ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

রাখাইনে ‘গণকবর’: তদন্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৭
রাখাইনে ‘গণকবর’: তদন্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনী কিছু উপগ্রহ চিত্রের বিশ্লেষণ করে এইচআরডব্লিউ জানায়, গত দু’মাসে ৪০টি রোহিঙ্গা গ্রাম আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে সেনাবাহিনী

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে একটি গণকবরের সন্ধান পাওয়ার দাবি করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এ নিয়ে সেনাবাহিনী তদন্ত শুরু করেছে বলেও জানানো হয়েছে।

গত দু’মাসে রাখাইনের ৪০টি রোহিঙ্গা গ্রাম সেনাবাহিনী আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে বলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এইচআরডব্লিউ তথ্য দেওয়ার পর সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) এ দাবি করেছে মিয়ানমার সরকারের মূল নিয়ন্ত্রকেরা।

রাখাইনে নিধনযজ্ঞের মূল অভিযুক্ত মিয়ানমারের সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে বলা হয়, রাখাইনের রাজধানী সিত্তে থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার উত্তরের ইন দিন নামে ওই গ্রামে অজ্ঞাতপরিচয় লোকজনের একটি গণকবর পাওয়া গেছে।

কিন্তু গণকবরে কতোটি মরদেহ পাওয়া গেছে সে সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি বিবৃতিতে।

গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর রোহিঙ্গাদের একটি গোষ্ঠীর হামলার অজুহাতে নির্বিচারে নিধনযজ্ঞ শুরু করে সেনাবাহিনী। মানবাধিকার সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্সের (এমএসএফ) প্রতিবেদন মতে, প্রথম একমাসেই সেখানে ৯ হাজারের মতো মানুষ নিহত হয়েছে। এরমধ্যে সরাসরি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে ৬ হাজার ৭০০ রোহিঙ্গা। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থার মতে, এই অভিযানের জেরে রাখাইন থেকে সাড়ে ৬ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।

জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংস্থা ও দেশ এই অভিযানের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার দাবি করে আসছে। কয়েকটি সংস্থা অভিযানের জন্য সরাসরি সেনাবাহিনীকেই দায়ী করে আসছে।

গণকবর প্রসঙ্গে সেই অভিযুক্ত সেনাবাহিনী বলছে, লোকজনকে হত্যার পর মাটিচাপা দেওয়া হচ্ছে- এমন রিপোর্ট পেয়ে নিরাপত্তা বাহিনী প্রাথমিকভাবে তদন্ত চালিয়েছে।

সিনিয়র জেনারেল হ্লাইংয়ের ফেসবুক পেজে আরও বলা হয়, প্রাথমিক তদন্তের পর ইন দিন গ্রামে অজ্ঞাতপরিচয় লোকজনের একটি গণকবর পাওয়া গেছে। সত্য ঘটনা জানতে বিস্তারিত অনুসন্ধান চলছে।

এর আগে এইচআরডব্লিউ কিছু উপগ্রহ চিত্রের বিশ্লেষণ করে জানায়, দমন-পীড়ন বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চাপ দিলেও মিয়ানমার সেনাবাহিনী গত দু’মাসেই পুড়িয়ে দিয়েছে আরও অন্তত ৪০টি রোহিঙ্গা গ্রাম।

এইচআরডব্লিউ এশিয়ার বিষয়ক পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলেন, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পরও রাখাইন গ্রামে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ চালানো থেকে এটাই প্রমাণ হয়, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার এই প্রতিশ্রুতি স্রেফ একটি প্রচারণা। রোহিঙ্গা গ্রামগুলো ধ্বংসের যেসব অভিযোগ দেশটির সেনাবাহিনী অস্বীকার করে আসছে, সেটাই প্রমাণ করে দিচ্ছে এসব স্যাটেলাইট ছবি।

এইচআরডব্লিউর এই মারাত্মক অভিযোগের পর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পাল্টা এই গণকবর পাওয়ার দাবি পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার জন্য কি-না, সে বিষয়ে আলোচনা চলছে বিশ্লেষক মহলে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৭
এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।