষণ আসলে লিকুদ পার্টির সভাপতির বক্তব্য ছিল; ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নয়।
বিশ্লেষকদের মতে, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গনে সমালোচনার মুখে থাকা নেতানিয়াহু জাতিসংঘের মঞ্চকে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান শক্ত করার ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তবে দেশটির বিরোধীরা বলছেন, এই ধরনের ভাষণ ইসরায়েলের জন্য নতুন কোনো সমাধান নয়, বরং চলমান সংকটকে আরও গভীর করে তুলবে।
এমজে